যেখানে প্রাণের মৌলিক তত্ত্ব উদ্ঘাটন হচ্ছে না, সেখানে বিবর্তন নিয়ে বসে থাকাই বৃথা, যদি বিবর্তন প্রাণের আগে না হয়ে থাকে।
জীবনের অন্তে চক্ষু বন্ধ হলে বোঝা যাবে প্রকৃত রহস্য। ওপারে যদি কিছু না থাকে তো বাঁচলাম, কিন্তু যদি আলো বা অন্ধকার বলতে কিছু থাকে, তা নিয়েই যত ভয়। মাঝে মাঝে মনে হয়, কেউ যদি এমনিতেই হাত-চোখ বেধে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আমার পা দুটো থেঁতলে দেয়! কি ভয়ঙ্কর যন্ত্রণা, ভাবলেই গাঁ শিউরে উঠে! চলন্ত পাখার নিচে বসেও ঘেমে যাই।
মোল্লা সাহেবরা তো আরো কঠিন কঠিন কথা বলেন, ওরে বাবা! আরে, বাবাও তো থাকবে না। তাহলে কড়া ভয়ে কাকে ডাকবো, কে আসবে? চিন্তার বিষয়। তবে নিজ অস্তিত্বের দিকে তাকিয়ে যেমন শ্বাস-প্রশ্বাস, রক্তের চলাচল, গতি-প্রকৃতি, শরীরের উপকারী বা ক্ষতিকর জীবানু, রাস্তায় চলাচলে অন্যদের বিপদ আপদ দেখা সত্ত্বেও নিজের নির্ভীকচিত্তের নিরাপত্তায় মনে হয় অবশ্যই সামনে অথবা পেছনে কেউ আছে। তাই আমি চাইলেও মরতে পারি না, আবার বাঁচাও সম্ভব নয়।
আরো পড়ুন> ক্ষমতাসীনরা আমাদেরই তৈরি
তাহলে কী করা? এ চিন্তার শেষ কোথায়? ডারউইন তো সহজেই বিবর্তন বুঝিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু অন্তরীক্ষে যে পরির্তন কাজ করে তা নিয়ে তার কোনো চিন্তা ছিলো না। তিনি তার স্রষ্টা বানরের পেছনেই ছুটেছেন সারা জীবন। যারাই প্রকৃতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চিন্তা করেছেন, তারাই কোনো সমাধান না পেয়ে বিবর্তনবাদকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন ডাস্টবিনে। কিসের বিবর্তন, কিসের কী? যেখানে প্রাণের মৌলিক তত্ত্ব উদ্ঘাটন হচ্ছে না, সেখানে বিবর্তন নিয়ে বসে থাকাই বৃথা, যদি বিবর্তন প্রাণের আগে না হয়ে থাকে।
বিজ্ঞান দিয়ে তারা যে সূত্রে বিবর্তন বোঝাতে চায় তা তাদের বাস্তবতাতেই টেকে না। আমরা দেখেছি কৃত্রিম উপায়ে গাছে কলম করা ও অন্যান্য প্রাণীদের কৃত্রিমতায় পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করতে। কিন্তু তা পর্যায়ক্রমে ধারাবাহিকভাবে কোনো প্রাণীর ক্ষেত্রে কাজ করছে না।
যে বিবর্তনের সামনাসামনি অনুভবে কোনো বাস্তবতা নেই, যারা বিবর্তনে বিশ্বাসী তাদের মানসিক পরিবর্তন (ঐচ্ছিক জীবনযাপন) ছাড়া বাস্তবিক কোনো পরিবর্তন দেখা যায় না, তো তারা কোন মরিচিকায় আসক্ত কে জানে? জীব জগতের এত উচ্চস্তরের দ্বৈত প্রাণের অধিকারী (জৈবিক প্রাণ ও হৃদয়কেন্দ্রীক প্রাণ) মানুষকে অন্য কোনো প্রাণীর সাথে তুলনা করা অযৌক্তিকতা ছাড়া আর কী? মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রকৃতিতে প্রতিষ্ঠিত মানবতা বা তদ্রুপ কোনো উত্তমতা পাশাপাশি আসেওনি, অদূর ভবিষ্যতে সম্ভাবনাও নেই। তবে কেন মানুষের মাথায় এ অদ্ভুত বিবর্তন?
বিজ্ঞান দিয়ে তারা যে সূত্রে বিবর্তন বোঝাতে চায় তা তাদের বাস্তবতাতেই টেকে না। আমরা দেখেছি কৃত্রিম উপায়ে গাছে কলম করা ও অন্যান্য প্রাণীদের কৃত্রিমতায় পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করতে। কিন্তু তা পর্যায়ক্রমে ধারাবাহিকভাবে কোনো প্রাণীর ক্ষেত্রে কাজ করছে না। আর এটা যদি বানরের ক্ষেত্রেই শুধু হয়ে থাকে, বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় তো পরবর্তী সময়ে কোনো একটা বানরেরও পরিবর্তন হওয়ার কথা। যা না হয়ে সুবিধাবাদী মানসিকতার জন্য কিছু মানুষের চিন্তা বানরের দিকে যাচ্ছে।
কোনোক্রমে যদি দুয়েকটা বানর স্বাভাবিকভাবে মানুষের মত কথা বলতে পারতো, তবে বিবর্তনবাদীগণ মানুষদের পাত্তাই দিতেন না। যেখানে সহসা খবর আসে, মেয়ে থেকে ছেলে সরাসরি লিঙ্গ পরিবর্তনের বিবর্তনী, সেখানে এত সহজ বানরি বিবর্তন একটিও হবে না তা কেমন কথা? আসলে চিন্তার ব্যবহার যে যেমন করবে, তার সমাধানও তেমনই হয়।
সরকার জুম্মান: সাংবাদিক ও লেখক
ক্যাটাগরি: মিনি কলাম
[sharethis-inline-buttons]