শুক্রবার বিকাল ৩:০৬, ১৩ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অচল ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র টিএ রোড ও ফকিরাপুলের আশপাশে আজ (২০ আগস্ট) সারাদিনে ২০ থেকে ৩০ বার লোডশেডিং হয়েছে। প্রত্যেকবার প্রায় আধাঘণ্টা থেকে দুঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন থাকে। সকাল সাতটা থেকে শুরু হয়ে রাত এগারটা (এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত) পর্যন্ত এ ধারাবাহিকতা বজায় আছে। এসব নিয়ে জন-অসন্তুষ ক্রমাগত বাড়ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে চলছে প্রতিবাদের ঝড়। যে কোনো মুহূর্তে জনগণ বিদ্যুত অফিসে হামলে পড়তে পারে।

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে অন্যান্য দিনের তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল হওয়ার কথা ছিল, বিশেষ করে জেলাশহরে। কিন্তু ঘটেছে সম্পূর্ণ উল্টো। ঈদের মাত্র একদিন বাকি, ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণের ঈদের প্রয়োজনীয় বেঁচাকেনার শেষ মুহূর্ত। অথচ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র টিএ রোড ও ফকিরাপুলের আশপাশে আজ (২০ আগস্ট) সারাদিনে ২০ থেকে ৩০ বার লোডশেডিং হয়েছে। প্রত্যেকবার প্রায় আধাঘণ্টা থেকে দুঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন থাকে। সকাল সাতটা থেকে শুরু হয়ে রাত এগারটা (এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত) পর্যন্ত এ ধারাবাহিকতা বজায় আছে। সর্বশেষ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে নয়টা পর্যন্ত ফকিরাপুল ও টি.এ রোডে বিদ্যুত ছিল না। আবার রাত নয়টায় বিদ্যুত আসার পর রাত এগারটার মধ্যে তিনবার বিদ্যুত গিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শহরের অন্যান্য জায়গাতেও প্রায় একই অবস্থা। এ নিয়ে জন-অসন্তুষ ক্রমাগত বাড়ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে চলছে প্রতিবাদের ঝড়। যেকোনো মুহূর্তে জনগণ বিদ্যুত অফিসে হামলে পড়তে পারে। এসব নিয়ে কথা বলতে চাইলে দায়িত্বরত কেউ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে না, বরং খারাপ আচরণ করে।

 

          

ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে ফকিরাপুলের আশপাশের রাতের চিত্র

 

প্রায় ৭-৮ ঘণ্টার মত বিদ্যুতবিহীন ক্রয়বিক্রয় কার্যক্রম সম্পাদন করতে হয় ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের। ব্যবসায়ীগণ প্রশ্ন করছেন, তাহলে বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে লাভ কী, মাসশেষে যদি জেনারেটর বিল বাবদ অতিরিক্ত টাকা গুণতে হয়? ব্যবসায়ীরা প্রশ্ন তোলে, দেশে পিডিপি না থেকে যদি কোনো প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান থাকতো বিদ্যুৎ সরবারহের জন্য তবে আমাদেরকে এতো বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ভোগতে হতো না। শুধুমাত্র ব্যবসায়ীদের সমস্যা- ব্যাপারটি এমন নয়। শহরের গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালগুলোর অবস্থানও এ রোডে। তাই রোগীদেরও সীমাহীন বিপাকে পড়তে হচ্ছে।

দিনের বেলা প্রচণ্ড রোদ থাকায় গরমের মাত্রাও বেশি, এতে ক্রেতারা অস্বস্তিতে পড়ে। জেনারেটরের বিল বেশি হওয়ায় মার্কেটগুলোর দোকানে প্রয়োজন ৫টি পাখা, তারা ব্যবহার করছে ১টি। এ রকম অস্বস্তিকর পরিবেশেই ক্রেতাদের কেনাকাটা সম্পন্ন করতে হচ্ছে। অতিরিক্ত ভীড়ের কারণে গ্রাম থেকে আসা মানুষগুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাড়িতে পৌঁছাতে পারেনি।

রাতের চিত্র আরো করুণ। বিকেলের দিকে বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তঘাট কোরবানির পশুর  আবর্জনায় নোংরা হয়ে একাকার। রোড লাইট না থাকায় অন্ধকারে শহরের ক্রেতাদের চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে। এ আবর্জনার উপর দিয়েই চলতে হচ্ছে ক্রেতাদের। রাস্তায় ট্রাফিক না থাকয় দীর্ঘক্ষণ যানজটের শিকার হয় ক্রেতারা। একদিকে অন্ধকার, অন্যদিকে পরিবহনের বিশাল লাইন- যাতে ক্রেতাদের ভোগান্তির সীমা নেই। যে কাজ সম্পাদন করতে তাদের সময়ের প্রয়োজন ছিল ২০ মিনিট, সেখানে সময়ের প্রয়োজন হয় ২-৩ ঘণ্টা। ক্রেতাদের প্রশ্ন, এই কি উন্নত ব্রাহ্মণাবড়িয়ার চেহারা? গত ৪ মাস ধরে গড়ে প্রতিদিন ৬-৮ ঘণ্টা লোডশেয়িংয়ের শিকার হতে হচ্ছে শহরবাসীর?

 

ক্যাটাগরি: অপরাধ-দুর্নীতি,  বিশেষ প্রতিবেদন,  ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply