শনিবার সকাল ৯:১৬, ১৪ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২৮শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

মৌসুমীর সেক্সুয়াল ও নগ্ন উপস্থিতি বাংলা ছায়াছবিতে

বিনোদন প্রতিবেদক

রাতারাতি বদলে যায় মৌসুমীর অভিনয়ের ধরন এবং বাংলা ছায়াছবির মূল মেসেজ। মৌসুমী তখন নিজেকে উপস্থিত করেন এক অর্ধনগ্ন শরীর বিক্রি করে খাওয়া নারী হিসেবে। দেশের যুবক-বৃদ্ধরা তার রূপে-গুণে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। তার কথা বলার ভঙ্গি, টাইট-ফিট প্যান্ট-শার্টে বুকের উপরের বোতাম খুলে শার্টের নীচে গিট্টু দিয়ে উন্নত স্তন দুলিয়ে দুলিয়ে দৌড়, কোমর দুলিয়ে নাচ আর নিতম্ব দেখিয়ে মারপিট বাঙালি ছেলেপুলেদের আদিম মনোবৃত্তি জাগিয়ে তুলে।

বিশেষ প্রতিবেদন : নব্বই দশকের প্রায় শেষদিকে বাংলা ছায়াছবির জগতে হঠাৎ আবির্ভূত হন আরিফা জামান মৌসুমী নামে এক মিষ্টিমুখের অল্প বয়েসী সুন্দরী বালিকা। পরিচালকগণ প্রথম দেখাতেই তার উপর ক্রাশ খান। তার কথা বলার ভঙ্গিতেও ছিল বিশেষ একধরনের যৌন আবেদনময়ীতা, যা অনেকটা ইচ্ছাকৃত। এছাড়া চলাফেরায় খোলামেলা পোশাক এবং উগ্রতাও ছিল লক্ষণীয়। ফলে দীর্ঘদিন পর পরিচালকগণ ভাগ্যদেবতার দেখা পান, ভারতীয় অশ্লীলতার সঙ্গে পাল্লা দিতে এবার তারা মোক্ষম হাতিয়ার পেয়ে যান। তারপর তারা ধীরে ধীরে নিজেদের প্ল্যানমতো এগুতে থাকেন।

তখন থেকেই বাংলা ছায়াছবির জগতে এক বিরাট পরিবর্তন ঘটে যায়, যা তখনকার যুবসমাজের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। সামাজিক ছবি থেকে রাতারাতি বদলে গিয়ে বাংলা ছবিগুলো হয়ে উঠে যৌনতানির্ভর। এক্ষেত্রে প্রধান নর্তকী হিসেবে মৌসুমী তখন তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। কী এক মোহনীয় শক্তিতে তিনি তখনকার ছেলে-বুড়ো বিবাহিত-অবিবাহিত সবাইকে পাগল করে তোলেন। প্রথম দুয়েকটি সামাজিক ছবি করার পরপরই ভারতীয় ছবির অনুকরণে পরিচালকগণ তাকে আবেদনময়ী ভঙ্গিতে উপস্থাপনের প্রতিযোগিতা শুরু করেন। আর মৌসুমীও নিজের লাজ-লজ্জা, পারিবারিক মূল্যবোধ বিসর্জন দিয়ে সস্তা অর্থ-খ্যাতি ও কামনাপাগল পরিচালকদের কাছে নিজেকে পুরোপুরি সমর্পন করেন।

ফলে রাতারাতি বদলে যায় মৌসুমীর অভিনয়ের ধরন এবং বাংলা ছায়াছবির মূল মেসেজ। মৌসুমী তখন নিজেকে উপস্থিত করেন এক অর্ধনগ্ন শরীর বিক্রি করে খাওয়া নারী হিসেবে। দেশের যুবক-বৃদ্ধরা তার রূপে-গুণে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। তার কথা বলার ভঙ্গি, টাইট-ফিট প্যান্ট-শার্টে বুকের উপরের বোতাম খুলে শার্টের নীচে গিট্টু দিয়ে উন্নত স্তন দুলিয়ে দুলিয়ে দৌড়, কোমর দুলিয়ে নাচ আর নিতম্ব দেখিয়ে মারপিট বাঙালি ছেলেপুলেদের আদিম মনোবৃত্তি জাগিয়ে তুলে। ফ্যাশনেবল ও স্মার্ট পোশাকে বাঙালি পুরুষের সামনে এক উত্তেজনা সুন্দরীর উপস্থিতি তখনকার সময়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে।

তখন থেকে শুরু হয় সামাজিক ছবি থেকে অশ্লীল ও নিম্নমানের কাহিনিনির্ভর ছবি। এ প্রতিযোগিতায় শাবনুরসহ আরো অনেকেই অংশ নিলেও এক্ষেত্রে মৌসুমীর ধারেকাছেও কেউ ঘেষতে পারেনি। তখন অনেকে এ কথাও বলাবলি করত যে মৌসুমীর একরাতের মূল্য কত। শুধু বিবাহিত পুরুষ-বৃদ্ধরা এবং স্কুল-কলেজ পড়ুয়া যুবকরাই নয়, রিক্সাঅলা, কুলি-মজুর এমনকি মাদরাসা ছাত্ররা পর্যন্ত তার উপর ক্রাশ খায়। বৃহস্পতি-শুক্রবারে মাদরাসা বন্ধের দিন বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে টুপি-পাঞ্জাবি ব্যাগে ভরে সিনেমা দেখতে যায়। এদিকে এসবের ফলে কলকাতার অনুকরণে বাংলাদেশেও পতিতালয়ে ছেলে-পুরুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। অন্যদিকে মৌসুমীকে দিয়ে করানো একের পর এক ছবি হিট করে, পরিচালকদের পকেট ভরপুর হতে থাকে। আর মৌসুমীও হয়ে উঠে বিশাল অর্থবিত্তের মালিক। বর্তমানে চিত্রশীল্পীদের মধ্যে মৌসুমীই সবচেয়ে বেশি সম্পদের অধিকারী। তিন বছর আগের এক তথ্য থেকে জানা যায়, তার সম্পদের পরিমাণ প্রায় চার কোটি টাকা।

সেই যে বাঙালি ছেলে-পুরুষরা বাংলা ছায়াছবির হাত ধরে জীবনের এক অন্ধকার জগতে প্রবেশ করে, সেখান থেকে আজো বের হওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। চরিত্রের অধপতনের সাথে পাল্লা দিয়ে ছবির মানও নেমেছে নীচে। এখন আর বাংলাদেশে বাংলা ছায়াছবি বলতে কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই। আছে কিছু দেহ প্রদর্শন, নিম্নমানের গাঁজাখুরি কাহিনি আর ভারতীয় ও তামিল ছবির নকল।

ক্যাটাগরি: সারাদেশ

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply