সারবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯)। সেই সাথে বেড়েই চলেছে আতঙ্ক। এমনি আতঙ্ক ও জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার কারণে ধীরে ধীরে ফাঁকা হতে শুরু করেছে উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের সড়কগুলো। সকাল থেকেই সারাদিনই যেন নেই সড়কগুলোতে তেমন কোনো জনগণ। ধীরে ধীরে সড়কে কমে আসছে সড়কে জনগনের চলাফেরা। বিপাকে পড়ছেন দিনমজুরেরা। কি করবেন এমনি চিন্তায় যেন মাথায় হাত তাদের।
গত ২/৩ দিনে শহরের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন জনসমাগম এলাকাগুলো আজ নির্জন হয়ে গিয়েছে। অধিকাংশ রাস্তাই যেন প্রায় লোকশূন্য। দাঁড়িয়ে রয়েছেন গুটি কয়েক রিকশাচালক। বন্ধ হয়ে রয়েছে সকল দোকানপাট। দেখে যেন মনে হচ্ছে, জনগণ নিজেই নিজেদের করেছেন লকডাউন। অপরদিকে এই ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে ঠাকুরগাঁওয়ে জোরদার করা হয়েছে সেনাবাহিনীর টহল। ইতিমধ্যে জেলা-উপজেলাজুড়ে ২৫০জন সেনাবাহিনী কাজ শুরু করেছেন।
বিদেশ ফেরত প্রবাসী হোস কোয়ারাইন্টাইনের বিষয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি একসঙ্গে একাধিক ব্যক্তি চলাচল, বাজার মনিটরিংসহ সকল দিকেই নজর রাখছেন তারা। শহরের চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় রিকশা চালক জয়নালের সাথে। সকলকে ঘরে থাকার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে, আপনি কেন বাহিরে? এমনি একটি প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রিকাশা না চালাইলে কিভাবে চলবো। খাবার পাবো কিভাবে। আমারা দিনমজুর, দিনে আনি দিনে খাই। আজ রাস্তায় লোক নেই,তাই আমাদের ভাড়াও নেই তেমন। কিভাবে কি করবো একমাত্র আল্লাহ জানেন।
কথা হয় আরেক রিকশা চালকের সাথে। তিনি জানান, শুনেছি এই ভাইরাসের কথা। কিন্তু ঘরে থাকলে কে খিলাবে আমাদের? কিভাবে দিন পাড় করবো। আজকেই রাস্তায় লোক নাই বলাই যায়। না জানি কাল কী হবে। হয় ভাইরাসে মরবো না হয় না খেয়ে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের জেলায় প্রায় অনেক মানুষেই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ সকলকে বলেছি, যারা অসহায়, দরিদ্র, যারা দিনে আনে দিনে খায়, তাদের তালিকা করুন। যদি কখনো লকডাউন করা হয়, তাহলে এই তালিকার ভিত্তিতে আমরা তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করবো। সেই সাথে সমাজের ধনী-বিত্তবান যারা আছেন, তারাও যাতে দুঃসময়ে দরিদ্রদের পাশে এগিয়ে আসেন- এটাই আহবান জানাই।
নূরে আলম শাহ : ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ক্যাটাগরি: শীর্ষ তিন, সারাদেশ
[sharethis-inline-buttons]