শনিবার রাত ১০:২২, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

অপেক্ষার বাঁধ ভাঙলো, ৭০ বছর পর দেখা মা-ছেলের

নিজস্ব প্রতিবেদক

অবশেষে মায়ের কোলে ফিরলেন ৭০ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া শিশু আব্দুল কুদ্দুস মুন্সি। বর্তমানে সেই শিশুর বয়স ৮০ ছাড়িয়েছে। আর মা মঙ্গলেমা বিবির বয়স এখন একশোর উপরে। কিন্তু এতো বছরেও হারিয়ে যায়নি মা আর সন্তানের মধ্যকার ভালোবাসা। সেই ঘটনার সাক্ষী হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ।

এতো বছর পর ছেলে আসছে, একথা জানার পর বাড়ির সামনে একটি চেয়ারে বসে অপেক্ষা করছিলেন কুদ্দুস মুন্সির শতবর্ষী মা। ছেলে সেখানে পৌঁছালে চাওয়া-পাওয়ার সব সীমানা পেড়িয়ে এক হৃদয়-বিদারক মুহূর্ত উপস্থিত হয় তাদের সামনে। জড়িয়ে ধরেন দুজন দুজনকে। ৭০ বছরের পর দেখা হওয়ায় আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন মা-ছেলে।

শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বেলা সোয়া ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বাড্ডা গ্রামে, মঙ্গলেমার বিবির বাড়িতে বৃদ্ধ মা-ছেলের এমন আবেগঘন মুহূর্ত দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি আশপাশের লোকজনও। সকাল থেকেই গ্রামের লোকজনসহ সংবাদকর্মীরা ভিড় করেন ওই বাড়িতে।

৭০ বছর আগে পুলিশ সদস্য চাচার সাথে ব্রহ্মণবাড়িয়া থেকে রাজশাহীর বাগমারায় বেড়াতে এসে হারিয়ে যান ১০ বছর বয়সী আব্দুল কুদ্দুস মুন্সি। অনেক খোঁজা-খুজির পর তাকে না পাওয়া গেলে, হাল ছেড়ে দেন পরিবারের সদস্যরা। কুদ্দুস নিজেও জানতেন না তার বাড়ি কোথায়। শুধু জানতেন গ্রামের নাম। এর সূত্রে ধরেই অবশেষে ফেসবুকের কল্যাণে আপন ঠিকানাসহ প্রিয়জনদের খুঁজে পেয়েছেন আব্দুল কুদ্দুস মুন্সী।

গেলো এপ্রিলে আইয়ূব আলী নামের পরিচিত একজনের ফেসবুক আইডি থেকে নিজের হারিয়ে যাবার গল্প বলেন আব্দুল কুদ্দুস। নিজের পরিচয় ও জন্মস্থানের তথ্য দিয়ে আব্দুল কুদ্দুস মুন্সী আকুতি জানান, জীবনে একবার হলেও পরিবারের সাথে দেখা করার।

ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা তার গ্রামের বাসিন্দারা সাড়া দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে আব্দুল কুদ্দুসকে খুঁজে পান তার পরিবারের সদস্যরা।

আব্দুল কুদ্দুসের স্বজনরা জানান, এখনও জীবিত আছেন তার শতবর্ষী মা ও এক বোন। এরই মধ্যে মায়ের সাথে ভিডিও কলে কথাও বলেছেন আব্দুল কুদ্দুস। এই ঘটনায় আলোড়ন ফেলেছে আব্দুল কুদ্দুসের বর্তমান আবাসস্থল বাগমারার বাড়ুইপাড়া গ্রামেও। খুশি আব্দুল কুদ্দুসের স্ত্রী-সন্তানরাও।

ক্যাটাগরি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া,  শীর্ষ তিন

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply