বিজ্ঞান মানুষের জাগতিক প্রায় সবকিছুরই সহজ উপায় বা সমাধান দিতে পারলেও পরকাল বিষয়ে খুব বেশি এগুতে পারেনি। মৃত্যু-পরবর্তী জীবন সুখের কি দুঃখের- এই দূর্ভাবনা, দুঃশ্চিন্তা থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষ ছাড়া বাকিরা এখনো মুক্ত নয়।
অসহায়ত্ব আর অবলম্বন- প্রাণীকূলের কাছে শব্দ দুটির গুরুত্ব অপরিসীম। প্রাণীমাত্রই প্রকৃতি, রোগ-ব্যাধি, জরা-খরা, ভয়-আতঙ্কের অধীন। তাই প্রাণ রক্ষায় খাদ্য, পানি, নিরাপত্তা, নিরাপদ আশ্রয় ও অবলম্বন প্রয়োজন।
প্রাণীকূলের ভাষা মানুষ জানে না, তবে বুদ্ধিমান প্রাণী মানুষের অধিকাংশই অসহায়ত্ব লাঘব করতে ধর্মকে সর্বশেষে অবলম্বন করে। সমর্পণ করে নিজেকে, অদৃশ্য শক্তির কৃপা ও করুণা লাভের আশায়। তাই ধর্মাশ্রয়ী কোনো মানুষকেই দোষারোপ করা উচিৎ নয়।
জীবের চূড়ান্ত বা শেষ হচ্ছে মৃত্যু। অবশ্য ধর্মাশ্রয়ী বিশ্বাসীগণ মৃত্যুকে শেষ অধ্যায়রূপে বিবেচনা করেন না। বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও সাফল্যে ধর্মগুলোর ওপর নির্ভরশীলতা অনেকাংশে হ্রাস পেলেও মানুষের আধ্যাত্মিক ও মনোজগতে এর বিস্তার কমেনি। মৃত্যু-পরবর্তী জীবনে শা্স্তি না স্বস্তি মিলবে, নাকি মৃত্যু পর্যন্তই থেমে যেতে হবে, নিশ্চিতভাবে বিজ্ঞানও তা উদ্ভাবন করতে পারেনি।
বিজ্ঞান মানুষের জাগতিক প্রায় সবকিছুরই সহজ উপায় বা সমাধান দিতে পারলেও পরকাল বিষয়ে খুব বেশি এগুতে পারেনি। মৃত্যু-পরবর্তী জীবন সুখের কি দুঃখের- এই দূর্ভাবনা, দুঃশ্চিন্তা থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষ ছাড়া বাকিরা এখনো মুক্ত নয়। ফলে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী পর্যায়ে অনগ্রসর সমাজে ধর্মগুলো কোথাও রাজনীতিক আবার কোথাও বাণিজ্যিক কাজে স্বার্থান্বেষী ও দূরভিসন্ধিপরায়ণদের দ্বারা অনায়াসে পূঁজি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে একদিন এ-সমস্যারও সমাধান খুঁজে বের করবে বিজ্ঞান, এমনই আস্থা আমার।
ক্যাটাগরি: ধর্ম-দর্শন-বিজ্ঞান, মিনি কলাম
[sharethis-inline-buttons]