শনিবার রাত ১১:৪৪, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

কারাগারের শেষ ইচ্ছা (দ্বিতীয় পর্ব) : রাসেল মাহমুদ

৮৫৩ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

নিজের জীবনকে সপে দিয়েছি খোদার পথে,/ সে পথে মৃত্যু হলে কি আসে যায় তাতে?/ আসবে না কোনো কিছু শুধু যাবে জীবনটা,/ যে জীবনের বিনিময়ে পাবো প্রভুর জান্নাতটা। -রাসেল মাহমুদ

আমি জীবন নামক সংগ্রামের এক অবিসংবাদী নেতা। জীবনের সময়টুকু চাই কাজে লাগাতে, চাই ব্যায় করতে, তবে অপচয় নয়।ভাবলাম কি কাজে লাগাবো এই সময়? উত্তর এলো, বেঁচে থাকুন। আমি বললাম, আচ্ছা বেঁচে থাকবো। তবে সেটা কি চিরস্থায়ী হবে? বলল না। আমি বললাম এই বেঁচে থাকার কোনো লাভ নেই। তার থেকে অন্য কাজে লাগাতে হবে। কারণ বেঁচে থাকা না থাকা প্রভুর হাতে, যতদিন বাঁচার বাচবো। আবার প্রশ্ন করলাম, সময়কে কি কাজে লাগানো যায়? উত্তর এলো, জীবন গঠন করুন।আমি বললাম, হ্যাঁ, ভালো কথা। তবে তো শিক্ষার দরকার হবে।

গেলাম শিক্ষা অর্জন করতে। দেখলাম, শিক্ষার মাঝেও অনেক ধরনের শিক্ষা রয়েছে। কোন্ শিক্ষা অর্জন করবো? সিদ্ধান্ত নিলাম, দ্বীনি শিক্ষা শিখবো। শিক্ষা শেষে প্রশ্ন এলো, কি লাভ হলো এই দ্বীনি শিক্ষা শিখে? একটু ব্যাখামূলকভাবে উত্তর দিলাম। বললাম, নিশ্চয়ই এ কথা তুমি স্বীকার করবে যে সব কিছুরই একজন স্রষ্টা আছে। ঠিক তোমার আমারও একজন স্রষ্টা আছেন, যিনি তোমাকে আমাকে সৃষ্টি করেছেন। মনে কর তুমি একটা ইলেকট্রিকাল পুতুল তৈরি করলে, যেটা নির্দেশ অনুসরণ করে চলতে পারে। অথবা মনে করো ছোট্ট একটা প্রাণী, যেটি তুমি পালন করো, সে তোমার কথা শুনে। এবার দেখো প্রথমে একটা পুতুল তৈরি করেছো, যে নির্দেশ অনুসরণ করে চলে। এখন তৈরি করার পর যখন তাকে নির্দেশ দিবে, কোনো একটি কাজ বা অঙ্গভঙ্গির কথা বলবে, তখন সে যদি সেটা না করে তখন কি করবে?

অবশ্যই রাগের মাথায় তাকে ভেঙ্গে ফেলে দিবে। কিন্ত দেখো তোমার মালিক সেটি করেন না। আবার তোমার পালন করা প্রাণীটি তোমাকে যে সৃষ্টি করেছে তাকেও সে সৃষ্টি করেছে। অথচ সে তোমার হুকুম মেনে চলে। কারণ তুমি মানুষ, তোমাকে সকল জীবের উপর কর্তৃত্বের অধিকার দেয়া হয়েছে। সেই প্রাণীটি যখন তোমার কোনো হুকুম অমান্য করে তখন কি করো, তাকে মারধর করো।এমনকি মেরেও ফেলো। ভেবে দেখো তো, তোমার মালিক সেটা করেছে কি না কভু? কখনো করে নাই। তবে হ্যাঁ, পরাক্রমশালী মালিক একদিন এর হিসাব নিবেন। জিজ্ঞাসা করবেন, জীবনের শুরু থেকে আমার কথা মেনে চলেছো? নাকি জীবনের কিছু সময় মেনে চলেছো? যদি মেনে থাকো বা না থাকো তাহলে সেটা তোমার আমল দেখে নাও। তারপর জান্নাত জাহান্নামে চলে যাও।

যখন দ্বীনি শিক্ষায় এ কথা জানতে পারলাম জান্নাত জাহান্নাম কী, তখন সিদ্ধান্ত নিলাম মালিকের হুকুম পালন করার। আগে খুঁজে বের করলাম সর্বোত্তম কাজ বা হুকুম কোনগুলো। তখন দেখতে পেলাম বলা আছে, প্রথমে ঈমান আনো তোমার রবের উপর। বিশ্বাস করো এক আল্লাহ তোমার সৃষ্টি কর্তা। দুনিয়ায় আমার দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠা করো। নামাজ কায়েম করো, যাকাত প্রদান করো,সত্য কথা বলো, মিথ্যা থেকে দূরে থাকো, সৎ কাজের আদেশ দাও অসৎ কাজে বাধা দাও, আল্লাহর পথে সংগ্রাম করো। প্রতিদান স্বরুপ জান্নাত পাবে।

এই প্রতিদান পাওয়ার জন্য দ্বীনি শিক্ষা অর্জন করলাম। কিছুটা হলে প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছি। এবার বিড়ালের মতো বহুবছর নয়, সিংহের মতো কিছু সময় বাঁচতে চাই। তবে বাঁচার জন্য সংগ্রাম করতে চাই না। দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করবো। দিনের পর দিন, রাতের পর রাত। এভাবেই চলতে থাকে জীবন। কখনো সত্য বলতে গেলে বাধা আসে, কখনো অন্যায় রুখতে গেলে বাধা আসে। আমার সত্য বলা, ন্যায়ের পথে চলা মানুষের কাছে বিরক্তিকর হয়ে ওঠে। দিনের পর দিন আমায় সরে দাঁড়াতে বলে। তবে কেনো সরে দাঁড়াবো? কেনো আমি কথা না মানা গোলাম হয়ে জাহান্নামে জ্বলবো? এই সব প্রশ্ন সর্বদা মনের মাঝে। কখন জানি বিদায়ের ঘন্টা বাজে।

Some text

ক্যাটাগরি: সাহিত্য

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি