রবিবার সকাল ১১:১৫, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

বিভিন্ন শিশু দিবস নিয়ে বিভ্রান্তি ও সমাধান

৬৮৩ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

আমাদের দেশে শিশুদের জন্য বেশ কয়েকটি দিবস উদযাপন করা হয়। শিশু বিষয়ে একাধিক দিবস থাকায় অনেকের কাছে বিভ্রান্তি তৈরী হয়। যেমন আমাদের দেশে কন্যা শিশু দিবস মোট ৩ দিন বা তিন বার উদযাপন করা হয়। তাই অনলাইন ঘাটাঘাটি করে নিজের এবং অন্যদের সেই বিভ্রান্তি দূর করার চেষ্টা থেকে এই লিখা। চলুন আগে দিবস গুলি সম্পর্কে সংক্ষেপে জেনে নেই। তারপর বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

০১ জাতীয় কন্যা শিশু দিবস——–৩০ সেপ্টম্বর
০২ কন্যা শিশু দিবস————-অক্টোবর মাসের প্রথম মঙ্গলবার।
০৩ আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস—–১১ অক্টোবর
০৪ জাতীয় শিশু দিবস————১৭ মার্চ
০৫ বিশ্ব শিশু দিবস————–২০ নভেম্বর
০৬ আন্তর্জাতিক শিশু দিবস———০১ জুন
০৭ পথশিশু বা সুবিধা বঞ্চিত শিশু দিবস-০২ অক্টোবর
০৮ জাতীয় ও বিশ্ব শিশু অধিকার সপ্তাহ—-অক্টোরর মাসের প্রথম সোমবার থেকে।
০৯ বিশ্ব শিশু বই দিবস———–০২ এপ্রিল
১০ বিশ্ব শিশু নাট্য দিবস———–২০ মার্চ
১১ বিশ্ব শিশু ক্যান্সার দিবস———১৫ ফ্রেব্রুয়ারি
১২ বিশ্ব শিশু শ্রম প্রতরোধ দিবস——১২ জুন।

শিশুদের সম্পৃক্ততা আছে এমন আরো কয়েটি দিবস আছে। যেমন

১৩ বিশ্ব অটিজম সচেতনা দিবস—- ২ এপ্রিল
১৪ জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস——– ২ এপ্রিল
১৫ বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস ——— ৩ ডিসেম্বর
১৬ জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ ———- ০১ থেকে সাত সেপ্টেম্বর
১৭ বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ দিবস ——— ১ আগস্ট
১৮ মীনা দিবস ———-২৪ সেপ্টেম্বর
১৯ বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস——– ১৫ অক্টোবর
২০ বিশ্ব স্কাউট দিবস ———- ২২ ফ্রেব্রুয়ারি
২১ বিশ্ব রেড ক্রোস ও রেড ক্রিসেন্ট দিবস—-৮ মে

জাতীয় ও বিশ্ব শিশু অধিকার সপ্তাহ
আন্তর্জাতিকভাবে অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার বিশ্ব শিশু অধিকার সপ্তাহ পালন করা হয়।একই সাথে আমাদের জাতীয় শিশু অধিকার সপ্তাহও পালন করা হয়। জাতীয় শিশু অধিকার সপ্তাহের একটি দিন বিশেষ ভাবে কন্যাদের জন্য পালনের সিধান্ত থেকে দ্বিতীয় দিনকে কন্যা শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে।

জাতীয় শিশু দিবস
জাতীয় শিশু দিবস হচ্ছে ১৭মার্চ। ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন। জাতীয়ভাবে দিনটিতে ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসার কারণেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম মেয়াদে (১৯৯৬-২০০১) খ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে ১৭ মার্চকে জাতীয় দিবস ঘোষণা করে। ১৯৯৭ সাল থেকেই দিবসটি পালন শুরু হয়। প্রথমে দিনটিতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা না করলেও পরবর্তীতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। অবশ্য ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হারানোর পর তৎকালীন বিএনপি সরকার শিশু দিবস পালন এবং সরকারি ছুটি বাতিল করে। ফলে ২০০২ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দিবসটি পালিত হয়নি। বর্তমানে এই দিন বেশ জাকজমকপূর্ণ ভাবে পালন করা হয়।
আন্তর্জাতিক শিশু দিবস
শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সচেতনতা সৃষ্টির জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বছরের একাধিকবার বিভিন্ন নামে শিশু দিবস পালন করা হয়। এর পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশগুলো বিভিন্ন সময় নিজেদের মতো করে পালন করে জাতীয় শিশু দিবস।

জাতিসংষের ঘোষণা অনুযায়ী ২০ নভেম্বর বিশ্ব শিশু দিবস হিসেবে পালন হয়। এছাড়া আন্তর্জাতিক শিশু দিবস পালিত হয় ১ জুন। এছাড়া ১১ অক্টোবর সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস পালিত হয়। আন্তর্জাতিকভাবে অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ পালন করা হয়।(আন্তর্জাতিক শিশু দিবস ও বিশ্ব শিশু দিবস এর মধ্যে পার্থক্য কি তা আমার জানা নেই।)

জাতীয় কন্যা শিশু দিবস
কন্যা শিশুর প্রতি জেন্ডারভিত্তিক বৈষম্য রোধে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুষ্ঠু বিকাশের বিষয়টিকে বৃহত্তর সামাজিক আন্দোলনে রূপ দেয়ার লক্ষ্যে ২০০০ সালে তৎকালীন সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি সরকারি আদেশের মাধ্যমে ৩০ সেপ্টেম্বরকে ‘জাতীয় কন্যা শিশু দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দেন। তখন থেকেই প্রতিবছর যথাযোগ্য মর্যাদায় সারাদেশব্যাপী দিবসটি পালিত হচ্ছে। প্রতি বছর এর একটি প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।এ বছরের ‘জাতীয় কন্যা শিশু দিবস’ এর প্রতিপাদ্য বিষয় ‘আমরা সবাই সোচ্চার, বিশ্ব হবে সমতার’।

কন্যা শিশু দিবস
জাতীয় শিশু অধিকার সপ্তাহ পালন করা হয় প্রতি অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার।জাতীয় শিশু অধিকার সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনকে কন্যা শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। সেই হিসেবে আগামী ৫ অক্টোবর শুরু িহওয়া জাতীয় শিশু অধিকার সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন ৬ অক্টোবর কন্যা শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হবে।

আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস
মেয়েদের শিক্ষার অধিকার পরিপুষ্টি সহায়তা ও ন্যায় অধিকার চিকিৎসা সুবিধা ও বৈষম্য থেকে সুরক্ষা নারীর বিরুদ্ধে হিংসা ও বলপূর্বক বাল্যবিবাহ বন্ধে কার্যকর ভূমিকা পালনের উদ্দেশ্যে এই দিবসের সূচনা হয়। জাতিসংঘের এক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিবছর ১১ অক্টোবর অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ২০১২ সালে সারা বিশ্বব্যাপী এ দিবসটি পালন করা শুরু হলেও বাংলাদেশ এর পরের বছর অর্থাৎ ২০১৩ সাল থেকে বিশ্ব কন্যা শিশু দিবস পালন করা হচ্ছে।

প্রিয় পাঠক, আলোচনা দীর্ঘায়িত হওয়ায় অনান্য দিবস সম্পর্কে আজ আর বিস্তারিত আলোচনা করবো না। আশা করি উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আপনারা শিশু দিবস সম্পর্কে বিভ্রান্তি দূর হবে। উল্লেখ্যযে উপরক্ত আলোচনায় সূত্রসূমূহ থেকে হুবহু কিছু বাক্য তুলে ধরা হয়েছে। কোথাও কোথাও বোজার সুবিধার্ধে নিজরমত সাজানো হয়েছে। এতকরে কোথায় কোন তথ্য বিভ্রাট পরিলিক্ষত হলে তা আমাকে জানালে সেটি সংশোধন করে নিব। আরেকটি কথা, বিভিন্ন নিউজ পোর্টলে অনেক তথ্য ভুল দেয়া আছে। যে কোন একটি নিউজ পড়লে এসকল দিবস নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়তে পারেন।
তথ্যসূত্রঃ- বাংলা উইকিপিডিয়ার বিভিন্ন নিবন্ধ। বিভিন্ন অনলাইন গণমাধ্যম, সরকারি ওয়েব সাইট।

বিনীত
মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ
৫ অক্টোবর ২০২০

Some text

ক্যাটাগরি: বিবিধ

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি