শহুরে মানুষেরা করোনা আতঙ্কে দিন কাটালেও গ্রামের মানুষজন এটাকে এখনো স্রেফ জ্বর সদৃশ একটি রোগ মনে করছেন, এর বেশি কিছু না। ফলে তারা দৈনন্দিন কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন খুব স্বাভাবিকভাবেই। এরমধ্যে বাদ যাচ্ছে না বোরো মৌসুম শেষে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী নতুন ধানের পিঠা বানানোও।
কিছুদিন আগে বোরো ধান ঘরে তুলেছেন গ্রামের কৃষাণ-কৃষাণীরা। তাই গ্রামের চিরাচরিত নিয়ম অনুযায়ী নতুন ধান দিয়ে কৃষাণীরা এখন হরেক রকমের পিঠা বানাচ্ছেন, পরিবার পরিজন নিয়ে আনন্দ করে খাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ নিজ হাতে বানানো পিঠা আত্নীয়স্বজনের বাড়িতেও পাঠাচ্ছেন।
শনিবার বিকেলে নেত্রকোনা দুর্গাপুরের তেলাচি গ্রামের একটি বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঊনসত্তর বছর বয়সী বৃদ্ধা রাবেয়া খাতুন বারান্দায় বসে চালের গুঁড়ো ভিজিয়ে কাই (খামিরা) বানাচ্ছেন পিঠা বানানোরে জন্য। তার পাশেই পড়ে রয়েছে অনেকগুলো কলার বাকল। জানালেন, কাইয়ের সাথে কলা মেখে কলা দিয়ে একধরনের পিঠা বানাবেন। যার নাম কলা পিঠা। খেতে খুব সুস্বাদু।
রাবেয়া খাতুনের পাশের ঘরের ঝর্ণা ইয়াসমিন ও পুত্রবধূ জেসমিনকেও দেখা গেলো জ্বলন্ত চুলায় পিঠা বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা ম্যারা পিঠা বানাচ্ছেন বলে জানান। শুধু রাবেয়া খাতুন আর ঝর্ণা ইয়াসমিন নয়, গ্রামের অনেক কৃষাণীই এখন পিঠা বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বলে জানা যায়। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বোরো ফসল ঘরে তোলা শেষে সবসময় তারা নতুন ধান দিয়ে পিঠা বানান। এটা প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে।
যদিও এবার করোনা মহামারি চলছে, এটা বড়রা বোঝলেও ছোট ছেলে-মেয়ে নাতি-নাতনিরা তো আর তা বোঝে না। তারা নতুন ধানের পিঠা খেতে চাচ্ছে। তাই বিশ্বব্যাপী চলা এই দুঃসময়েও তারা নানারকম মজাদার পিঠা বানিয়ে খাইয়ে ছেলে-মেয়ে নাতি-নাতনিদের সন্তুষ্ট করছেন।
জুনায়েদ আহমেদ: স্টাফ রিপোর্টার
ক্যাটাগরি: ইতিহাস-ঐতিহ্য, শীর্ষ তিন, সারাদেশ
[sharethis-inline-buttons]