কোভিড ১৯ এর ভয়ানোক থাবায় স্থবির হয়ে পরেছে পুরো বিশ্ব এর আক্রমন থেকে রেহাই পায়নি দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। প্রশাসনিকভাবে লকডাউন তুলে নিলেও জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলি যেন শ্মশ্বানে পরিণত হয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ের এমনি একটি গুরুত্বপূর্ণ জনবহুল স্থান বাসস্টান্ড এলাকা। সারা দেশের ন্যায় এখানেও স্থবির হয়ে পরেছে সকল কার্যক্রম। তবে বাস, ট্রাক বা জনসাধারণের কোলাহলের শব্দ না থাকলেও পুরো এলাকাটিই মুখোরিত হয়ে আছে হাজারো পাখির মিষ্টি সুরে।
করোনা পরিস্থিতির আগেও ঠাকুরগাঁও বাসস্টান্ড এলাকায় নানা রকম যানবাহনের শব্দের মাঝেও শোনা যেতো কিচির মিচির করে ডাকা এসব পাখির মিষ্টি শব্দ। সে মিষ্টি শব্দ অনুসরন করে তাকালেই দেখাযাবে সে এলাকার উপর দিয়ে যাওয়া বৈদ্যতিক তারের ওপরে এবং রাস্তার পাশের বিশাল গাছ গুলিতে হাজারো পাখির সমাগম। সেসব পাখির ডাকে এক স্বর্গীয় পরিবেশের সৃষ্টি হচ্ছে পুরো বাসস্টান্ড এলাকা।
কথা হচ্ছে, গেছো চড়ুই (ইউরেশিয়ান ট্রি স্পেরো) নিয়ে। এ পাখির মাথার দিকে না তাকালে আমরা আমাদের বাড়িতে বাসকরা পাতি চড়ইয়ের সাথেই এক করে ফেলতে পারি এদের। চেহারা হুবহু পাতি চড়ই অর্থাৎ আমাদের ঘরের আশেপাশে যে চড়ই বসবাস করে ওদের মতই। তবে এদের গালে একটি কালো দাগ বা বিউটি স্পট এর জন্য এদের আলাদা করতে পারা যায়।
এদের প্রধান বৈশিষ্ট হচ্ছে, এরা গাছে বসবাস করে। ঠাকুরগাঁও অঞলের গাছের ডালে এবং বৈদ্যুতিক তারে হাজার হাজার বসে থাকা অবস্থায় এদের দেখতে পাওয়া যায়, যা অন্য জেলা গুলিতে দেখা যায়না। শিকারী ও বাজ পাখির অক্রমন থেকে বাঁচতেই এরা হাজার হাজার সংখ্যায় দলবেধে চলে। কখনোও কখনোও এদের একেকটি দলে ২০ হাজার পর্যন্ত সদস্য থাকে। ঠাকুরগাঁও বাসস্টান্ড এলাকায় গেলেই দেখা মিলবে এদের ।
মাহাবুব হোসেন নামের বাসস্টান্ড এলাকার এক পান দোকানদার জানান, সকালে এসে দোকান খুলি। লোকজন আর আগের মতো আসেনা। মন খারাপ থাকলেও কাজের ফাঁকে ফাঁকে সাড়াটা দিন তাদের কিচির মিচির করে খেলা ও মারা মারি দেখি। ভালই লাগে। সন্ধায় যখন বাসায় ফিরি তখন অবশ্য তারা আর তারে থাকেনা। রাস্তার ধারের গাছ গুলোতে থাকে।
প্রবাল চৌধুরী নামের এক পথচারী জানান, চড়ই পাখি আমি দেখেছি তবে এভাবে হাজারো পাখি দলবেধে বিদ্যুতের তারে থাকতে দেখিনি। এ ধরনের পাখি হয়তো অন্য সাধারন চড়ই পাখিদের মতো না। তবে যেটাই হোক, তাদের দেখতে ভালোই লাগে।
ঠাকুরগাঁওয়ের পাখিপ্রেমিক রেজাউল হাফিজ রাহী জানান, এসব গেছো চড়ই জনবসতির মধ্যে থাকতে অনেক বেশি ভালোবাসে। মোটামোটি আমাদের এ অঞ্চলেই এদের বেশি দেখা যায়। যেহেতু এই পাখিগুলো জনবসতির মধ্যে থাকতে ভালোবাসে তাই কেউ যেনো এদের শিকার করতে না পারে সেজন্য প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানান তিনি।
Some text
ক্যাটাগরি: নাগরিক সাংবাদিকতা
[sharethis-inline-buttons]