রবিবার দুপুর ২:০৯, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

কংক্রিটের জঞ্জাল ও রাজধানী ঢাকার জনসংখ্যা বিস্ফোরণ

৭৩৯ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

১৯৯২ সালে বন্ধু নজরুল ইসলাম চৌধুরীর এ্যাডভার্টাইজিং ফার্মে গিয়ে সর্বপ্রথম কম্পিউটারের সাথে আমার পরিচয় হয়। তখন কাজের অবসরে কম্পিউটারে গেমস্ খেলতাম। সে সময় আমাদের দেশে এসেছিলো জাপানের তৈরী Apple কোম্পানীর Macintosh Classic এবং Macintosh Plus কম্পিউটার। সে Macintosh Plus কম্পিউটারের এলসিডি মনিটরের সাইজ কতো ছিলো তা এ মূহুর্তে সঠিকভাবে বলতে পারছি না। সাদাকালো রঙয়ের সে কম্পিউটার মনিটরের সাইজ আনুমানিক ৬-৮ ইঞ্চির বেশি হবে না। যদিওবা সে ব্রান্ডের কোনো কম্পিউটার এখন বাংলাদেশের মার্কেটে সচরাচর দেখা যায় না। পাওয়া গেলেও দাম অনেক বেশি।

আশির দশকে বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে কম্পিউটার প্রযুক্তির আগমন ঘটে। ১৯৮৬ সালে রাজধানী ঢাকা থেকে প্রথম কম্পিউটার প্রযুক্তি সম্বলিত সংবাদপত্র “দৈনিক ইনকিলাব” প্রকাশিত হয়। একই সময়ে চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত হয় “দৈনিক পূর্বকোণ”। এখনতো হরেকরকম, বর্ণিল কম্পিউটার মনিটর শোভা পাচ্ছে অফিস ও বিজনেস হাউস গুলোতে। ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে Apple কোম্পানী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মার্কেটে ছেড়েছিল সর্বশেষ প্রযুক্তির ট্যাবলেট কম্পিউটার “I-Pad”। কম্পিউটারের কথা লিখলাম এই জন্য যে, মিডিয়ায় কাজ করতে হলে কম্পিউটার জানা না থাকলে খুব সমস্যা। ৯০ দশকে কম্পিউটারে গেমস্ খেললেও এ অত্যাধুনিক যন্ত্রের অপারেটিং পুরোপুরি আয়ত্ব করতে পারিনি।

২০১০ সালের ১ম দিকে এক বন্ধুর অনুরোধে সাপ্তাহিক “গণচিত্র” পত্রিকায় যোগ দিয়েছিলাম। সেখানে কোনো কম্পিউটার অপারেটর ছিলো না। তাই একজন কম্পিউটার অপারেটরের দরকার হলো। বহু খোঁজাখুঁজির পর একজনকে পাওয়া গেলো। তার নাম নূর আলম মুন্না। বাড়ী হবিগঞ্জ জেলায়। পরিচয় হবার পর সে তার বাংলা কম্পোজের স্পীড দেখালো। তার বাংলা কম্পোজের স্পীড মোটামুটি ভালোই। সে আমাকে বললো, হবিগঞ্জে তার কম্পিউটারের দোকান ছিলো। সেখানে ব্যবসা ভালো না চলায় এক বন্ধুর সহায়তায় রাজধানী ঢাকায় চলে এসেছ্। এভাবে চাকরি বা কাজের তালাশ করতে ছোট ছোট শহরগুলো থেকে রাজধানীতে চলে আসছে কর্মক্ষম তরুণরা। এসব ঢাকামুখি তরুণরা যোগ হচ্ছে রাজধানীর জনসংখ্যার কাতারে।

২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৪কোটি ২৩লাখ ১৯হাজার। জাতিসংঘের জনসংখ্যা বিষয়ক ফান্ড UNFPA-এর হিসাব অনুযায়ী ১৬ কোটি ৪৪ লাখ। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.৩৪ শতাংশ। ঢাকা ইউনিভার্সিটি পপুলেশন সাইন্সের মতে ১.৫ শতাংশ এবং জাতিসংঘের মতে ১.৬ শতাংশ। পুরো দেশের তুলনায় রাজধানী ঢাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ভয়াবহ। শুধু নতুন জন্মের কারণে নয় ভাগ্যের তালাশ করতে বা কর্মসংস্থানের প্রত্যাশায় প্রতিদিন ঢাকায় প্রবেশ করছে ২,১৩৫ জন মানুষ। নতুন মানুষের ভীড়ে ঢাকায় প্রতিবছর মানুষ বাড়ছে ৮ লাখ করে। বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১১ থেকে ১২ শ মানুষ বসবাস করে। আশেপাশের এলাকা মিলে বর্তমানে ঢাকায় ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষ বসবাস করছে। ১৯০১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী ঢাকা শহরের জনসংখ্যা ছিলো ০.৭ মিলিয়ন। ১৯৬১ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ২.৬ মিলিয়ন। ১৯৯১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী এ সংখ্যা ৬.৫ মিলিয়নে উন্নীত হয়।

১৯৯১ সালের আদমশুমারীর হিসাবে শহরে জন বসবাসের হার ২০ শতাংশ। বর্তমানে এ সংখ্যা ২২ শতাংশ বলে ধারণা করা হয়। গবেষক ও বিশেষজ্ঞ মহলের মতে সাধারণত শাসকদের প্রশাসন ও দূর্গকে কেন্দ্র করে নগর সভ্যতা গড়ে উঠেছে। যেমন: ইন্ডিয়ার মোগল আমলের বসবাসের নগর সমূহ। বিশেষজ্ঞ মহল মনে করেন, লিখন পদ্ধতি আবিষ্কারের সাথে সাথে নগর সভ্যতা শুরু হয়। খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ থেকে ২৫০০ অব্দের মধ্যে সিন্ধু নদের তীরে মাহেঞ্জোদারো ও হরপ্পাকে কেন্দ্র করে প্রাচীন নগর সভ্যতার বিকাশ ঘটে। তার আগে মিশরে পিরামিড নির্মিত হবার পর সেখানে বহু নগর গড়ে উঠে। নীল নদের উপত্যকা এবং বদ্বীপাঞ্চালে সৃষ্ট গ্রামকে ভিত্তি করে বহু নগরের গোড়াপত্তন হয়। যেমন: মেমফিস, থিস, হেলিওপালিন, নেখের ও এডিবস্ প্রভৃতি প্রাচীনতম নগর।

আমাদের রাজধানী ঢাকাও বিশ্বের প্রাচীনতম নগরগুলোর একটি। ঢাকার বয়স ১ হাজার বছরের বেশি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞ মহল। যদিওবা মোঘল আমলে ইসলাম খান বাংলার সুবেদার নিযুক্ত হবার পর ঢাকাকে প্রশাসনিক কেন্দ্র রূপে প্রতিষ্ঠা করা হয়। সে হিসেবে ২০১০ সালে রাজধানী ঢাকার চারশ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান করা হয়েছে। আসলেই বাড়তি জনসংখ্যার চাপ ও অপরিকল্পিত নগরায়ন ক্রমান্বয়ে রাজধানী ঢাকাকে দুষিত ও বসবাসের অযোগ্য নগরীতে পরিণত করছে। পুরনো ঢাকার কথা বাদ দিলেও নতুন ঢাকার আরামবাগ, ফকিরাপুল এলাকা বিরক্তিকর ঘনবসতিপূর্ণ। এসব এলাকায় কোনো কাজে গেলে যেকোনো মানুষেরই দম বন্ধ হবার মতো অবস্থা হবে।

উল্লেখিত এলাকায় আপনি যেখানেই যান সেখানেই দেখবেন শুধু মানুষ আর মানুষ। একমিনিট গলি বন্ধ থাকলে সেখানে সারি সারি মানুষ জড়ো হয়ে যায়। এসব এলাকার অতি ঘন বসতির কারণে ড্রেন ও সুয়ারেজ ব্যবস্থা প্রায় অকেজো হয়ে পড়েছে। এ জন্য প্রায় প্রতিদিন সুয়ারেজ থেকে ময়লা বের হয়ে এলাকার পরিবেশ অসহনীয় করে তোলে। অতি ঘনবসতি দিন দিন রাজধানী ঢাকার নাগরিক জীবন অসহনীয় করে তুলছে। নাগরিক সমস্যা ও সংকট প্রকট থেকে প্রকটতর ও অসহনীয় আকার ধারণ করছে। এ সংকট সৃষ্টির একটি বড় কারণ হলো সবকিছু রাজধানী কেন্দ্রিক করে ফেলা। ঢাকার বর্তমানে যা অবস্থা তাতে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রিকরণ করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। ঢাকার এমন অসহনীয় অবস্থার মধ্যেও বেশি ব্যবসায়িক সুবিধা লাভের আশায় বেশকিছু বিজনেস হাউস ও মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানী তাদের হেড অফিস বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় নিয়ে এসেছে।

কোম্পানী গুলো হলো: জেমস্ ফিনলে, রেকিট বেনকিজার, গ্ল্যাক্সো স্মিতক্লাইন (বর্তমানে বন্ধ) ও ইউনিলিভার। আমার চট্টগ্রামের বন্ধু প্রাণী চিকিৎসক ডা. এমদাদুল ইসলাম চৌধুরী বললেন, তার চিকিৎসা কাজের প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন ও ঔষধপত্র ঢাকার সাভারস্থ “সাভার ডেইরী ফার্ম”থেকে নিয়ে যেতে হয়। এ জন্য তাকে অনেক হয়রানীর শিকার হতে হয়। ভ্যাকসিন ও ঔষধগুলো চট্টগ্রাম থেকে সরবরাহ করা হলে তার চিকিৎসা কাজে অনেক সুবিধা হতো। সরকারের দূরদর্শী চিন্তার অভাব ও গ্রামাঞ্চলের বেকার কর্মসংস্থান বঞ্চিত মানুষের স্রোত ঢাকাকে এক ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। বিগত ৩০ বছরে রাজধানী ঢাকায় যতগুলো ডেভেলপার বা ইমারত নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে সারাদেশে ঠিক ততগুলো কৃষিখামার গড়ে উঠেনি। এসব ডেভেলপার কোম্পানী ঢাকার খাল-বিল, নালা-নর্দমা, ডোবা-ঝিল ভরাট করে একের পর এক মাল্টিস্টরেড ইমারত নির্মাণ করছে।

অপরিকল্পিত ইমারত নির্মাণ করে এসব কোম্পানী ঢাকাকে কংক্রিটের জঞ্জালে পরিণত করেছে। জানা গেছে, স্বাধীনতার আগে ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (ডিআইটি) ঢাকায় ১০ তলার ওপরে ইমারত নির্মাণের অনুমোদন দিতো না। পাকিস্তান আমলে ঢাকার ১০ তলা ইমারত ছিলো মাত্র একটি। এটি হলো মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকার ইসলাম চেম্বার। এটা টয়োটা বিল্ডিং নামে পরিচিত। পাকিস্তান আমলে পশ্চিম পাকিস্তানের বড় বড় শিল্পপতিদের পেছনে ফেলে পূর্ব পাকিস্তানের জহুরুল ইসলাম জাপানের “টয়োটা মটরস্ কর্পোরেশন” এর সোল এজেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। সে জন্য ইসলাম চেম্বার টয়োটা বিল্ডিং নামে পরিচিতি পায়। আমাদের স্বাধীনতার পর ডিআইটির নাম পরিবর্তন নতুন নামকরণ করা হয় রাজউক। স্বাধীনতার পর ইসলাম চেম্বার ওপর দিকে আরো বাড়ানো হয়। রাজধানীতে একের পর এক মাল্টিস্টরেড ইমারত নির্মাণ হতে থাকে।

পর্যায়ক্রমে রাজউক-এর নিয়ম-কানুন শীতিল হতে থাকে। ৩২ তলা ইমারত বাংলাদেশ ব্যাংক ভবন নির্মিত হবার পর মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকায় ৩৭ তলা বিশিষ্ট ইমারত “সিটি সেন্টার” নির্মিত হয়। ভবিষ্যতে হয়তো ৫০/৬০ ইমারত নির্মাণ করা হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকার মাটি মাল্টিস্টরেড ইমারত নির্মাণের উপযোগী নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, ঢাকাকে মানুষের বসবাস উপযোগী রাখতে হলে শুধু এর সঠিক পরিকল্পনা করলেই হবে না-ঢাকামুখি জনস্রোত ঠেকাতে হবে। ২০১০ সালে ইরানের রাজধানী তেহরানকে দুষণ, দুর্যোগমুক্ত ও জনসংখ্যার বাড়তি চাপ কমাতে সে নগরীর ৫০ লাখ অধিবাসীকে অন্যত্র পুণর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। সে সময়ে তেহরানের জনসংখ্যা ছিল  ১কোটি ৫০ লাখ। ২০১০ সালে ক্ষমতায় থাকা ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. মাহমুদ আহমাদি নেজাদ একসময় তেহরানের মেয়র ছিলেন। এ জন্য রাজধানী তেহরানের অধিক জনসংখ্যা, পরিবেশ দুষণ ও দুর্যোগের ব্যাপারে তিনি বেশ উদ্বিগ্ন ছিলেন। তেহরানকে পরিবেশ দুষণ ও দুর্যোগমুক্ত রাখতে তিনি এ উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এ জন্য ৫০ লাখ লোককে তেহরান থেকে অন্যত্র পুণর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল।

রাজধানী তেহরান থেকে চলে যাবার জন্য নানারকম সুযোগ-সুবিধা ঘোষণা করা হয়েছিল। রাজধানী ঢাকা থেকে কোনো মানুষকে বাইরে পুণর্বাসন করা আমাদের পক্ষে হয়তো সম্ভব নয়। এ কাজ করার মতো মজবুত অর্থনীতি নেই বাংলাদেশের। তবে গ্রাম, ছোট-ছোট শহর, জেলা শহর, বিভাগীয় শহরগুলোর জনমানুষ যাতে রাজধানীমুখি না হয় সে ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। রাজধানীর বাইরের শহরগুলো ও গ্রামীণ জনপথে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। গড়ে তুলতে হবে ব্যাপকভিত্তিক কৃষিখামার। কৃষি প্রধান দেশে কৃষির কার্যকর উন্নয়নের জন্য কোনো সরকারই সফল উদ্যোগ নিতে পারেনি। এ জন্য দেশে এখনো উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কৃষিখামার গড়ে উঠেনি। পর্যাপ্ত কৃষি উৎপাদন না থাকায় দেশের খাদ্য সংকট দিন দিন প্রকট আকার ধারণ করছে।

১৬ কোটি মানুষের জন্য চাল, গম, তেল, পিঁয়াজ, রসুন, মসুর ডাল, আদা ও মসলা থেকে শুরু করে বিপুল পরিমাণ কৃষি পণ্য বিদেশ থেকে আমদানী করতে হয়। এসব কৃষি পণ্য আমদানী করতে অতি মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা দেশ থেকে চলে যাচ্ছে। দেশে কৃষিখামার গড়ে না উঠার কারণে গ্রামের বেকার জনগোষ্ঠী দলে দলে রাজধানীমুখি হচ্ছে। এসব জনস্রোতের কারণে বাড়ছে রাজধানী ঢাকার জনসংখ্যা বিস্ফোরণ।

জনবিস্ফোরণের কারণে দিন দিন বাড়ছে রাজধানী ঢাকার গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ ও জলাবদ্ধতা সংকট। যানজট পরিস্থিতিও অসহনীয় আকার ধারণ করেছে। পরিিিস্থতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, রাজধানী ঢাকার হাউসহোল্ড ও ইউটিলিটি সংকট কবে নিরসন হবে কেউ বলতে পারছে না। এরকম অসহনীয় সংকটময় পরিস্থিতি থেকে নাগরিকদের মুক্তি দেয়া না গেলে রাজধানী ঢাকা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাবে। ঢাকা পরিণত হবে কংক্রিটের জঞ্জালে। আমাদের সবার প্রিয় রাজধানী ঢাকাকে জঞ্জালমুক্ত করে অবশ্যই একে বাসযোগ্য রাখতে হবে।

সাইয়েদ ইকরাম শাফী : তরুণ লেখক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট

s.iquram03@gmail.com

Some text

ক্যাটাগরি: সমকালীন ভাবনা

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি