বৃহস্পতিবার রাত ১:৫২, ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

মুখোমুখি ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব ও জামেয়া ইউনুছিয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

মুফতি মুবারক উল্লাহ জানান, একান্তই যৌক্তিক ও সঙ্গত কারণেই কাদিয়ানীদের বিরুদ্ধ স্মরণকালের বৃহৎ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হলেও জাতীয় দৈনিকের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিগণ তা গুরুত্বসহ না পাঠানোয় পত্রিকাগুলো সে সংবাদ ছাপেনি। তাতে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের কেউ কেউ একটু-আধটু উত্তেজিত হওয়া স্বাভাবিক। তা সত্ত্বেও আমরা ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাংবাদিকগণ এক জরুরি সভা ডেকে “ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সকল কওমি মাদ্রাসা ও হেফাজতের সংবাদ অনির্দিষ্টকালের জন্য বর্জনের ডাক” দেয় গত ২২ জানুয়ারি। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে, যা এখনো ‘টপ অব দ্য টাউন’। প্রেসক্লাবের এমন সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষের মধ্যেও বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা। বিশেষ করে অসংখ্য কওমি ছাত্র-শিক্ষক, আলেম-উলামা ও অভিভাবকসহ সর্বস্তরের তৌহিদী জনতা এ নিয়ে ফুঁসে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উল্টো ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব ও তাদের পত্রিকাগুলোকে বর্জনের ডাক দিয়েছে তারা।

এ বিষয়ে দেশ দর্শন এর পক্ষ থেকে জামেয়া ইউনুছিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এর পরিচালক মুফতি মুবারক উল্লাহ জানান, একান্তই যৌক্তিক ও সঙ্গত কারণেই কাদিয়ানীদের বিরুদ্ধ স্মরণকালের বৃহৎ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হলেও জাতীয় দৈনিকের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিগণ তা গুরুত্বসহ না পাঠানোয় পত্রিকাগুলো সে সংবাদ ছাপেনি। তাতে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের কেউ কেউ একটু-আধটু উত্তেজিত হওয়া স্বাভাবিক। তা সত্ত্বেও আমরা ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছি। এরমধ্যেই আলেমের সঙ্গে দুয়েকজন সাংবাদিকের সামান্য বাকবিতণ্ডা হয়। খবর পেয়ে আমরা সেই আলেমকে আরো কয়েকজনসহ মুফতি এনামের সঙ্গে প্রেসক্লাবে পাঠাই দুঃখ প্রকাশ করতে ও ক্ষমা চাইতে। কিন্তু এর পরপরই তারা আমাদের সংবাদ বর্জনের ঘোষণা দেয় যা সম্পূর্ণই অনৈতিক ও দুঃখজনক এবং এখনো পর্যন্ত তারা এ ব্যাপারে আমাদের কিছুই জানাননি।

মুফতি মুবারক উল্লাহ ও আব্দুর রহীম কাসেমী

তিনি আরো বলেন, প্রেসক্লাবের সভাপতি খ.আ.ম. রাশিদুল ইসলাম (আবরার) জামেয়ারই সাবেক ছাত্র। তার বাবাও কওমি অঙ্গনেরই মানুষ। এ ঘটনার পর তাকে ব্যক্তিগতভাবে মাওলানা সাজিদুর রহমানও ফোন করে জামেয়ার পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু এরপরও তার নেতৃত্বে ও সভাপতিত্বে প্রেসক্লাবে এমন সিদ্ধান্ত খুবই আশ্চর্যজনক ও রহস্যপূর্ণ।

এ বিষয়ে মুফতি আব্দুর রহীম কাসেমীও দেশ দর্শনকে একই কথা জানান এবং বলেন, আমরা যৌক্তিক ও নৈতিক অবস্থানেই আছি। এরপরও তারা আমাদের সংবাদ বয়কট করলে আমরা সেসবের কোনো গুরুত্ব দেই না।

এদিকে প্রেসক্লাবের সভাপতি খ.আ.ম. রাশিদুল ইসলাম দেশ দর্শনকে বলেন, আমরা তাদের (আলেমদের) বলেছিলাম, আমাদের একটা নিয়মিত ‘মিটিং’ আছে। এর আগেই যেন তারা কাউকে পাঠান। অথবা মিটিংয়ে মাওলানা সাজিদুর রহমানকে পাঠান। কেননা আলেমদের প্রতি আমাদের কিছু কথা ও দাবি-দাওয়া আছে। কিন্ত তারা অন্যকয়েকজনকে পাঠিয়েছেন আমাদের মিটিং চলাকালে। তাই জরুরিভিত্তিতে আমরা এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি। তিনি আরো বলেন, শুধু সেদিনই নয়, বরং প্রায়ই মাদরাসা ছাত্রদের দ্বারা আমাদের সাংবাদিকগণ অশোভন আচরণের শিকার হন। তবু আমরা সমঝোতায় প্রস্তুত। প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে আমরা জামেয়া ইউনুছিয়ার আলেমদের আলোচনা ও চায়ের দাওয়াত দিয়েছি, কিন্তু এখনো তারা কোনো সাড়া দেননি।

উল্লেখ্য,  গত ২০ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইউনুছিয়ার ছাত্রদের উপর হামলার প্রতিবাদ ও কাদিয়ানীদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে জেলার আলেম উলামা, ছাত্র ও সর্বস্তরের জনগণের উদ্যোগে স্মরণকালের বৃহৎ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু পরদিন এ বিষয়ে কোনো সংবাদ জাতীয় পত্রিকায় না আসায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের কয়েকজন সাংবাদিকের সাথে একজন আলেমের বাকবিতণ্ডা হয় হয় বলে খবরে প্রকাশ।

ক্যাটাগরি: প্রধান খবর,  ব্রাহ্মণবাড়িয়া,  শীর্ষ তিন

ট্যাগ:

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply