ঐতিহ্যবাহী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্তর্গত আখাউড়া থানাধীন পূর্ব মালদার পাড়ায় অবস্থিত জামিয়া মাদানিয়া ইসলামিয়া। প্রতিষ্ঠানটি অতি অল্প সময়েই বেশ সাড়া জাগিয়েছে। নজর কেড়েছে বিচক্ষণ অভিভাবকদের। বিমোহিত প্রতিষ্ঠানটির কমিটিবৃন্দ। ভিতরে প্রবেশ করলেই প্রত্যক্ষ করা যায় চলছে হাফেজে কুরআন তৈরির কঠিন মেহনত। ছাত্রদের আদব -লেহাজ, পোশাক -পরিচ্ছদ ও আচরণ-উচ্চারণে আকাবিরের নমুনা ফুটে ওঠে। প্রতিষ্ঠান প্রধান ও একজন সাহিবে নিসবতওয়ালা।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বন্ধুবর হাফেজ মাওলানা আব্দুর রকিব হাফিযাহুল্লাহ। অতি মেহনতী, মিশুক, সজ্জন ছাত্র দরদী ও কর্মতৎপর একজন মানুষ। অতি সহজে ছাত্রদের আপন হয়ে যান তিনি। যার মাঝে ছাত্ররা খুঁজে পায় পিতৃত্বের আদর ও ছায়া। বেশ সুনামের সাথে কুরআনের খেদমত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সদা হাসি লেগেই থাকে তাঁর চিরচেনা পরিচিত মুখে।
গতকাল স্নেহের হাফেজ মুহাম্মদ সালমান খাঁনের হিফজের শেষ সবক উপলক্ষে ছোট পরিসরে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। কয়েকটি কথা আরজ করেছিলাম উপস্থিত শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে।
হুবহু এখানে তুলে ধরা হলো – আল্লাহ রব্বুল আলামীন অগণিত শোকর আদায় করি, যিনি কুরআনের ভুবনে বসে কিছু দ্বীনের কথা শোনার তাওফিক দিয়েছেন, এজন্য সকলে বলি, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ রব্বুল আলামীন মানবজাতির হেদায়েতের জন্য আল কুরআন নাজিল করেছেন এবং কুরআন হেফাজত ও সংরক্ষণের দায়িত্ব নিজেই নিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা উম্মতে মুহাম্মদির নির্বাচিত লোকদের মাধ্যমে যুগ যুগ ধরে কুরআন হেফাজত করে যাচ্ছেন। সৌভাগ্যবান সে, যার বুকে আল্লাহ তায়ালা নিজের কালাম ধারণ করার ও হিফজ-মুখস্থ করার তাওফিক দান করেছেন।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবি করিম (সা.) ইরশাদ করেন, “পবিত্র কুরআনের বাহককে (কিয়ামতের দিন) বলা হবে, ‘তুমি কুরআন কারীম পড়তে থাক ও চড়তে থাক। আর ঠিক সেইভাবে স্পষ্ট ও ধীরে ধীরে পড়তে থাক, যেভাবে দুনিয়াতে পড়তে। কেননা, (জান্নাতের ভিতর) তোমার স্থান ঠিক সেখানে হবে, যেখানে তোমার শেষ আয়াতটি খতম হবে।” (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৭৪)
আবদুল্লাহ ইবনে ‘আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবি করিম ইরশাদ করেছেন, আমার উম্মাতের মাঝে বেশী সম্ভ্রান্ত অর্থাৎ উন্নত মর্যাদার অধিকারী ব্যক্তি তারাই, যারা কুরআন ধারক-বাহক ও নামাজ আদায়ের মাধ্যমে রাত জাগরণকারী। (মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদিস : ১২৩৯)
কুরআন ধারক- বাহকদের মাঝে তিনটি বৈশিষ্ট্য থাকবে- ১. নিয়মিত কুরআন তেলাওয়াত করা। ২. কুরআন বিধিনিষেধ মেনে চলা। ৩. কুরআনের অর্থ ও মর্ম বুঝার চেষ্টা করা।
শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভী রহ. বলেন, যেই স্থানে কুরআনের তেলাওয়াত করা হয় সেই স্থানের সম্পর্ক সরাসরি আল্লাহ তায়ালার সাথে হয়ে যায়। আর যেখানে হাদিস পাঠ করা হয় সেই স্থানের সম্পর্ক রওযা আতহারের সাথে হয়ে যায়।
আল্লাহ তায়ালা কুরআনুল কারিমকে আমাদের অন্তরের বসন্ত বানিয়ে দেন। আমিন।
লেখক: মুফতী আব্দুল্লাহ ইদরীস
সহকারী শিক্ষা সচিব, জামিয়া দারুল উলুম মুহিউস সুন্নাহ আখাউড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
Some text
ক্যাটাগরি: মতামত
[sharethis-inline-buttons]