শনিবার রাত ৮:৫৩, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

এসিড পান করা পপির চিকিৎসায় ডাঃ টনি জং

৩৮৩ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি
বাঁয়ে ডাঃ টনি ঝংয়ের সঙ্গে পপি রানী

পানির গ্লাসে ছিল এসিড মিশ্রিত পানি। পরকিয়ায় লিপ্ত স্বামী পিপাসিত স্ত্রীকে পানির বদলে এসিড পান করতে দেয়। ১৮ বছরে বয়সী স্ত্রী পপি রানী দাস তা জানতো না। অসুস্থ পপি রানী পানি ভেবে এসিড পান করে। তারপর যা হবার তাই হলো! তার মুখ, খাদ্যনালী ও পাকস্থলী পুড়ে গলে গিয়েছিল।

এরপর দীর্ঘ সাত বছর বাংলাদেশ ‘এসিড সারভাইভার্স ফাউন্ডেশন’ হসপিটালে চিকিৎসা চলছিল তার। খেতে পারতো না, গিলতে পারতো না কোন খাবার। তাই বাইরে থেকেই একটা নলের সাহায্যে তরল খাবার শরীরে ঢোকানো হতো। জীবন ও মৃত্যুর মাঝামাঝি সময়ে, ২০০৯ সালে স্বামীর হাতে এসিড পান করে দগ্ধ হয়ে অনেক যন্ত্রণা সয়ে অনেকগুলো বছর হাসপাতালে আশাহীন জীবন কাটানোর পর শুরু হলো এক নতুন অধ্যায়।

২০১৬ সালের শুরুতে বাংলাদেশে আগুনে পোড়া রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য ঢাকা সফর করেছিলেন কানাডার টরেন্টোর প্লাস্টিক সার্জন ডাঃ টনি জং। ডাঃ টনি পপি রানীকে চিকিৎসা সেবা দেন। তিনি পপিকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে, কানাডা ফিরে গিয়ে তিনি পপিকে কানাডাতে নিয়ে গিয়ে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। সেই থেকে শুরু। ডা. টনি কানাডা ফিরে গিয়ে শুরু করেন পপির জন্য তহবিল সংগ্রহের কাজ। দ্বারে দ্বারে গিয়ে এসিডে পপির পুড়ে যাওয়ার গল্প বলেন। কাজ হয়। এক বছরের চেষ্টায় পপি রাণী কানাডার টরন্টোর পিয়ারসন এয়ারপোর্টে নামলেন ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখ।

পপি রানী ও ডাঃ রালফ গিলবার্ট

ইতিমধ্যে ডা. টনি গঠন করলেন পপি ট্রিটমেন্ট ফান্ড। এক মাসের মধ্যেই টরন্টোর কয়েকটি ধনী পরিবারসহ অন্যান্য ডোনারের ডোনেশন সংগ্রহ হয় সাত লক্ষ মার্কিন ডলার। জার্মানির মিউনিখের অ্যানেস্থেসিস্ট ডা. ইনজি হ্যাসেলস্টেইনার ও তার বোনের প্রচেষ্টায় সংগ্রহ হয় আরও সাতাশ হাজার ইউরো। দীর্ঘ মেয়াদি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের বাইরে পপির থাকার বন্দোবস্তে এগিয়ে আসেন কানাডার বাংলাদেশ কমিউনিটির মহৎপ্রাণ মানুষেরা। সেই সাথে টরন্টো জেনারেল হসপিটালের মেডিকেল টিমের স্পশালিস্ট ডাক্তার ও অ্যানেস্থেসিস্ট সবাই তাদের ফি পুরোটাই ফ্রি করে দেন।

পপির অপারেশনের জন্য টরন্টো জেনারেল হাসাপাতালের অপারেশন থিয়েটার অফ টাইমের জন্য ব্যবহার করারও অনুমতি দেয়া হয়, যাতে কানাডার অন্যান্য নিয়মিত রোগীদের অপারেশন সেবার ব্যাঘাত না ঘটে। সেইসাথে অপারেশন চার্জও সম্পূর্ণ ফ্রি করে দেয়া হয় পপির জন্য। ডা, জিলবার্ট ও ডা. গোল্ডস্টেইনের তত্ত্বাবধানে পপির বাম বাহুর চামড়া থেকে নতুন কোষ উৎপন্ন করে নতুন করে খাদ্যনালী, পাকস্থলী, শ্বাসনালী পুন:নির্মাণ করা হয়। যুগান্তকারী সাফল্য আসে। এখন পপি স্বাভাবিকভাবে খাবার গিলে খেতে পারে। শক্ত খাবারের হজম প্রকৃয়া স্বাভাবিক হতে আরও কিছুদিন চিকিৎসা নিতে হবে।

Some text

ক্যাটাগরি: মতামত

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি