সারা দেশ জুড়ে অনেক দিন ধরেই কিশোর গ্যাংগুলোর দৌরাত্ম্য লক্ষ করা যাচ্ছে। তারা চুরি ছিনতাই, লুটপাট, মাদক ব্যবসা, খুন, অপহরণ সহ ভয়ংকর সব অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। দেশে প্রায় কিশোর গ্যাংদের হাতে খুন হচ্ছে সম বয়সী বন্ধুবান্ধব সহ পথচারীরা ।
কিশোর গ্যাংয়ের প্রতিটি সদস্যের হাতে হাতে থাকে ছুরি, চাপাতি, ড্যাগার, ব্যানার ।
ফলে তাদের হাতে নানাভাবে সাধারন মানুষ নিগৃহীত হলেও কেউ কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না । এসব বিষয়াধি এখন শুধু অভিভাবক নয়, রাষ্ট্রের জন্যও দুর্ভাবনা বটে।
যারা কিশোর বয়স থেকেই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে, তারা যে একদিন শীর্ষ সন্ত্রাসীর খাতায় নাম লেখাবে না; তার নিশ্চয়তা কী ? এই কিশোর গ্যাং সমাজের দেহে ব্যাপকভাবে ক্ষত বিস্তারের আগেই প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের এগিয়ে আসা উচিত। এক্ষেত্রে পরিবারের ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করি ।
আমাদের গোকর্ণ ঘাট গ্রামের অনেক দিন ধরেই একটি কিশোর গ্যাংয়ের লাগামহীন দৌড়াত্ব লক্ষ্য করে গেলে ও তাদের বিষয়ে বরাবরই নিরব তাদের পরিবার সমাজের নীতিনির্ধারক ও স্থানীয় প্রশাসন ।
এই চক্রে গ্রামের বিভিন্ন পাড়া মহল্লার ১০/১২ জন সদস্য রয়েছে। তারা ইভটিজিং, সাধারন প্রতিবন্ধী ও মানুসিক রোগীদের রাস্তাঘাটে ঢিল মারা কাপড় ধরে টানাহ্যাঁচড়া করা গাল মন্দ এমনকি শারীরিক নির্যাতন করে চলছে অহরহ ।
আর এতে অনেকে একটু একটু প্রতিবাদ করলে ও আশ্চর্যজনক হল কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের মা বাবারা সন্তানদের এই অপরাধকে উপভোগ করতে দেখা যায়, যা কিশোরদের অপরাধী হতে আরো বেশী উৎসাহিত করে ।
গতকাল ৯ জুলাই ২০২১ আমার দোকান থেকে ৯০০০/ টাকা চুরি হয়েছে আমার সন্তান টাকা গুলো ক্যাশে রেখে ঘর থেকে ঘুরে আসতে আসতেই গায়েব হয়ে গেল টাকা গুলো, আমি জানতে পারি এই সময় কিশোর গ্যাংয়ের ৩/৪ জন সদস্য ও এখানে ছিল “
আজকাল মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট ও আকাশ সংস্কৃতির প্রভাবে অনেক কিশোর-কিশোরীই বিপথগামী হচ্ছে। তাদের মধ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্তরা কী ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তা ভাবলেও গা শিউরে ওঠে। এসব বখাটে বা কিশোর অপরাধীর হাতে দেশের স্কুল-কলেজগামী কিশোরীরা হরহামেশাই লাঞ্ছিত, অপমানিত ও যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে।
গোকর্ণ ঘাটের উপর দিয়ে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য, ঠান্ডা পানীয়, কলা সহ অনেক কিছুই পিক আপ এর মাধ্যমে আনা নেওয়া হয়ে থাকে ।
আর এই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা বাদুরের মত পিক আপে ঝুলে বিভিন্ন প্রকার মালামাল চুরি করে রেখে দেয়। এমন ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটলে প্রতিকারে কেউ এগিয়ে আসছে না।
এছাড়া ওরা বিভিন্ন বাড়িতে থাকা পোষা কবুতর, হাঁস, মরগী, মোবাইল চুরি করেই চলছে ।
বিশেষ করে মোবাইল চুরি এখন গ্রামের নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে ।
কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা দল বেঁধে
গভীর রাত পর্যন্ত রাস্তাঘাটে অলিগতিতে নানান অপরাধ মূলক কাজ করে বেড়ালে ও তাদের মা বাবা থেকে যাচ্ছে নীরব ফলে তারা দিনিদিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে ।
এছাড়া গোকর্ণ ঘাট সহ আশপাশ এর গ্রাম গুলোতে মাদক ব্যবসায়ীদের রামরাজত্ব কায়েম হলে ও প্রতিকারে উদাসীনতা রয়েছে সমাজের কর্তাব্যক্তিদের । গোকর্ণ ঘাটে বেশ কয়েকজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী বিনেবাধায় দীর্ঘ দিন ধরে মাদক ব্যবসা করে গেলে ও প্রশাসনের নিষ্কৃয়তা ব্যাপক হতাশাজনক।
ওদের হাত ধরে এলাকার হাজারো মা বাবার স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে। তাদের সন্তানরা অর্থাৎ যুব সমাজের নৈতিক অধঃপতন এর পাশাপাশি মাদকের ছোবলে ওদের জীবন ধ্বংস করার মধ্য দিয়ে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা কয়েক বছরে শূণ্য থেকে কোটিপতি বলে যাচ্ছে অবলীলায়….
এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী ও আসক্তের মাত্রা দ্রুত বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি এলাকায় চুরি, ছিনতাই সহ বিভিন্ন প্রকার অসামাজিক কর্মকাণ্ড বাড়ছে প্রতিনিয়ত। গত কয়েক বছরে যত চুরি ছিনতাই হয়েছে, আর যারা ধরা পড়েছে তারা সবাই এলাকার চিহ্নিত মাদকাসক্ত ।
ধারণা করা হয় মাদক ক্রয়ের টাকা জোগাড় করতেই তারা বিভিন্ন সময় চুরি,ছিনতাই সহ নানান অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ড করে বেড়াচ্ছে বেশ দাপটের সঙ্গে । এখনই যদি তাদের কঠোর হাতে দমন করা না হয়। তা হলে ওরা যে আগামীতে ভয়ংকর অপরাধী না হয়ে উঠবে তার নিশ্চয়তা কি ?
এমতাবস্থায় কিশোর গ্যাংয়ের মাদক ব্যবসায়ীদের জন্ম ও বিকাশ রোধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাননীয় পুলিশ সুপার মহোদয় যথাযথ পদক্ষেপ নেবে-এটাই আমার প্রত্যাশা।
লেখক—
মোঃ মাহফুজুর রহমান পুষ্প
সভাপতি
মাদক মুক্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া চাই
গোকর্ণ ঘাট- ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
Some text
ক্যাটাগরি: মতামত
[sharethis-inline-buttons]