আজ বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর দক্ষিণাঞ্চলের অন্তর্গত জামিয়া সালেহা আদর্শ মহিলা মাদরাসা শিলাউরের খতমে মেশকাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পীরে কামেল মাও. মুজিবুর রহমান (মোয়াজ) সাহেব।
প্রধান অতিথি ছিলেন আল্লামা আব্দুর রহমান হাফিযাহুল্লাহ। (শিক্ষক মারকাযুদ্দাওয়াহ, ঢাকা) বিশেষ অতিথি ছিলেন মুফতি আহমাদুল্লাহ আশরাফ সাহেব। আরো উপস্থিত ছিলেন মাওলানা দ্বীন মুহাম্মদ সাহেব ও মুফতী আব্দুল্লাহ ইদরীস সাহেব।
অনুষ্ঠান সঞ্চালক ছিলেন মুফতী মাহমুদুল হাসান সাহেব (মুহতামিম অত্র জামিয়া)।
প্রধান অতিথি শেষ হাদিস পড়ে অনুবাদ করেন,
عَنْ بَهْزِ بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ فِي قَوْلِهِ : (كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ) قَالَ ” إِنَّكُمْ تُتِمُّونَ سَبْعِينَ أُمَّةً أَنْتُمْ خَيْرُهَا وَأَكْرَمُهَا عَلَى اللَّهِ
বাহয ইবন হাকীম তার পিতা তার পিতামহ থেকে বর্ণিত যে, আল্লাহর বাণীঃ (كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ) তোমরা শ্রেষ্ঠ উম্মত মানুষের কল্যাণে তোমাদের আবির্ভাব (৩ঃ ১১০)’ প্রসঙ্গে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেনঃ তোমরা হলে সত্তর উম্মত পূর্ণকারী। তোমরা হলে এর মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং আল্লাহর কাছে সবচেয়ে মর্যাদাবান।
অতঃপর মেহমান গতানুগতিক কোনো আলোচনা না করে বলেন, এই কিতাবের শেষ অধ্যায় হল এই উম্মতের মর্যাদা সংক্রান্ত।
এই মর্যাদা পেতে হলে আমাদেরকে তিনটি কাজ করতে হবে,
এক, কুরআন সুন্নাহর সহীহ ও স্বচ্ছ জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এর জন্য হকপন্থী উলামায়ে কেরামের দ্বারস্থ হতে হবে এবং তাদের তত্বাবধানে ইলমে দ্বীন শিখতে হবে।
দুই, অর্জিত জ্ঞান অনুযায়ী আমল করতে হবে।
আকিদার বিষয় হলে বিশ্বাস করতে হবে, আমলের বিষয় হলে আমল করতে হবে। ইসলাম হচ্ছে একটি পুরোপুরি জীবন ব্যবস্থা। এতে জীবনের শুরু থেকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত ধর্মের নির্দেশনা রয়েছে। রাস্তা দিয়ে কিভাবে চলতে হয় সেক্ষেত্রে ইসলামের নির্দেশনা রয়েছে এমনকি কবরে কিভাবে লাশ দাফন করতে হবে সেক্ষেত্রে ও ইসলামের নির্দেশনা রয়েছে।
আশা করি আপনারা সবাই ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহিমাহুল্লাহ’র নাম শুনেছেন। তাঁর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি কিতাব হলো মুসনাদে আহমদ। এই কিতাবে তিনি প্রায় চল্লিশ হাজার হাদিস লিপিবদ্ধ করেছেন। কিন্তু লক্ষাধিক হাদিস তাঁর মুখস্থ ছিলো। তিনি বলেন, আমার নিকট পৌঁছেছে এমন কোনো হাদিস নেই যার উপর আমল করিনি। এর একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি সহজে বুঝতে পারবেন।
তিনি একদা তাঁর একজন ছাত্রকে বললেন, আমি তোমার বাসায় আত্নগোপন করব, তখন ছাত্রটি বলল, কেনো! আপনার নামে তো রাজ দরবার থেকে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি হয়নি, তখন তিনি বলেন আগে ব্যবস্থা করো আত্নগোপনের। তারপর ছাত্রটির বাড়িতে তিনি তিনদিন আত্নগোপনে থাকলেন। বের হয়ে বললেন, তুমি জানো! কেন আত্নগোপন করেছি? ছাত্রটি বলল না। তখন তিনি বললেন, রাসুল সা. হিজরতের সময় গারে হেরায় তিনদিন আত্নগোপনে ছিলেন তাই আমিও এই সুন্নতটি পালন করেছি। আল্লাহু আকবার!
আমাদের সালাফগণ আমলের ব্যাপার কত সচেতন ছিলেন! আমলের প্রতি কত যত্নবান ছিলেন।
তিন. সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ করা। এর জন্য প্রথমে নিজের জানাশোনা থাকতে হবে। নিজে আমল করতে হবে। পরে নিজের পরিবার ঠিক করতে হবে।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে বুঝার ও আমল করার তাওফিক দান করুন।
মুফতী আব্দুল্লাহ ইদরীস লেখক সংবাদকর্মী
Some text
ক্যাটাগরি: মতামত
[sharethis-inline-buttons]