এড. নিয়ামুল হক: সর্বত্রই আজ নেতার প্রভাব, কিন্তু যোগ্য নেতার বড়ই অভাব। প্রশাসন মানে একটি দেশের শাসনব্যবস্থা, আইনকানুন, শান্তিশৃঙ্খলা ও শান্তিরক্ষার নিমিত্তে কাজ করা। আর সেই কাজগুলো বাস্তবায়ন করার জন্য বিভিন্ন ধরনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গঠন করা হয়।
এ কথা অস্বীকার করার কোন কারন নেই যে, আমাদের দেশের সকল বিষয়ে সরকারের বা নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতা জড়িত। যার মানে হলো রাষ্ট্রের প্রতিটি বিভাগে সরকার কর্তৃক মনোনীত নেতা বা জনপ্রতিনিধিরা অবদান রাখেন। অর্থাৎ পরোক্ষভাবে নেতারা শাসনব্যবস্থায় তাদের ক্ষমতার প্রয়োগ করে থাকেন। যার কারনে আইনশৃঙ্কলা বাহিনী অনেক ক্ষেত্রেই তাদের স্বাধীনচেতায় কাজ করার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও বাধাগ্রস্থ হয়ে থাকেন।
আমরা দেখে থাকি যখন কোন মামলা মোকদ্দমা বা বিরোধ সৃষ্টি হয় তখন পক্ষগন যে কোন নেতার সরনাপন্ন হোন বিরোধীয় বিষয় নিষ্পত্তি করার জন্য বা নেতার মাধ্যমে প্রশাসনকে প্রভাবিত করার জন্য। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নেতারা কোন পক্ষকে প্রভাব প্রয়োগ করে নাজেহাল করে থাকেন বা পক্ষদূষে দূষিত হয়ে অনেক ক্ষমতার প্রয়োগ ও করেন আবার অনেক ক্ষেত্রে বিরোধীয় বিষয়ের সুন্দর সমাধান ও করে থাকেন।
আমাদের মধ্যে একটি ধারনার সৃষ্টি হয়েছে, আমরা মনে করি যেহেতু নেতাদের প্রশাসনের সাথে একটি বন্ধুসূলভ সম্পর্ক বজায় থাকে সেহেতু নেতাই পারেন আমার সমস্যার সমাধান করে দিতে আর সেই লক্ষ্যেই শুরু হয় আমাদের দৌড়ঝাপ। আর প্রতিটি পক্ষই তখন তাদের প্রচন্দমতো নেতার দ্বারা প্রশাসনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে থাকেন যার প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তাদের মন মতো কোন সমাধান বা আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করতে কিছুটা হলেও দু:শ্চিন্তায় মগ্ন হোন যা কিনা কোন ভাবেই কাম্য হতে পারেনা।
আমাদের মানসিকতা এবং দীর্ঘদিনের প্রশাসনের সহিত নেতাদের দৌড়াত্বতার সম্পর্কের কারনে আমরা এই চিন্তা থেকে রেহাই পাবার সুযোগ খুব কমই বটে। যেহেতু রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রশাসনিক কাঠামো থাকার পরও আমরা নেতার ছায়াকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি এবং নেতার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান খুজে থাকি, সেহেতু এটা সুস্পষ্টভাবেই পরিলক্ষিত যে পরোক্ষভাবে নেতাই কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রশাসনের কাজ করে থাকেন বা ভূমিকা রাখেন।
আমরা জানি একজন নেতা রাষ্ট্রের পথপ্রদর্শক লাখ মানুষের অনুকরনের বিষয় এবং দিক নির্দেশক। এহেন অবস্থায় আমাদের রাষ্ট্রের যারা নেতা বা নেতার ভূমিকায় আছেন তারা চাইলেই এই সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে একজন যোগ্য নেতা বা যোগ্য প্রশাসন হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্টিত করার অফূরন্ত সুযোগ বিদ্যমান। যাহার ফলে সমাজ ও রাষ্ট্রে তারা ন্যয়বিচারকের ভূমিকা পালন করতে পারেন। একজন নেতা তার ক্ষমতা প্রয়োগ করে নিরপেক্ষতার আলোকে সমাজে শান্তি প্রতিষ্টা করতে পারেন আবার অশান্তির সম্রাজ্য গড়েও তুলতে পারেন। বর্তমান প্রজন্মের মানুষ নেতার ক্ষমতার প্রয়োগের বিষয়ে যতেষ্ট সচেতন তারা বূজতে পারেন ক্ষমতা কোনদিকে প্রভাহিত হচ্ছে। তাই মানুষের মনে আজীবন আস্থা ও ভালবাসার প্রতিক হিসেবে স্থান করে নিতে রাষ্ট্রের অন্যান্য প্রশাসনিক কাঠামোর সাথে একজন নেতাকে যোগ্য প্রশাসনিক নেতা হিসেবে রাষ্ট্রে শান্তি প্রতিষ্টা, ন্যায় বিচারক, অন্যায় প্রভাবমুক্ত ক্ষমতার প্রয়োগ, সকলের প্রতি সাম্যতার সুদৃষ্টির ভূমিকা রাখা অপরিহার্য্য। এ দেশের কোটি মানুষ অপেক্ষায় আছে একজন যোগ্য নেতার আবির্ভাবের জন্য। আমরা যারা নেতা প্রেমিক তাদের অবশ্যই যোগ্য নেতার পিছনে জীবনের মূল্যবান সময় ব্যয় করতে হবে, অন্যথায় নেতার ব্যাক্তির স্বার্থ হাসিলের ব্যবহারের মেশিন হিসেবে আপনার জীবন অন্ধকারের ছায়ায় আচ্ছাদিত হওয়ার সম্ভাবনা বিরাজমান। তাছাড়া নেতার ভূল পথে পরিচালনার মানসিকতার বিরোদ্ধে প্রতিবাধ হোক সবসময়ই।
Some text
ক্যাটাগরি: নাগরিক সাংবাদিকতা, নিয়ম-কানুন, মতামত
[sharethis-inline-buttons]