ক্ষুধার যন্ত্রণায় ম্যা-ম্যা করে কেঁদে
সেই প্রথম তোমাকেই ডেকেছি।
তাই সকাল দুপুর রাতে—-
আমার বেঁচে থাকা ও ক্ষুধার দায়!
সেই মায়েরই কাছে।
যখন বড় হয়ে গেছি—-
ক্ষুধা পেলেই বলতাম মা ভাত দে?
তাই ক্ষুধা মানেই তুই আমার কাছে
সেকেন্ড, মিনিট, দিন, মাস,বছর সারাটা সময়!
ক্ষুধা মানেই তোর অন্ধ ফুসফুসের মধ্যে
আমার ভাল থাকার এক ঝলক রোদ্দুর।
ক্ষুধা মানেই তোর রক্তের শিরায় শিরায়
নির্ভয়ে ডুব-সাঁতারে মুক্ত কুড়োনো।
ক্ষুধা মানেই তোর মমোতা ঘন সবুজের মল্লিকায়
আমার শ্বাস-প্রশ্বাসের দম।
ক্ষুধা মানেই তোর চোখ জুড়ানো মায়া
বহমান পদ্মা মেঘনা ও যমুনার স্রোতস্বিনী ধারা।
ক্ষুধা মানেই তুই আমার জন্মদাত্রী মা!
চোখ মেলে দেখা প্রথম নারী ও
আমার সুখ দুঃখের প্রেমিকা।
মা-ওমা তুই যে আমার চৈতালী সুখ!
ঝলসে যাওয়া ঘনিষ্ঠ তাপের বন্ধু।
তাই তোকে অনায়াসেই বলা যায়!
তুই আমার দূরন্ত কৈশোরে উদ্দ্যম গল্প।
বেল কুড়ানো, আম কুড়োনো,বরইতলা
আর ঝড়ের কাছে তেপান্তরের মাঠ।
ঝিলের বুকে শাপলা ফোটা পদ্ম
ও ডিঙি বাওয়া কলমিলতার বেগুনিফুল।
দূরন্ত চপলতায় প্রতিবেশীর বাঁকা কথা
ঘরে ফেরা অপেক্ষার চোখের আকুলতা।
বিষন্ন বিকেলে এলোমেলো কেশ ওড়ানো
সময় অসময় বারবার আয়নায় নিজেকে দেখা।
অতঃপর দুঃস্বপ্নের উথলে ওঠা যৌবনের উম্মোদনা
তাঁতের শাড়িতে পর করে দেওয়া!
অবশেষে রাত নির্ঘুম চিন্তা ভাবনার ভারীবোঝা বহন
সেই আমার জীবন ও সুখের ঘর নিয়ে।
কবিতা: মায়ের কাছে খোলা চিঠি
কবি: মাহাবুবা রহমান লাকী
Some text
ক্যাটাগরি: কবিতা
[sharethis-inline-buttons]