সোমবার রাত ২:১৮, ৪ঠা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ১৭ই নভেম্বর, ২০২৪ ইং

ভয়াবহ অনাচার-দুর্নীতির অবসানে দরকার নতুন রাজনীতি-নেতৃত্ব

৫৪৮ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

ভয়াবহ অনাচার-দুর্নীতির অবসানে দরকার নতুন রাজনীতি-নেতৃত্ব এবং সার্বিক গণআন্দোলন

-আবুল কাসেম ফজলুল হক

 

ধর্ষণ ও আরো নানারকম বীভৎস নারী নির্যাতনের খবর প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে। গ্রামে-শহরে সর্বত্রই এগুলো অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে সারা দেশজুড়ে জনগণের নিরাপত্তার অভাববোধ হচ্ছে। অনেক জায়গাতেই নারী-পুরুষ এর প্রতিবাদ করছেন। কোনো জাতির সাংস্কৃতিক অবক্ষয় বিরামহীনভাবে চলতে থাকলে জনগোষ্ঠীগত অবক্ষয় দেখা দেয়। তাতে মানুষের বংশধারা খারাপের দিকে যায়। জাতি অপজাতিতে পরিণত হয়।
কাজেই বাংলাদেশে চলমান সামাজিক অবক্ষয় এবং যৌন বিশৃঙ্খলা জাতির জন্য ভয়াবহ পরিণাম ডেকে আনছে।

এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে সকলেই এসবের প্রতিকারের জন্য বিচার এবং ভয়াবহ শাস্তির দাবি তুলছেন। সরকার এর জন্য প্রাণদণ্ডের আইন করতে পারে; একথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন। আমাদের ধারণা কঠোর নিয়ন্ত্রণমূলক আইনী ব্যবস্থার দরকার আছে। আমরা এটাও মনে করি যে, কেবল দণ্ডদানের মাধ্যমে এর সমাধান হবে না। জাতীয় রাজনীতি থেকে আরম্ভ করে রাষ্ট্রব্যবস্থা ও সমাজের স্তরে স্তরে যে দুর্নীতি এবং অনাচার চলছে তার দ্বারাই এই ধরণের বাস্তবতা তৈরি হয়েছে। রাষ্ট্রব্যবস্থা ও সমাজব্যবস্থা থেকে দুর্নীতি কমাতে পারলেই কেবল এর সমাধান পাওয়া যেতে পারে।

সকল পর্যায়ের নির্বাচন অর্থহীন ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। রাজনীতি সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত। দেশে গণতন্ত্র নেই, জাতীয়তাবাদ নেই এবং কোনো আদর্শ নেই। সমাজে মানুষের সম্প্রীতি নেই। দুর্বলের ওপর সবলেরা স্বেচ্ছাচারিতা চালাচ্ছে। অবস্থা এমন যেন ‘জোর যার মুল্লুক তার’। সর্বত্রই সরকারের লোকেরা এবং সরকারি দলের লোকেরা এইসব অপকর্মে লিপ্ত। সরকারি এবং সরকারি দলে অনেক ভালো লোক আছেন; কিন্তু ভালো লোকদের কর্তৃত্ব নেই। যেসব দল সরকারের বাইরে আছে, তাদের মধ্যেও কোনো উন্নত চিন্তা-চেতনা নেই।

যারা বুদ্ধিজীবী তাদের প্রায় সকলেই সুশীল সমাজ সংগঠনে যুক্ত হয়ে এমন সব কথা বলছেন যে, তাতে রাজনীতির অবনতি ছাড়া কোনো উন্নতি হয় না। দরকার উন্নত চরিত্রের রাজনৈতিক দল। গতানুগতিক রাজনীতির জায়গায় দরকার উন্নত চরিত্রের আদর্শগত রাজনীতি। এর জন্য জনসাধারণের মধ্যেও সচেতনতা জাগা দরকার। জনসাধারণ ঘুমিয়ে থাকলে কেউ তাদের অবস্থা উন্নত করে দিতে পাররে না। জনগণের মধ্যে মহৎ-মানবিক গুণাবলির বিকাশ দরকার। উন্নত চরিত্রের রাজনৈতিক চরিত্র জনসাধারণকেই গড়ে তুলতে হবে।

আজকের এই চরম নৈতিক অধঃপতনের মধ্যেও স্বল্প-সংখ্যক চিন্তাবিদ আছেন, যাদের চিন্তায় উন্নত চরিত্রের নতুন রাজনৈতিক নেতৃত্ব গড়ে তোলার সহায়ক বক্তব্য আছে। সেগুলো পড়ে দেখা সকলের কর্তব্য।

উপস্থিত অস্থিরতা এবং মামুলি প্রতিবাদ দিয়ে কোনো ফল হবে না। সার্বিক পতন থেকে সার্বিক উত্থানের উপযোগী নেতৃত্ব দরকার। জনসাধারণকে তা গড়ে তুলতে হবে। চিন্তা-ভাবনা, আচার-আচরণ উন্নত করার জন্য সঙ্ঘবদ্ধ নতুন কর্মসূচি ও কার্যক্রম দরকার। কেবল ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন দিয়ে হবে না। সকল দুর্নীতি-অনাচার অবসানের জন্য দরকার সার্বিক গণআন্দোলন। তার জন্য নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে হবে। এর জন্য নতুনচিন্তা যেমন দরকার, তেমনি দরকার নতুন সাংগঠনিক কর্মসূচি ও কার্যক্রম।

লেখক: আবুল কাসেম ফজলুল হক
চিন্তাবিদ, রেনেসাঁসসাধক

Some text

ক্যাটাগরি: মতামত

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি