সকল জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটিয়ে নির্ধারিত হলো কওমী মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার আগামী নেতৃত্ব। আল্লামা শাহ আহমদ শফীর (রহঃ) ইন্তেকালের পর থেকে কওমী অঙ্গনে দেখা দেয় নেতৃত্বের শূন্যতা। একক নেতৃত্বদানে আল্লামা শাহ আহমদ শফীর যে গ্রহণযোগ্যতা ছিল তার ইন্তেকালে সেখানে একটা বিরাট ধাক্কা আসে কওমী অঙ্গনে। আমার মনে হয়, আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ইন্তেকালের পর থেকে বেফাকের মজলিশে আমেলার মিটিং এর আগ পর্যন্ত কওমী অঙ্গন ছিল এক আজানা শংকা আর উৎকন্ঠায়।
বিশেষ করে হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্র বিক্ষোভ, আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ইন্তেকাল, ফেসবুকসহ সোশ্যালমিডিয়ায় একেরপর এক আজগুবি কল্পনাপ্রসূত পোস্ট, সবমিলিয়ে এই কয়দিন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিল কওমী অঙ্গনের দায়িত্বশীল উস্তাদ ছাত্র, শুভাকাঙ্ক্ষীরা। বেফাক তাদের নেতৃত্ব নির্বাচন করাটা ছিল এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। এরই মধ্যে এই সুযোগে পর্দার আড়াল থেকে অপপ্রচার, অপকৌশল শুরু হয়ে যায় কওমী অঙ্গনকে অস্থির করে তোলার জন্যে। কওমী অঙ্গনের দায়িত্বশীল ও নেতৃস্থানীয় সম্ভাবনাময় নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে শুরু হয়ে যায় চরিত্রহনন করার মতো জঘন্যতম অপচেষ্টা।
উস্তাদ-ছাত্রের মাঝে শ্রদ্ধা মোহাব্বত ভালবাসা, তাযিম সম্মান কওমী মাদ্রাসার অন্যতম রুহানি এক বৈশিষ্ট্য। এই রুহানি বৈশিষ্ট্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে আমদানি করা হয়েছে ” উস্তাদ ভুল করলে ছাত্র লোকমা দিবে” এই শ্লোগান। যা আস্তে আস্তে উস্তাদ মুরুব্বিদের বিষয়ে ছাত্র অনুসারীদের মনে জন্ম নিয়েছে সন্দেহ অবিশ্বাস। সবমিলিয়ে সপ্তাহ দশদিন কওমী মাদ্রাসার উস্তাদ ছাত্র, নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গদের মাঝে চরম উৎকন্ঠা ছিল । এই চরম এক অস্থিরতার মাঝে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া তার নেতৃত্ব নির্বাচন করাটা ছিল এক মহা চ্যালেঞ্জ।
তারপরও কঠিন এই পরিস্থিতিতে অত্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে বিচক্ষণতা, ধৈর্য, আর মেধার সাথে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে বেফাকের মজলিশে আমেলার সভায় প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত করা হয়েছে সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি, মহাসচিব। সভাপতি হয়েছেন আল্লামা মাহমুদুল হাসান। সিনিয়র সহ-সভাপতি আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী। মুফতী মাহফুজুল হক মহাসচিব।
হে আল্লাহ! আমাদের কৃতকর্মের অপরাধের কারণে যেন কওমী মাদ্রাসা, উলামায়ে কেরাম, ছাত্র শিক্ষকদের মাঝে কোনপ্রকার বদ আছর না পড়ে। হে আল্লাহ! দায়িত্বশীলগণ যেন দলমতের উর্ধে উঠে কওমী অঙ্গনের সকলকে নিয়ে একসাথে চলতে পারে,সেই তাওফিক দান করুণ। কওমী মাদ্রাসা নিয়ে, আলেম উলামাদের মাঝে বিভেদ তৈরি করতে যারা অপচেষ্টা চালাচ্ছে তাদের থেকে কওমী মাদ্রাসা ও আলেম উলামা ছাত্রবৃন্দদের হেফাজত কর।
লেখক: মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান
যুগ্ম সম্পাদক, ইসলামী ঐক্যজোট
Some text
ক্যাটাগরি: মতামত
[sharethis-inline-buttons]