আজকের আলোচ্য হাদিসে কন্যাদায়গ্রস্তদের ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে।
কন্যা সন্তান বরকতময়। বরকত নিয়ে আসে। প্রথম সন্তান কন্যা হওয়া সেটিও কল্যাণের নিদর্শন। কেননা রব্বুল আলামীন প্রথমে কন্যা সন্তানের কথা উল্লেখ করেছেন তাঁর মহিমান্বিত কালাম আল কুরআনে।
দেখুন,
يَهَبُ لِمَن يَشَاءُ إِنَاثًا وَيَهَبُ لِمَن يَشَاءُ الذُّكُورَ
অর্থঃ রব্বুল আলামীন যাকে ইচ্ছে কন্যা সন্তান দেন আর যাকে ইচ্ছে ছেলে সন্তান দেন।
সুরা শুরা-৪৯
তাফসীরে কুরতুবিতে উক্ত আয়াতের অধীনে হযরত ওয়াসেলা বিন আসকা রা.এর একটি উক্তি বর্ণনা করা হয়েছে যে,স্ত্রী কল্যাণময় ও বরকতময় হওয়ার অন্যতম আলামত হল,প্রথমে কন্যা সন্তান হওয়া। তাই কন্যা সন্তান হলে খুশী হওয়া। মনখুলে রবের দরবারে সেজদায় লুটিয়ে পড়া।প্রাণ খুলে রব্বুল আলামীনের শোকর আদায় করা।
একাধিক কন্যা সন্তানের অধিকারী পিতার জন্য রয়েছে জাহান্নাম থেকে মুক্তির সার্টিফিকেট। রয়েছে জান্নাতের সুসংবাদ। আসুন সেই সুসংবাদ রাসূল সা. এর ভাষায় শুনি।
عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ دَخَلَتِ امْرَأَةٌ مَعَهَا ابْنَتَانِ لَهَا تَسْأَلُ، فَلَمْ تَجِدْ عِنْدِي شَيْئًا غَيْرَ تَمْرَةٍ فَأَعْطَيْتُهَا إِيَّاهَا، فَقَسَمَتْهَا بَيْنَ ابْنَتَيْهَا وَلَمْ تَأْكُلْ مِنْهَا، ثُمَّ قَامَتْ فَخَرَجَتْ، فَدَخَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَيْنَا، فَأَخْبَرْتُهُ فَقَالَ “ مَنِ ابْتُلِيَ مِنْ هَذِهِ الْبَنَاتِ بِشَىْءٍ كُنَّ لَهُ سِتْرًا مِنَ النَّارِ ”.
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ভিখারিণী দু’টি শিশু কন্যা সংগে করে আমার নিকট এসে কিছু চাইল। আমার নিকট একটি খেজুর ব্যতীত অন্য কিছু ছিলনা। আমি তাকে তা দিলাম। সে নিজে না খেয়ে খেজুরটি দু’ভাগ করে কন্যা দু’টিকে দিয়ে দিল। এরপর ভিখারিণী বেরিয়ে চলে গেলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট আসলেন। তাঁর নিকট ঘটনা বিবৃত করলে তিনি বললেনঃ যাকে এরূপ কন্যা সন্তানের ব্যাপারে কোনরূপ পরীক্ষা করা হয় তবে সে কন্যা সন্তান তার জন্য জাহান্নামের আগুন থেকে পর্দা হয়ে দাঁড়াবে।
সহীহ বুখারী হাদিস নং ১৩৩৫
সহীহ মুসলিম হাদিস নং ৬৪৫৪
হাদীসের শিক্ষাঃ
১. অভাবী ব্যক্তির জন্য নিজের প্রয়োজন প্রকাশ করা বৈধ।কারো নিকট কিছু চাওয়া বৈধ।
২. আয়েশা রা. এর দানশীলতা প্রমাণিত হল।কারণ একটি খেজুর থাকা সত্ত্বেও দিয়ে দিলেন।
৩. সামান্য জিনিস ও সদকা করা যায়। সামান্য মনে করে সদকা না করা উচিত নয়।বরং তাওফিক অনুযায়ী দান-খয়রাত করা।
৪. নিজের ভালো কাজ উল্লেখ করা জায়েয। তবে শর্ত হল, খুঁটা দেওয়ার ইচ্ছে না থাকতে হবে এবং গর্ব প্রকাশ না করতে হবে।
[ফাতহুল বারী -১০.৫২৯]
আব্দুল্লাহ ইদরীস, লেখক, সংবাদকর্মী
Some text
ক্যাটাগরি: মতামত
[sharethis-inline-buttons]