ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পূর্ব গোয়াল পাড়া মহল্লার মৃত আশিস বর্মণের স্ত্রী শান্তি রানী (৫২) বছর বয়সেও তার ভাগ্যে জোটেনি সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা। স্বামীহারা এ মহিলা তিন বেলার আহারের এবং ওষুধ কেনার টাকার জন্য স্থানীয় এক চায়ের হোটেলে কাজ করেন।
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড) ১৯ এর কারনে হোটেল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনি অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। কিন্তু অসুস্থতার জন্য তিনি আর কাজ করতে পারছে না। একমাত্র ছেলেটাও তাকে আর দেখেনা। বিয়ের পর অসুস্থ্য বৃদ্ধ মাকে ফেলে বউ নিয়ে শশুর বাড়িতে বসবাস করছে। বর্তমানে শহরের এনামুল পেট্রোল পাম্পের পশ্চিম পাশে অন্যের বাসা ভাড়া করে শান্তি রানী বসবাস করছেন।
জানা যায়, শান্তি রানী গত আট বছর আগে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহন করার কারনে তার আত্নীয়স্বজনরা তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। করোনাকালে কাজ বন্ধ থাকায় সরকারি ও স্থানীয়দের কাছে কোন সাহায্য সহযোগীতাও পাননি। স্থানীয় মেম্বার চেয়ারম্যানের কাছে সাহায্যের জন্য গেলে তারাও খালি হাতে ফিরিয়ে দেয়।
নিরুপায় হয়ে ও এক মুঠো আহারের জন্য বাড়ির পাশে এক হোটেলে কাজের সন্ধানে গেলে হোটেল মালিক বৃদ্ধ ভেবে তারিয়ে দেয়। বর্তমানে তিনি অসুস্থ্য হয়ে রোগ যন্ত্রণায় বিছানায় কাত্তাচ্ছেন।
শান্তি রানীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার স্বামী মারা গেছে ১৮ বছর হলো। অন্যের বাসা-বাড়িতে কাজ করে ছেলে টাকে বড় করলাম সেই ছেলেও আমাকে ফেলে চলে গেছে। কেউ আমার খোঁজ-খবর নেয় না। কাজ করলে খাবার পাই আর কাজ না করলে সেদিন না খেয়ে থাকি।
স্থানীয় মেম্বারের কাছে অনেকবার গেছি কোন লাভ হয়নি। করোনার সময় কেউ আমাকে কোন সাহায্য করেনি। মানুষে বলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নাকি গরীবদের জন্য ঘর দিচ্ছে। ত্রাণের টিন দিচ্ছে। কেউ যদি দয়া করে আমারে একটা ঘর না হয় দুই একটা টিন দিত তাহলে আমি একটু ঘুমাতে পারতাম।
গৌতম চন্দ্র বর্মন: ঠাকুরগাঁও থেকে
Some text
ক্যাটাগরি: খবর
[sharethis-inline-buttons]