গত সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দেশের বিভিন্ন পত্রিকায়, অনলাইনে এবং দেশ দর্শনেও সরকারি সুবিধা কি নেই শান্তি রানীর ভাগ্যে? এই শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর টানা ৭২ ঘন্টা ধরে চলা মুশলধারে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে আজ শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল মামুন সেই অসুস্থ বিধবা শান্তি রানীকে (৫২) খাদ্য সামগ্রী ও বস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেন। সেই সাথে দ্রুত সময়ের মধ্যে শান্তি রানীকে বিধবা কার্ড ও বসতভিটা করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, পত্রিকায় সংবাদ দেখার পর আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হই। আজ আমি সেই বিধবা শান্তি রানীকে দেখতে আসি। তাকে প্রথমিকভাবে শাড়ী, কম্বল, চাল দিয়ে সহযোগিতা করি। তিনি আরও বলেন, শান্তি রানীর নিজস্ব জায়গা জমি নেই। জেলা প্রশাসক ড. কেএম কামরুজ্জামান সেলিম স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক শান্তি রানীকে একটি সরকারী খাস জমি দেওয়ার ব্যবস্থা করবো যাতে তিনি থাকতে পারেন এবং কৃষিকাজ করে হলেও জীবিকা নির্বাহ করে চলতে পারেন।
উল্লেখ্য, স্বামীহারা শান্তি রানী (৫২) তিনবেলা আহার এবং ওষুধ কে নার টাকার জন্য স্থানীয় এক চায়ে র হোটেলে কাজ করেন। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এর কারণে হোটেল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনি অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। কিন্তু অসুস্থতার জন্য তিনি আর কাজ করতে পারছে না। একমাত্র ছেলেটাও তাকে আর দেখেনা। বিয়ের পর অসুস্থ্য বৃদ্ধ মাকে ফেলে বউ নিয়ে শশুরবাড়িতে বসবাস করছে। বর্তমানে শহরের এনামুল পেট্রোল পাম্পের পশ্চিম পাশে অন্যের বাসা ভাড়া করে শান্তি রানী বসবাস করছেন।
জানা যায়, শান্তি রানী গত আট বছর আগে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার কারণে তার আত্মীয়স্বজনরা তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। করোনাকালে কাজ বন্ধ থাকায় সরকারি ও স্থানীয়দের কাছে কোন সাহায্য সহযোগীতাও পাননি। স্থানীয় মেম্বার, চেয়ারম্যানের কাছে সাহায্যের জন্য গেলে তারাও খালি হাতে ফিরিয়ে দেয়। নিরুপায় হয়ে ও এক মুঠো আহারের জন্য বাড়ির পাশে এক হোটেলে কাজের সন্ধানে গেলে হোটেল মালিক বৃদ্ধ ভেবে তারিয়ে দেয়। বর্তমানে তিনি অসুস্থ্য হয়ে রোগ যন্ত্রণায় বিছানায় কাতরাচ্ছেন।
এর আগে, সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের আব্দুল লতিফের মেয়ে ও ঠাকুরগাঁও সেন্ট মাদার তেরেসা স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মুক্তা আক্তার তার জন্মদিন উপলক্ষ্যে সেই অসুস্থ্য বৃদ্ধ শান্তি রানী (৫২) কে দুই মাসের খাদ্য সামগ্রী ও বস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেন।
Some text
ক্যাটাগরি: নাগরিক সাংবাদিকতা
[sharethis-inline-buttons]