রবিবার সকাল ৮:৫৩, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং

মানুষের জন্য উদ্ভিদের প্রয়োজনীয়তা

৪৮০ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

উ‌দ্ভিদ জগৎ মহান সৃ‌ষ্টিকর্তার অকৃপণ দান। জীব-‌বৈ‌চিত্র্য ও প্রাকৃ‌তিক বিপযর্য় রো‌ধে উ‌দ্ভি‌দের কো‌নো বিকল্প নেই। মহান সৃ‌ষ্টিকর্তার অ‌শেষ কৃপায় এই প্রজা‌তির এক‌টি বড় গো‌ষ্ঠী যা‌দের অ‌ধিকাংশই সা‌লোকসং‌শ্লেষ‌ণের মাধ্য‌মে শর্করাজাতীয় খাদ্য তৈরী কর‌তে পা‌রে এবং চলাচল কর‌তে পা‌রে না। বৃক্ষ,গুল্ম, বিরুৎ ইত্যা‌দি উ‌দ্ভিদ জগ‌তের অন্তর্গত। বর্তমা‌নে পৃ‌থিবী‌তে প্রায় ৩,৫০,০০০ প্রজা‌তির উ‌দ্ভিদ আ‌ছে ব‌লে ধারণা করা হয়। এর ম‌ধ্যে ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ২,৮৭,৬৫৫ টি প্রজা‌তিকে সনাক্ত করা গে‌ছে।

ধারণা করা হয়, মানুষ যখন প্রাথ‌মিক পর্যা‌য়ে খাওয়ার উপ‌যোগী, ঔষধগুণসম্পন্ন এবং বিষাক্ত উ‌দ্ভিদ চি‌হ্নিত কর‌তে শুরু ক‌রে, তখন থে‌কেই উ‌দ্ভিদ বিজ্ঞা‌নের সূচনা ঘ‌টে। উ‌দ্ভিদের না‌মের অ‌ভিন্নতা ও স্থা‌য়ি‌ত্বের ব্যাপা‌রে তত্ত্বাবধায়ন করার জন্য ১৯৫০ সা‌লের ২০ জুলাই “আন্তর্জা‌তিক বোটা‌নিক্যাল কং‌গ্রেস” না‌মে এক‌টি সংস্থা সুই‌ডে‌নের স্টক‌হোম শহ‌রে প্র‌তি‌ষ্ঠিত হ‌য়ে ছিল। বর্তমা‌নে সংগঠন‌টির প্রধান কার্যালয় স্লোভা‌কিয়ার ব্রাটিস্লাভা শহ‌রে অব‌স্থিত। পৃ‌থিবীর বি‌ভিন্ন অঞ্চ‌লের বিলুপ্ত প্রজা‌তির উ‌দ্ভি‌দের নমুনা সংরক্ষণ,‌ নিবন্ধন ও স্থা‌য়ি‌ত্বের জন্য এই সংস্থা‌টি নিয়‌মিতভা‌বে কাজ যা‌চ্ছে।

গ‌বেষক‌দের ম‌তে, গত আড়াইশ বছ‌রে পৃ‌থিবী থে‌কে হা‌রি‌য়ে গে‌ছে প্রায় ৬০০ প্রজা‌তির গাছ। এ সংখ্যা একই সম‌য়ে বিলুপ্ত পাখী,স্তন্যপায়ী ও সরীসৃ‌পের মি‌লিত সংখ্যার দ্বিগুণ। এ কথা নিঃসং‌কো‌চে বলা যে‌তে পা‌রে যে, প্রাকৃ‌তিকভা‌বে বি‌ভিন্ন প্রজা‌তির উাদ্ভ‌দের বিলু‌প্তির গ‌তি শুধু মানু‌ষের উপ‌স্থি‌তির কার‌ণেই বে‌ড়ে গে‌ছে ৫০০ গুণ। উদাহরন হি‌সেবে বলা যে‌তে পা‌রে দ‌ক্ষিণ আ‌মে‌রিকার দেশ চি‌লির কথা। এই দে‌শে এক সময় প্রচুর চন্দন গাছ পা‌ওয়া যে‌তো। কিন্তু কা‌লের বিবর্ত‌নে এই দেশ থে‌কে চন্দন গাছ হা‌রি‌য়ে গে‌ছে শুধু প্রসাধনকা‌জে অ‌তিমাত্রায় ব্যবহা‌রের কার‌ণে। আদ‌তে উ‌দ্ভিদের স‌ঙ্গে পু‌রো পৃ‌থিবীর অন্য প্রাণগু‌লোরও জ‌ড়ি‌য়ে আ‌ছে বাস্তসংস্থা‌নের কার‌ণেই। কারন এখ‌নো এই গাছই অ‌ক্সি‌জেন ও খাদ্যের জোগানদাতা। ফ‌লে উ‌দ্ভি‌দের বিলু‌প্তি অন্য প্রানীর বিলু‌প্তি ত্বরা‌ন্বিত হওয়ার কারন হি‌সে‌বে দেখা দি‌চ্ছে।

উ‌দ্ভি‌দের বিলু‌প্তি সব প্রজা‌তির জন্য এক‌টি বড় দুঃসংবাদ। কো‌টি কো‌টি প্রজা‌তি এই উ‌দ্ভিদের উপর নির্ভরশীল। এর ম‌ধ্যে মানুষও র‌য়ে‌ছে। আন্তর্জা‌তিক প্রকৃ‌তি ও প্রাকৃ‌তিক সম্পদ সংরক্ষন সংঘ (আইইউ‌সিএন) এর মুখপা‌ত্রের ম‌তে, বি‌শ্বের কোন অঞ্চল থে‌কে কোন প্রজা‌তির উ‌দ্ভিদ আমরা হারা‌চ্ছি, তা জানা থাকাটা জরু‌রি। বি‌শেষত বিপন্ন ও মহা‌বিপন্ন প্রজা‌তিগু‌লো রক্ষায় তাহ‌লে আমরা কার্যকর ব্যবস্থা নি‌তে পারব। এ‌টি একই স‌ঙ্গে এদের উপর নির্ভরশীল অন্য প্রজা‌তিগু‌লো‌কেও বাঁ‌চি‌য়ে দে‌বে।

আবহমানকাল ধ‌রে বি‌ভিন্ন ধর‌নের উাদ্ভদ প্রজা‌তি মানু‌ষের জীবন-জী‌বিকার উপাদান জু‌গি‌য়ে আস‌ছে। মহান সৃ‌ষ্টিকর্তা মানু‌ষের পাশাপা‌শি উ‌দ্ভি‌দের উপর নির্ভরশীল অসংখ্য প্রানীর জীবন রক্ষ‌া‌র্থে পাহাড়-জঙ্গল, মরুভূ‌মি ও নদী-সমু‌দ্রে অসংখ্য বৃক্ষ সৃজন ক‌রে‌ছেন। ধর্মীয় ও মান‌বিক দৃ‌ষ্টি‌কোণ থে‌কে বৃক্ষ‌রোপন এক‌টি মহাপূ‌ণ্যের কাজ। সুতরাং প‌রি‌বেশ ও জীবন রক্ষা‌র্থে আজ থে‌কেই আমি, আপনি ও সমা‌জের সবাই-বৃক্ষ‌নিধন বন্ধ ক‌রি, অঞ্চলভে‌দে বি‌ভিন্ন প্রজা‌তির গাছ লাগাই এবং এর নিয়‌মিত প‌রিচর্যা ক‌রি।

Some text

ক্যাটাগরি: মতামত

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি