ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য আখের চিনি, বিটের চিনি ও অন্যান্য মিষ্টি জাতীয় খাবার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু তাদের জন্য ক্যালোরি না থাকায় খেতে বাধা নেই স্টিভিয়ার উৎপাদিত মিষ্টি খাবারে। গবেষকরা জানিয়েছেন, এ উদ্ভিদ মানবদেহের বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
বর্তমানে দুর্লভ এ প্রজাতির স্টিভিয়া ফসল হিসেবে চাষ হচ্ছে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, কোরিয়া, মেক্সিকো, থাইল্যান্ড ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশে। এ গাছটির আদি উৎপত্তি স্থল প্যারাগুয়ে বলে জানা যায়। ওই দেশে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে স্টিভিয়ার চাষ শুরু হয় ১৯৬৪ সালে। ১১টি ওষুধি গুণসম্পন্ন এবং ডায়াবেটিস রোগীদের চা তৈরির স্টিভিয়া প্রজাতির প্রাকৃতিক মিষ্টি সমৃদ্ধ এই উদ্ভিদের চাষ হচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ের সুগার ক্রপস গবেষণা কেন্দ্রে। বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট ২০০১ সালে এই উদ্ভিদটি থাইল্যান্ড থেকে সংগ্রহ করে। দীর্ঘ গবেষণা ও আবহাওয়ার কথা বিবেচনা করে পাবনার ঈশ্বরদী ও দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে স্টিভিয়া বা মিষ্টি পাতা প্রজাতির এ উদ্ভিদের চাষ শুরু হয়।
বছরের ৯ মাস টবে অথবা মাটিতে এর চাষ করা সম্ভব বলে জানিয়ে ঠাকুরগাঁও সুগার ক্রপস গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শরিফুল ইসলাম বলেন, স্টিভিয়া প্রজাতির এ উদ্ভিদের পাতা চিনির চেয়ে ৩০-৪০ গুণ বেশি মিষ্টি। ক্যালরিমুক্ত এ মিষ্টি ডায়াবেটিস রোগীরা সেবন করলে রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ পরিবর্তন হয় না। তাছাড়া রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণসহ দাঁতের ক্ষয়রোধ ও ত্বকের কোমলতা এবং লাবণ্য বৃদ্ধি করে এমন গুণগত উপাদান রয়েছে এ উদ্ভিদে।
তিনি আরো বলেন, এটি কম্পোজিটি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত একটি গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। জাপান, চীন ও কোরিয়াতে স্টিভিয়া প্রজাতির বিভিন্ন খাবার ও ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে। এর গুরুত্ব অনুধাবন করে দেশের কৃষি বিজ্ঞানীরা দীর্ঘ গবেষণার পর ঠাকুরগাঁও এবং পাবনার ঈশ্বরদীতে চাষ শুরু করেছে এর। বানিজ্যিকভাবে স্টিভিয়া উৎপাদন করে পৃথিবীর অনেক দেশেই এর পাতা বেচে প্রচুর বৈদেশিক অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।
গৌতম চন্দ্র বর্মন: ঠাকুরগাঁও থেকে
Some text
ক্যাটাগরি: খবর
[sharethis-inline-buttons]