এই পৃথিবী মুমিনের জন্য কারাগার। এটাই আসল সুখের ঠিকানা নয়। ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহ.কে তাঁর ছেলে জিজ্ঞেস করলেন, বাবা! আমরা কখন প্রশান্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারব? ইমাম সাহেব উত্তর দিলেন, যখন পুলসিরাত অতিক্রম করে জান্নাতে প্রথম কদম ফেলতে পারব।
পৃথিবী স্থায়ী বসবাসের জায়গা নয়। নশ্বর এই ধূলিমলিন পৃথিবী ক্ষণস্থায়ী। যারা এই পৃথিবীতে বসবাস করে তারাও ক্ষণস্থায়ী। পৃথিবীতে জীবন চলার পথে মানুষ বিভিন্ন কষ্ট ও দুঃখের সম্মুখীন হতে হয়। আর এই দুঃখ কষ্ট ও ক্ষণস্থায়ী।
তাই কখনো বড় কোনো সমস্যার মুখোমুখি হলে ঘাবড়ে যেতে নেই।আত্নহত্যা হত্যার পথ বেঁচে নেই।সমাধানের পথ বের করার চেষ্টা করা। সংকট থেকে উত্তরণের পথহ খোঁজা। সবর করা।কারণ সবরে মেওয়াহ ফলে। রবের দরবারে কাকুতি মিনতি করে দোয়া করা।
আল্লাহমুখী হওয়া।কারণ নবী করীম সা. কোনো কঠিন বিপদের সম্মুখীন হতেন নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন। এ মর্মে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে, হুযায়ফা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম কোন কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হলে নামাযে মশগুল হয়ে যেতেন।
সুনানে আবু দাউদ হাদিস নং ১৩১৯
নামাযের মাধ্যমে বিপদ থেকে উদ্ধার হওয়ার পথ খোঁজা।
আমাদের পূর্বসুরীরা নামাজের মুসল্লায় দাঁড়িয়ে অনেক কিছু মঞ্জুর করে ফেলতেন। এমন ভুড়ি ভুড়ি কাহিনী আকাবিরের জীবনীতে পাওয়া যায়। আমরা তো তাদেরই উত্তরসুরী।আমাদেরকেও পারতে হবে। করতে হবে তাদের মত মুজাহাদা।
আত্নহত্যা একটি ভয়াবহ অপরাধ। কেউ যদি জেনে -শুনে আত্নহত্যা অবৈধ মনে করে তারপরো তা করে তাহলে নির্ধারিত শাস্তির পর আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতে দিবেন।তবে কেউ যদি বৈধ মনে করে আত্নহত্যা করে তাহলে গুনাহকে হালাল মনে করার কারণে কাফের হয়ে যাবে। মুক্তির আশা করা যায় না আদৌ। কারণ কাফেররা অনন্তকাল জাহান্নামে বসবাস করবে। তবে আত্নহত্যার শাস্তি হাদিসে নববীতে বর্ণিত হয়েছে।
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি কোন ধারাল অস্ত্র দ্বারা আত্নহত্যা করবে, সে অস্ত্র তার হাতে থাকবে, জাহান্নামের মধ্যে সে অস্ত্র দ্বারা সে তার পেটে আঘাত করতে থাকবে, এভাবে সেখানে সে চিরকাল অবস্থান করবে। আর যে ব্যাক্তি বিষপানে আত্নহত্যা করবে, সে জাহান্নামের আগুনের মধ্যে অবস্থান করে উক্ত বিষ পান করতে থাকবে, এভাবে সেখানে সে চিরকাল অবস্থান করবে। আর যে ব্যাক্তি নিজকে পাহাড় থেকে নিক্ষেপ করে আত্নহত্যা করবে, সে ব্যাক্তি সর্বদা পাহাড় থেকে নিচে গড়িয়ে জাহান্নামের আগুনে পতিত হতে থাকবে, এভাবে সে ব্যাক্তি সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে। সহীহ মুসলিম হাদিস নং ২০১
আত্নহত্যা কেন করবেন? দয়াময় রব্বুল আলামীন আপনাকে কীভাবে কুদরতী শান্ত্বনা দিচ্ছেন! দেখুন লক্ষ করে।আর ভাবুন।
*”আল্লাহ কষ্টের পর সুখ দিবেন।”
– সুরা ত্বলাক : ৭
*”নিশ্চয়ই কষ্টের পর রয়েছে স্বস্তি।”
– সুরা ইনশিরাহ : ৬
*”আমি তো আমার দুঃখ ও যাতনা আল্লাহর সমীপেই নিবেদন করছি!”
– সুরা ইউসুফ : ৮৬
*”জেনে রেখো, আল্লাহর সাহায্য নিকটে!”
– সুরা বাকারা : ২১৪
*”একমাত্র কাফির সম্প্রদায়রছাড়া অন্য কেউ আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয় না!”
– সুরা ইউসুফ : ৮৭
*”আল্লাহ কাউকে সাধ্যের বাইরে দায়িত্ব চাপিয়ে দেননা।
– সুরা বাক্বারা : ২৮৬
*”এবং অবশ্যই আমি তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। আর সুসংবাদ দাও সবরকারীদের!”
– সুরা বাকারা : ১৫৫
*”হে ঈমানদারগণ, তোমরা সবর ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর।নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন।
– সুরা বাকারা : ১৫৩
*”হে রব!আমি তো কখনো আপনাকে ডেকে ব্যর্থ হইনি!”
– সুরা মারইয়াম : ৪
* “হে আমার বান্দারা! যারা নিজেদের উপর জুলুম করেছ! তোমরা রব্বুল আলামীনের রহমত থেকে নিরাশ হয়োনা”।
সুরা যুমার-৫৩
* “তারা ইস্তিগফাররত থাকলে রব্বুল আলামীন তাদেরকে শাস্তি দিবেননা”।
সুরা আনফাল – ৩৩
* সবরকারীদেরকে অগণিত প্রতিদান দেওয়া হবে”।
সুরা যুমার -১০
রব্বুল আলামীন আমাদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন।
আব্দুল্লাহ ইদরীস: লেখক, সংবাদকর্মী
Some text
ক্যাটাগরি: মতামত
[sharethis-inline-buttons]