মানুষমাত্রই মরণশীল। প্রাণী মানেই মৃত্যুশীল।জন্মশীল মানেই মরণশীল। জন্মগ্রহণ করলেই মৃত্যুবরণ করতে হবে। প্রতিটি প্রাণীর মৃত্যু নির্ধারিত। অবধারিত।
মানুষের জীবনের প্রতিটি সময় অতি মূল্যবান।মানুষ সময়কে কাজে লাগালে সময় তাকে জাতির নিকট সম্মানের পাত্র বানিয়ে দেয়।মুমিন জান্নাতে প্রবেশ করে দুনিয়ায় অযথা কাজে নষ্ট করা সময়ের জন্য অনেক আফসোস করবে।
অযথা কাজে সময় নষ্ট করা ইসলামের সৌন্দর্য নয়। মুমিনের সবকিছুর হিসাব আখিরাতে পুরোপুরি দিতে হবে।জীবন থেকে সময় চলে গেলে খুশি বা উৎসব পালন করার কিছু নেই।বরং হিসাব মিলানো উচিত কিভাবে কেটেছে অতীত?
আরবের কবি চমৎকার বলছেন,
– يَسُرُّ المرءَ ما ذَهَبَ الليّالي …وكَانَ ذَهَابُهنَّ لَهُ ذَهابَا
অর্থঃ রাতসমূহের অতিক্রম মানুষকে আনন্দিত করে,উল্লাসিত করে,অথচ রাতসমূহের চলে যাওয়া মানে চলে যাওয়া(আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই, বরং ব্যথিত হওয়া উচিত)।
ফেসবুক জগতে পা রাখার পর থেকেই একটি বিষয় খুব নজরে পড়ছে যে,বন্ধু-বান্ধব জন্মদিন উপলক্ষে একে অপরকে নির্দ্ধিধায় জন্মদিনে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছে। অথচ এটা কখনো কাম্য ছিলনা।
কারণ জন্মদিন পালন ও জন্মদিন উপলক্ষে একে অপরকে শুভেচ্ছা, শুভকামনা ও অভিনন্দন জানানো অবৈধ ও নাজায়েজ।
কেননা এটি বিজাতীয় সংস্কৃতি। বিজাতীদের অনুসরণ করা বৈধ নয়। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে দ্বীনের সঠিক বুঝ দান করুন। আমীন।
———
দেখুন
১.
وَلَا تَرْكَنُوا إِلَى الَّذِينَ ظَلَمُوا فَتَمَسَّكُمُ النَّارُ
অর্থাৎ তোমরা জালিমদের প্রতি ঝুকে যেওনা।(ঝুকলে) জাহান্নামের আগুন তোমাদেরকে স্পর্শ করবে।
সূরা হুদ- আয়াত নং ১১৩
উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় হযরত আবুল আলিয়া রহিমাহুল্লাহ বলেন,
.
وقال أبو العالية : لا ترضوا أعمالهم .
অর্থাৎ তোমরা তাদের কাজকর্মে সম্মতি প্রকাশ করোনা। তাফসিরে ইবনে কাসীর ৪.২০৩. উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম কুরতুবী রহিমাহুল্লাহ বলেন,
تحرقكم بمخالطتهم ومصاحبتهم وممالاتهم على إعراضهم وموافقتهم في أمورهم.
তাদের সাথে মেলা- মেশা, উঠা বসা, ধর্মের প্রতি বিমুখী হওয়ার পরেও তাদের সাথে আন্তরিকতা ও তাদের কাজকর্মের অনুসরণ তোমাদেরকে জাহান্নামের আগুন জালিয়ে দিবে।
আহকামুল কুরআন (কুরতুবী) ৫.১০৮
২.
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ ” .
ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন কাওমের (সম্প্রদায়ের) অনুসরণ-অনুকরন করবে, সে তাদের দলভুক্ত হবে।
সুনানে আবু দাউদ হাদিস নং ৩৯৮৯
জামে তিরমিজি হাদিস নং ২৬৯৫
উক্ত হাদিসের ব্যাখ্যায় হযরত তিবী রহিমাহুল্লাহ বলেন,
هذا عام في الخلق والخلق والشعار
অর্থাৎ হাদিসটি স্বভাব- রীতি, পোশাক ও নিদর্শনের ক্ষেত্রে ব্যাপক। অর্থাৎ যে কেউ কথা ও কাজে,পোশাকে বা যে-কোন ভাবে বিজাতীদের অনুসরণ করে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
মিরকাতুল মাফাতীহ – ৮.২২২
৩.
من رضي عمل قوم كان شريكا في عمله
অর্থাৎ যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের কাজে সন্তুষ্ট, সে তাদের কাজে অংশীদার।
কানজুল উম্মাল – হাদিস নং ৩৪৭৩
৪.
مالك بن دينار قال : أوحى الله إلى نبي من الأنبياء أن قل لقومك : لا تدخلوا مداخل أعدائي ، ولا تطعموا مطاعم أعدائي ، ولا تلبسوا ملابس أعدائي ، ولا تركبوا مراكب أعدائي ، فتكونوا أعدائي كما هم أعدائي
হযরত মালেক বিন দীনার রহিমাহুল্লাহ বলেন, রব্বুল আলামীন তাঁর কোন একজন নবীর নিকট ওহি পাঠালেন যে,আপনি নিজ কওমের লোকদেরকে বলুন, তোমরা আমার শত্রুদের প্রবেশপথ দিয়ে প্রবেশ করোনা,তাদের খাবার খেওনা,তাদের পোশাক পরিধান করোনা,তাদের বাহন ব্যবহার করোনা। এসব করলে তোমরা তাদের মত আমার শত্রু হয়ে যাবে। আয যাওয়াযের আন ইকতিরাফিল কাবায়ের – ২৫
৬.মুহাক্কাক ওয়া মুদাল্লাল জাদীদ মাসাইল -১.৯৪-
আব্দুল্লাহ ইদরীস
সহকারী শিক্ষা সচিব,
জামিয়া দারুল উলুম মুহিউস সুন্নাহ, আখাউড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
Some text
ক্যাটাগরি: মতামত
[sharethis-inline-buttons]