মৌলভীবাজারের বড়লেখায় প্রায় আড়াই বছর পর চাঞ্চল্যকর প্রবাসীর স্ত্রী ও দুই সন্তান হত্যা মামলার এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি)। গত ২৬ জুলাই রাতে বড়লেখা উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের আজিমগঞ্জ বাজার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গত ২৭ জুলাই বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য সুন্দর আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
সিআইডি ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর রাতে বড়লেখা উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের ভোলারকান্দি গ্রাম থেকে কাতারপ্রবাসী আকামত আলীর স্ত্রী মাজেদা বেগম (৩৬), মেয়ে লাবণী বেগম (৭) ও ছেলে ফারুক আহমদের (৪) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধু মাজেদার চাচাতো ভাই ইমরান আলী ২১ ডিসেম্বর রাতে মাজেদা বেগমের চাচা শ্বশুর শরাফত আলীকে প্রধান আসামি করে ৯ জনের নাম উল্লেখ এবং আরও ৭-৮ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বড়লেখা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন (নম্বর-৮) করেন। মামলার পর ওই বাড়ির তিন নারীকে আটক করে পুলিশ।কিন্তু তাদের থেকে গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। মা-সন্তানসহ তিনজনের মৃত্যুকে ঘিরে নানা রহস্যের সৃষ্টি হয়। তখন পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা ছিল এটি পরিকল্পিত একটি হত্যাকাণ্ড। কিন্তু মৃত্যু রহস্যের কোনো কূল-কিনারা করতে পারেনি থানা পুলিশ।
কয়েক মাস পর মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) স্থানান্তর হয়। পিবিআই’র দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তদন্ত করে প্রায় বছর খানেক পর আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তবে আদালত পর্যালোচনা পূর্বক প্রতিবেদন গ্রহণ না করে স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন। প্রায় ৭ মাস আগে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডির মৌলভীবাজার কার্যালয়ের পুলিশ পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র দাস। এরপর প্রযুক্তির সহায়তা ও ছদ্মবেশ ধারণ করে মামলার এজাহার নামীয় ৪ নম্বর আসামি সুন্দর আলীকে গ্রেফতার করেন। সুন্দর আলী নিহত মাজেদা বেগমের আপন দেবর।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির মৌলভীবাজার কার্যালয়ের পুলিশ পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র দাস মুঠোফোনে বলেন, ‘এটি একটি চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডার মামলা। মামলার মূল আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে আত্মগোপনে থাকায় বিচার পাওয়ার বিষয়টি অন্ধকারে ছিল। মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে প্রযুক্তির সহায়তা ও ছদ্মবেশ ধারণ করে ঘটনায় জড়িত একজন আসামিকে গ্রেফতার করেছি। আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া মামলার মূল রহস্য উদঘাটন ও পলাতক অন্য আসামিদের গ্রেফতার এবং ঘটনার মোডাস অপারেন্ডি জানার জন্য আসামিকে রিমান্ডে এনে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।’
এস এম আবু বকর: মৌলভীবাজার থেকে
Some text
ক্যাটাগরি: মতামত
[sharethis-inline-buttons]