রবিবার বিকাল ৫:৪৮, ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ১৭ই নভেম্বর, ২০২৪ ইং

অরুয়াইল-পরমানন্দপুর ও সূর্যকা‌ন্দি-কালিকচ্ছ ভ্রমণ

৯৩৫ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি
সরাইলের রসুলপুর-চুন্টা ও অরুয়াইলের মাঝখানের ব্রিজ

যাযাব‌রের মত জীব‌নে ছু‌টে চ‌লে‌ছি। আজ এখা‌নে তো কাল ঐখা‌নে। জীব‌নের কো‌নো তথাক‌থিত গ‌তি হয়‌নি। তবুও হতাশ নয়। কারণ এর দ্বারা চিন্তা-‌চেতনা, জ্ঞানকে বিক‌শিত কর‌তে পার‌ছি। নি‌জের চিন্তা-‌চেতনা দিন কী দিন নি‌জের কা‌ছে স্বচ্ছ হ‌চ্ছে। যা‌তে নি‌জে‌কে আরও গভীর দৃ‌ষ্টি‌কোণ থে‌কে যাচাই বাছাই কর‌তে পার‌ছি বা করার সু‌যোগ তৈরী। প‌রিবার, সমাজ, রা‌ষ্ট্রের প‌রিবর্ত‌নের গ‌তি‌বি‌ধিগু‌লো পর্যবেক্ষণ কর‌তে পার‌ছি। খুব কাছ থে‌কে মানু‌ষের স‌ঙ্গে মি‌শে তা‌দের চিন্তা-‌চেতনার স‌ঙ্গে প‌রি‌চিত হওয়া। তার পাশাপা‌শি সব‌চে‌য়ে লাভজনক যে দিক‌টি সে‌টি হ‌লো পারস্প‌রিক মত বি‌নিম‌য়ের দ্বারা এ‌কে অ‌ন্যের স‌ঙ্গে সম্প‌র্কের এক‌টি সূত্র স্থাপন করার।

জীব‌নে কত বিচত্র ঘটনাই না ঘ‌টে! নবীনগর আসার পর হঠাৎ ব্রাহ্মণবাড়িয়া ক্রি‌কেট একা‌ডে‌মির শামীম ভাই যোগা‌যোগ ক‌রে। তি‌নি জানান বৃহস্প‌তিবার এক‌টি প্রোগ্রাম আ‌ছে, উপ‌স্থিত হ‌তে পারব কিনা? আ‌মি উনা‌কে নি‌শ্চিত করলাম আ‌মি উপ‌স্থিত হব। তার পাশাপা‌শি দেশদর্শন ডটক‌মের সম্পাদক জা‌কির মাহ‌দিন জানায় আ‌মি ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়া আস‌ছি। যথাসম‌য়ে প্রোগ্রা‌মে উপ‌স্থিত হয় এবং প্রোগ্রাম শেষ ক‌রে জা‌কির মাহ‌দি‌নের স‌ঙ্গে কথা হয়। প‌রে দুপু‌রে উনার বাসায় উপ‌স্থিত হয়। উনার স‌ঙ্গে কথা ব‌লার মা‌ঝেই আ‌রেক‌টি ভ্রম‌ণের কথা হয়। উনার বো‌নের শ্বশুরবা‌ড়ি ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়ার উত্তর প‌শ্চি‌মে হাওড় অঞ্চ‌লে এবা‌রের গন্তব্যস্থল।

পরমানন্দপুর তিতাস-মেঘনা যৌথ স্রোত

চিন্তা চেতনায় সু‌ফিবা‌দের মত দেখা গে‌লেও চলা‌ফেরায় র‌য়ে‌ছে ভোগবাদী ও সাম্রাজ্যবাদীতার প্রভাব। আজ তারা অর্থ, প্রভাব, প্র‌তিপ‌ত্তি ব্যতীত অন্য কো‌নো কিছু ভাব‌তে পা‌রে না। শি‌ক্ষিত লো‌কের অভাব নেই ত‌বে তারা শেকড় ছে‌ড়ে শহরমুখী। তারা তা‌দের নি‌জের স্বার্থবাদী চিন্তায় মশগুল গ্রা‌মের শিক্ষা, চি‌কিৎসা, যোগা‌যোগ, কৃ‌ষির উন্নয়‌নের দি‌কে তা‌দের নেই কো‌নো ভ্রূ‌ক্ষেপ।

‌যে কথা সে কাজ! আমরা বি‌কে‌লে যাত্রা ক‌রি সরাই‌লের অরুয়াই‌লের উদ্দে‌শ্যে। সিএন‌জি যো‌গে আমা‌দের যাত্রা শুরু হয়। সেখান থে‌কে নৌকা যো‌গে পরমানন্দপুর গ্রা‌মে যাই। গ্রাম‌টির ‌যোগা‌যোগ ব্যবস্থা তেমন উন্নত নয়। বর্ষা‌তে যাতায়‌তের একমাত্র বাহন নৌকা। কিন্তু বর্ষা ছাড়া যাতায়ত‌রের তেমন কো‌নো মাধম্য নেই। গ্রামে পৌঁ‌ছে আমরা গ্রাম‌টি দেখ‌তে বের হয়। রাস্তার অবস্থা দে‌খে আমরা আশ্চর্য হয়। গ্রা‌মের ভেত‌রের রাস্তা দি‌য়ে একজন হাঁট‌তেই অ‌নেক কষ্ট হয়। অথচ এ এলা‌কা‌তেই না‌কি সা‌বেক মন্ত্রী সাত্তার সা‌হে‌বের বা‌ড়ি। যি‌নি বর্তমা‌নে একজন সংসদ সদস্যও। অথচ তার দূরদর্শীতার অভা‌বে যোগা‌যোগ ব্যবস্থাসহ অন্য কো‌নো সেক্ট‌রে তেমন উন্নয়ন প‌রিল‌ক্ষিত হয় না।

অত্র এলাকায় বর্ষার ভরা মৌসু‌মের তিতা‌সের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য যা হৃদ‌য়ে সৌন্দ‌র্যের শিহরণ জা‌গি‌য়ে তো‌লে। যতদূর পর্যন্ত চোখ যায় শুধু পা‌নি আর পা‌নি। মাঝে মা‌ঝে কিছু গ্রাম যা দেখ‌লে ম‌নে হয় এ যেন পা‌নির বু‌কে জেঁ‌গে আ‌ছে সবুজ কো‌নো চর। সৃ‌ষ্টির অপার সৌন্দ‌র্যের এক লীলাভূ‌মি। বাংলার সংস্কৃ‌তি মি‌শে আ‌ছে মা‌টির স‌ঙ্গে। অথচ আজ বিজ্ঞান-প্রযু‌ক্তি এবং নগরায়‌নের ছোঁয়ায় আজ গ্রাম তার নিজস্বতা হারা‌তে ব‌সে‌ছে। এ‌কে টি‌কি‌য়ে রাখ‌তে হ‌লে গ্রামমুখী অর্থন‌ী‌তির পাশাপা‌শি তা‌দের চিন্তা-‌চেতনা ও জ্ঞান বিকা‌শের নতুন ধারা চর্চা করা অপ‌রিহার্য হ‌য়ে প‌ড়ে‌ছে।

কালিকচ্ছ পাঠশালা উচ্চবিদ্যালয়

প্রযু‌ক্তির স্পর্শ এখন সর্বত্রই দেখা যায়। এখা‌নেও ইন্টার‌নেট সেবা পৌঁ‌ছৈ গি‌য়ে‌ছে ঠিকই। কিন্তু এর ছোঁয়ায় ভার্চুয়াল জগ‌তে বিচরণ কর‌লেও তা‌দের বস্তবতাব‌তে জীবনমা‌নে নেই কো‌নো উন্নত ধারা। চিন্তা চেতনায় সু‌ফিবা‌দের মত দেখা গে‌লেও চলা‌ফেরায় র‌য়ে‌ছে ভোগবাদী ও সাম্রাজ্যবাদীতার প্রভাব। আজ তারা অর্থ, প্রভাব, প্র‌তিপ‌ত্তি ব্যতীত অন্য কো‌নো কিছু ভাব‌তে পা‌রে না। শি‌ক্ষিত লো‌কের অভাব নেই ত‌বে তারা শেকড় ছে‌ড়ে শহরমুখী। তারা তা‌দের নি‌জের স্বার্থবাদী চিন্তায় মশগুল গ্রা‌মের শিক্ষা, চি‌কিৎসা, যোগা‌যোগ, কৃ‌ষির উন্নয়‌নের দি‌কে তা‌দের নেই কো‌নো ভ্রূ‌ক্ষেপ।

পরমানন্দপুর‌ে থাক‌তেই নতুন সিদ্ধান্ত নেয় সরাই‌লের সূর্যকা‌ন্দি যাবার। জা‌কির মাহ‌দি‌নের বড় বো‌নোর বা‌ড়ি সেখা‌নে। ত‌বে সেখা‌নে বে‌শিক্ষণ অবস্থান করা সম্ভব নই। সদর ফির‌তে হ‌বে তাড়াতা‌ড়ি। দু’জ‌নের হা‌তেই কাজ প‌ড়ে আ‌ছে। দুপু‌রের খাবার শেষ ক‌রে সূর্যকা‌ন্দির উ‌দ্দে‌শে রওয়ানা দেয়। সূর্যকা‌ন্দি ঘণ্টা দু’‌য়েক অবস্থান ক‌রি। প্র‌তি‌টি ভ্রম‌ণের পেছ‌নেই এ‌কেক‌টি উ‌দ্দেশ্য থা‌কে। নি‌জের জ্ঞান-‌চিন্তার প‌রি‌ধি বিস্তৃত করা। কিছু নতুন মানু‌ষের স‌ঙ্গে প‌রিচিত হওয়া ও তা‌দের চিন্তা-‌চেতনার স‌ঙ্গে সম্পর্ক গ‌ড়ে তোলা। তা‌দের নি‌জের চিন্তা-‌চেতনার স‌ঙ্গে প‌রি‌চিত করা। বেলা শে‌ষে পা‌খিরা যেমন নী‌ড়ে ফে‌রে এবার আমা‌দেরও নিজ নিজ গন্তব্য স্থ‌লে ফেরার পালা।

লেখকের ব্লগ

শরীফ উদ্দীন রনি : বার্তা সম্পাদক, দেশ দর্শন

Some text

ক্যাটাগরি: প্রকৃতি ও পরিবেশ, ভ্রমণ কাহিনি, সাহিত্য

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি