রবিবার বিকাল ৩:৪১, ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ১৭ই নভেম্বর, ২০২৪ ইং

নস্টালজিয়া: সে যাত্রায় বেঁচে গেছি!

৫৮৩ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

সময়টা ২০১৫ সালে বিকেল শেষে সন্ধা নামার পথে। বুড়িতিস্তা ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের একটা অনুষ্ঠানের দিন সর্দার পাড়া থেকে বাইকে করে আসতেছিলাম শফিক ভাই, বন্ধু হুমায়ুন কবীর ও আমি গোলনা হাই স্কুলের দিকে। গাড়ী চালাচ্ছিল হুমায়ুন কবীর। গাড়ীটা ছিল জাহাঙ্গীর ভাইর আগের ছোট্ট গাড়ীটা, শুনেছি সেটা এখনো আছে। ঠিক গোলনা বাজার হাসপাতালের রাস্তার কাছের বাড়ীটার পাশে একটা ট্রাকের সামনে এমনভাবে পরে গেলাম বাচাঁর কোন উপায় ছিল না, ট্রাকের ড্রাইভার খুব পাকা ছিল এমনভাবে ব্রেক ধরছিল ট্রাক বেশি সামনে আসতে পারেনি। রাস্তায় কিছু অংশ সামান্য গর্তের মতো হয়েছিল। যার আওয়াজ অনেক দূর পর্যন্ত পৌঁছিয়েছে বলে মনে হয়। আমার কানে শুধু একটা বিকট আওয়াজ ছাড়া আমি কিছু শুনতে পাইনি। পরে দেখি আমরা রাস্তায়।

শফিক ভাই বাইকের পিছনে বসেছিল আমি মাঝে বসেছিলাম। শফিক ভাই ছিটকে একেবারে ট্রাকের চাকার কাছে চলে গেছিল। আমি রাস্তার মাঝে ছিটকে গেছি, হুমায়ুন বাইকের কাছে পরে গেছে। তিনজন তিনদিকে ছিটকে পরে গেছিলাম। এমনটা হয়েছিল একজন পথচারীকে রক্ষা করতে গিয়ে। হুমায়ুন বাইকের হর্ণ বাজাচ্ছিল কিন্তু সামনে যিনি ছিলেন তিনি সড়ছেন না। সামনের লোকটা সাইড দিলে আমরা সুন্দরমতো চলে যেতে পারতাম। শুনেছি সামনের লোকটা একটু বধির ছিল তাই হর্ণ শুনতে পারেনি। যা হবার তা হয়ে গেল। ঐ যাত্রায় বেচেঁ গেছিলাম।

শফিক ভাই হাতে আঘাত পেল রক্ত ঝড়ছিল আমি পায়ে আঘাত পেলাম হাতের কনুইতে ছ্যাচা গেল হুমায়ুনের প্যান্ট হাটুর উপরে ছিড়ে গেল। দুর্ঘটনা ঘটার পরপর সুজন ভাই বাইকে আসছিল পিছন থেকে আমরা একসাথে সর্দার পাড়া থেকে রওনা হয়েছিলাম সুজন ভাই একটু ধীরে বাইক চালাচ্ছিল আমার মনে হয় তিনি ধীরেই বাইক চালান। হুমায়ুন একটু স্পীডে চালাচ্ছিল বটে। যা ঘটার তাতো ঘটেই গেল। ট্রাকের ড্রাইভার তো রাগে ফায়ার কিচ্ছু করার ছিল না, তিনি পরিস্থিতি বুঝে চলে গেলেন। শফিক ভাই সুজন ভাইর বাইকে করে আর্শি ফার্মেসিতে চিকিৎসা নিতে গেলেন। রিকশায় আমি আর হুমায়ুনও গেলাম ট্রিটমেন্ট নিতে। সবাই বলাবলি করছে তোরা আজ বেচেঁ গেলি। আশরাফুলের দোকানের ওখানে গেলাম। আশরাফুল ফ্রিজ থেকে কোক বেড় করে দিল খেয়ে একটু ধীরে ধীরে হাটাচলা করে যখন বুঝলাম তেমন কিছু হয়নি,হালকা ব্যাথা ছাড়া কিছু অনুভব করছি না। শফিক ভাইর খোজ নিলাম জানতে পারলাম তিনিও তেমন আহত হননি। যাক হাফ ছেড়ে বাচঁলাম।

পরে জানতে পারলাম শফিক ভাই অনেক ভয় পেয়েছিল সেদিন। তারপর থেকে শফিক ভাই আমাকে দেখলে কাছে আসেনা। দূরে দূরে যায়। যদিও পরে ভুল ভেঙ্গেছে। হঠাৎ একদিন বাজারে হুমায়ুন ও আমার সাথে শফিক ভাইর দেখা, শফিক ভাইকে বুকে নিয়ে জড়িয়ে ধরলাম ঐ স্মৃতিচারণ করলাম। আমি আবারও বললাম চলেন কোথাও বাইকে ঘুরে আসি তিনি সেদিন ভালোবেসে বলেছিলেন, আমরা সেদিনই মরে যেতাম। আর তোদের সাথে বাইকে কোথাও যাব না।

শফিক ভাইর সাথে দেখা হলেই আমার ঐ কথা মনে পরে। শফিক ভাই বলে, আমরা সেদিন বেচেঁ গেছি! আমরা ঐ যাত্রায় বেচেঁ গেছি ! শফিক ভাই আর আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম। একদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের সামনে বসেও ঐ স্মৃতিচারণ করলাম আর বললাম, আমরা মরে গিয়েও বেচেঁ আছি। ঐ যাত্রায় বেচেঁ গেছি !!
###

Some text

ক্যাটাগরি: চিন্তা

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি