শুভ জন্মদিন (কবিতা)
| ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ৪:১৬ অপরাহ্ণ
কে আমারে জন্মদিলো,কোন কারণে ভাই?
একটু তোমার সময় হবে? বলে যেতে চাই।
মানুষ রূপে জন্ম দিলেন খোদা মেহেরবান,
জঠর থেকে মা বাপ মিলে করেছেন এহসান।
কে করিল এত সুন্দর তনু মন প্রাণ গঠন?
কে করিল দুনিয়ার সব বোর্ণীল আয়োজন?
কে রচিল চাঁদ তারা আমার খেলার সাথী?
সাঁঝ সকালে দিবাকরের সাথে কত মাতামাতি!
মায়ের পেটে ঘুমিয়ে ছিলাম দশ মাস দশ দিন;
জন্ম নিয়ে দোলনায় দোলে কাটলো কিছু দিন।
মুখে মধু,মুখ ভাত করে কাটলো শিশুকাল,
কখন যেন যৌবন আসলো জীবন টালমাটাল।
যা পেয়েছি তা খেয়েছি হালাল হারাম নাই,
এমনি করে বলো কয়দিন টিকে থাকা যায়?
বাহু বলে,কলম বলে,বহু ছলে কেটে যাচ্ছে দিন;
যেজন আমায় সৃজন করলো কি হবে তাঁর ঋণ?
সোনার দেহে ঘুন ধরেছে শব্দ শুনা যায়,
বার্ধক্য ডাকছে আমায়,”আয়রে কাছে আয়”।
কথা ছিলো ধরণীতে রবের করব বন্দেগি,
হেলায় খেলায় কাটিয়ে দিলাম হিরে জিন্দেগি।
যদি কাটে খোদার প্রেমে তিন’শ পয়শট্টিটি দিন,
তবেই বন্ধু বলো আমায়,”শুভ জন্ম দিন”।
উৎসর্গঃ আমার জন্মদিনে যাঁরা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কিংবা জানাতে পারেননি সকল শুভার্থীদের প্রতি।
রচনাকাল ও স্থানঃ
৮সেপ্টেম্বর ২০১৫ ইংরেজি।
পৃথিবীর ভৌগোলিক মানচিত্রের ৩৩ ডিগ্রি (উওর) ও ৩৫ ডিগ্রি (পূর্ব) এর কৌণিক বিন্দুস্থলের ১হাজার মিটার বৃত্তের মধ্যে। ঐতিহাসিক ভূমধ্যসাগরে অবকাশকালীন সময়ে রচিত।
“আজব শহর ঢাকা”
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯
রাস্তার মোড়ে মোড়ে শপিংমল ব্যস্ততম পথচারীদের হাট,
শব্দ দূষণে অসুস্থ নগরী গুলিস্তান থেকে সদর ঘাট।
পা শিরশির করা পড়মান অট্রালিকায় রুগ্ন পুরাতন ঢাকা
মাঝে মধ্যে স্বস্তি দেয় পুষ্প উদ্যান, উড়াল সেতুর পাখা।
চারশত বছরের মহাকাব্যে শুনি প্রাচীন নগরীর ইতিহাস
ক্যাসিনো,তারকা হোটেল নাগরিক জীবনে নিদারুণ উপহাস।
ট্যানারি আর বুড়িগঙ্গার কালো জলের বিদঘুটে গন্ধ
কেউ কারো নয় সচেতন নাগরিক সমাজ বড়ই অন্ধ।
রাজপথ থেকে ফুটপাত সর্বত্র হাইজ্যাকার টাউট বাটপারদের আনাগোনা
লাল ফিতার দৌরাত্ম্য আর আদম বেপারীর স্বপ্ন বুনা।
দিন শেষে ভবঘুরে মানুষ ফুটপাত জুড়ে পাতে সংসার
অধুনাদের দেখা মেলে রমনা,হাতির ঝিল,ধানমন্ডি লেক পাড়।
বায়োগ্রাফী হাতে গ্রাম্য মেধাবীরা আসে চাকুরির খোঁজে
জুতা ছিড়ে প্যান্ট ফাটে ময়লা জমে কলারের ভাজে।
এবড়ো থেবড়ো রাস্তায় রং চটা পাবলিক পরিবহণ-সর্বাধুনিক ফ্যাশনের গাড়ী
রেল পথের দুধারে বস্তি,অন্যত্র চোঁখ ধাঁধানো প্রাসাদ বাড়ী।
মিটিমিটি জ্বলে গ্যাসের চুলা,ওয়াসার পানিতে গন্ধ
বাপ দাদার ভিটা বেদখল হয় তবু মুখ বন্ধ।
কখনো এটি পৃথিবীর এক নম্বর বসবাস অনুপযোগী শহর,
আবার বছর জুড়ে ঢোল-সানাই উৎসবে মাতোয়ারা বর।
কেউ বলে এটি মসজিদের শহর, জাদুঘরের নগরী
রঙিন পোষ্টার-ব্যানার, সাইন বোর্ডে সাজোয়া অপ্সরী।
বাড়ীওয়ালাদের হাকডাক,রাতে মশা দিনে মাছি
নিঃশব্দ ক্রন্দন ঢাকার ব্যাচেলর জীবন সত্যিই মিছামিছি।
তথাপিও ইতিহাস ও ঐতিহ্য পিছু ডাকে জাহাঙ্গীরনগর
বেনারশী আর মসলিনের মোহে ছুটে আসতো কত সওদাগর!
আহসান মঞ্জিল, লাল বাগ কিল্লা, ঢাকেশ্বরী মন্দির
আর্মেনীয়ান গীর্জা, তারা মসজিদ,সমাধি পরী বিবির।
বাহান্ন উনসত্তর একাত্তর বাঙালীর চূড়ান্ত অর্জন স্বাধীনতা
রক্তের মহাসমুদ্রে এখানেই প্রথম উড়েছিল লাল সবুজের পতাকা।
প্রতিদিন হাজারো মানুষ ছুটে আসে ঘুরাতে ভাগ্যের চাকা।
এখানে জীবন অন্যরকম; ঢাকার তুলনা শুধুই ঢাকা।
‘কিংকরী’
| ১৫ নভেম্বর ২০১৯ | ৮:৫৫ অপরাহ্ণ
চির জান্নাতি হতে চাওয়া লোভাতুর নারীর
ভুলের মাশুল গোনে হতাশ দুনিয়াবী পুরুষ;
পাপাত্মা নারীর ভুলের বেড়াজাল থেকে
নারীর পদতলে জান্নাত খুঁজে মহা পুরুষ।
বেহেশতী গন্ধম যা কীনা নারীদেহের সুমিষ্ট গন্ধ
ভালবাসা তারেই কয় যখন নর, নারীতে অন্ধ।
প্রতিটি নারীর যদিনা অংশ হত স্বামীর বামপাঁজর
প্রতিটি স্ত্রী হত নির্ঘাত ঘর ছাড়া এক একটি বাঁদর।
নারীর অবদান ছাড়া গতিহীন পৌরুষের জীবন
স্নেহময়ী নারীর মমতা ছাড়া দৌঁড়ে আসে মরন।
সময়,বিত্ত-বৈভব,তনু সুখেও তৃপ্ত নয় কিংকরী
পুরোপুরি নারীতে সমর্পিত পৌরুষ খুঁজে নারী।
রচনাকাল:
১৫ নভেম্বর ২০১৯ইং
প্রলয়ংকরী বুলবুল (কবিতা)
| ১৩ নভেম্বর ২০১৯ | ১:০৮ অপরাহ্ণ
ছুটি বাতিল! বঙ্গোপসাগর থেকে করুণ সুরে প্রলয়ের গান গাহিছে বুলবুল
যেতে দাও হে প্রিয়া, তুলে রাখ যতনে তোমার আদুরে গড়া প্রনয়ী ফুল।
১০ নম্বর মহা বিপদ সংকেত শুনে অধিকাংশ
মানুষ যখন ফ্যামিলির কাছে ছুটে
কী এক মহা সুখে,আমি তখন চলছি কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে প্রিয়জনের ভালবাসা টুটে।
আমাদের একমাত্র তনয়া প্রিন্সেস সামীহা নূর জারা’র
হাসি মাখা,মায়া ভরা মুখ
অকারণে বাবা,আব্বা ডাক,মিস করবো তোমার সান্নিধ্য,উষ্ণতা ও সুখ।
শিশুকালে মা,কৈশোরে কিশোরী বান্ধবী,যৌবনে ভাবনার সবটুকু তুমি
পেশাগত কারণে,সময়ের প্রয়োজনে সবার চেয়ে দামী আজ আমার জন্মভূমি।
“মন্দবাগ ট্র্যাজেডি”
১২ নভেম্বর ২০১৯
ফুল তুমি রাতে ফুটিয়া প্রভাতে গেলে ঝরে
তোমার নিরবতা দেখে মন যে কেমন করে।
পঁচা কানুনের বিরুদ্ধে তোমার নিরব প্রতিবাদ
মিটিয়ে দিলো আমার অপারগতার যত সাধ।
বড়ই অভিমানী তুমি যান্ত্রিক জীবনের পরে
কোন কাননে ফুটেছিলে,জন্মেছিলে কোন ঘরে?
আজ তুমি চোঁখের কোণে এক ফোটা লোনা জল
ঘুমিয়ে থাকো পরপারে যেথায় জান্নাত সুশীতল।
“কুল্লু নাফসিন যাইক্বাতুল মাউত”
প্রত্যেক প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করবে।
সুরা আলে ইমরান,[ আয়াত ১৮৫ ]
“উত্তরাধিকার”
তুই যে আমার সারাদিনের গল্প গাঁথা
তুই যে আমার ইচ্ছে ঘুড়ি,নাটাই-সুতা।
তুই যে আমার পরম চাওয়ার ভালোবাসা,
তুই যে মোদের দুটো মনের একটি আশা।
তোর কারণে নতুন করে স্বপ্ন দেখা
তোর কারণে নতুন করে বাঁচতে শেখা।
তোর জন্যে কত আপন জনে মসজিদে শিন্নি মানে
দরগাহে মানে সোনার চাঁদ,
নিশীথ রাতে দুহাত তুলে করি ফরিয়াদ।
তোর জন্যে কত তাবিজ কবজ পানি পড়া,
হরহামেশা যাওয়া আসা গাইনোকোলজিস্ট পাড়া।
তোকে ভেবে থমকে দাঁড়াই সামনে গিয়ে খেলাঘরে
কি চাই তব? কিনে দেবো দু’হাত ভরে।
অামার যত মহৎ আশা;অপূর্ণতা-পূর্ণ করার ভার
তুই যে হবি আমার যোগ্য উত্তরাধিকার।
বিশ্বটাকে করবে জয় ভালোবাসা দিয়ে
দুনিয়াবি সকল চাওয়া লুটাবে তোর পায়ে।
মনে ধ্যানে রাখিস ওরে অাখেরাতের ভয়
তোর সকল কাজে সহায় হবেন রব তা’য়ালা নিশ্চয়।
“খোলা আকাশ”
| ০৪ অক্টোবর ২০১৯ | ১১:৪১ অপরাহ্ণ
তুমি আকাশ ছুঁতে পারনা
তাই বলে তোমার সুন্দর মন
আকাশচুম্বী নয় তা হবেনা।
এতটুকুন বয়সেই প্রতিঘন্টায় বিমান উড়ে যেতে দেখে অভ্যস্ত তুমি;
পাখীর উড়ে যাওয়া তোমার নিকট ভিন্ন কিছু নয়,
অথচ শৈশবে এমন মুহুর্ত খুব কমই পেয়েছি আমি।
নগর জীবনের শব্দ দূষণ, আলোর ঝলকানি ;
কর্মমুখর মানুষের ব্যস্ততম সকাল নিজ ঘরের বারান্দা থেকেই দেখে চলেছ সতত,
দেখ প্রিয় চ্যানেল,কাছে রাখ সেলফোন নামক প্রিয় বস্তু দূরালাপনি।
বাবার সান্নিধ্য পেলে আহলাদে হও আটখানা
যদি কভু আড়াল হই কষ্ট পাও,প্রাণেতে সহেনা
ষোলকলা আদর চাও,তাই লুটে নাও মায়ের আটখানা।
“করোনা মুক্ত বিশ্ব চাই ”
করোনা এসেছে জালিমের শাসন থেকে
করোনা এসেছে অত্যাচারীর খড়গ থেকে।
করোনা এসেছে বঞ্চিতের আহাজারি থেকে
করোনা এসেছে রঙিন সরাবের গ্লাস থেকে।
করোনা এসেছে শিরক,বিদাতের কারণে
করোনা এসেছে তাওহীদে না থাকার কারণে।
করোনা এসেছে খোদার আইন না মানার কারণে
করোনা এসেছে দারিদ্রকে ভয় করার কারণে।
শুধায় তারে শাপলা ফোটা হিজল তমাল তলে
সাত সমুদ্র তের নদী পাড়ে বাংলায় কেন এলে?
সর্দি জ্বর শ্বাসকষ্ট মৃত্যু যন্ত্রণার উপসর্গ গলে
রাগের স্বরে গড়গড় শব্দে চোখ রাঙিয়ে বলে-
এসেছি করোনা ক্যাসিনো পতিতা পাড়ার জন্যে
এসেছি করোনা গুম,অবিচার,নির্বিচারের জন্যে।
এসেছি করোনা ধনী গরীবের ব্যবধানের জন্যে
এসেছি করোনা ধর্মহীন জাতির শায়েস্তার জন্যে।
করোনা এসেছে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রয়োজনে
করোনা এসেছে সুন্নি শিয়া মতবিভেদের কারণে।
করোনা এসেছে মানবতার পুনর্জন্মের প্রয়োজনে।
করোনা এসেছে সৌহার্দ্য সম্প্রীতি সত্য শেখাতে
করোনা এসেছে সুদ ঘুষ তোষামোদি কমাতে।
করোনা এসেছে দুনিয়ার হালাল হারাম চেনাতে
করোনা এসেছে এক আল্লাহতে ঈমাণ শেখাতে।
হে মানুষ,মানব জাতির সত্যিকারের ইতিহাস খুলে দেখ
যুগেযুগে অপমান অপদস্ত ধ্বংস হয়েছে কত জাতি
কী তার কারণ,দম্ভভরে চলতে গিয়ে একটু মনে রেখো।
পার্থিব লোভ-লালসায় মত্ত সিরিয়ায় কওমে শোয়াইবের বসবাস ছিল।
মাপে কম,মজুদদারির মতো জঘন্য অন্যায় কর্মের বিষবাষ্পে
অগ্নিবৃষ্টি, ভূমিকম্পনে সবাই ধ্বংস হলো।
হুদ (আ.)-এর অহংকারী আদ জাতির উন্নত জ্ঞান-বিজ্ঞান ও সংস্কৃতির কথা শুন নাই?
স্বৈরশাসকের সুরম্য মজবুত অট্টালিকাও
চিরকাল টিকে নাই।
বাহরে লুতের শস্যে ভরা সবুজ শ্যামল
‘সাদুম’ নগরীর কথা শুন নাই?
প্রাচুর্যময় জীবনযাত্রা বাড়িয়ে দেয় বিকৃত যৌনাচার, তাই
(সমকামিতার প্রবণতা,)
বৃষ্টির মতো কঙ্কর নিক্ষিপ্ত ও ভূমিকম্পনে
একদিন পুরো নগরটি সম্পূর্ণ উল্টে যায়।
পৃথিবীর সবচেয়ে সমৃদ্ধশালী উদ্ধত সামুদ জাতি
মানবতা ও নৈতিকতায় নিন্মমুখী ছিল তাদের গতি।
কুফর, শিরক ও পৌত্তলিকতায়
চরিত্রহীন লোকের নেতৃত্বে চলত দেশ
সালেহ (আ)র সত্যের দাওয়াত প্রত্যাখ্যানে
প্রচণ্ড শব্দে ভূমিকম্পে নাস্তানাবুদ অবশেষ।
আল্লাহর শাস্তি সম্পর্কে সতর্কিত বানীতেও
মূর্তিপূজারিদের চৈতন্যোদয় হয়নি।
অবশেষে ডুবে মরে এক ভয়ংকর প্লাবন ও জলোচ্ছ্বাসে
নুহ (আ.)ও তার আহবানে সাড়া দানকারীরা নৌকায় ভাসে।
নিজেকে খোদা দাবি করেছিল ফেরাউন। তার কাছে
ইমানের দাওয়াত নিয়ে গিয়েছিলেন মুসা ও হারুন (আ.)।
উত্তাল নীলনদের পানিতে সদলবলে ডুবে মরল খোদা নামধারী
জাবালে ফেরাউন মানুষের জন্য নিদর্শনস্বরূপ আছে জারী।
সৃষ্টির মাঝে তোমাকে না খোঁজে নিজের মত চলি,বলি, রচি সংবিধান
কোরআন হাদিসের রীতিনীতি ভুলে গাহি ভন্ড ঠাকুরের গুনগান।
গুটিবসন্ত,স্প্যানিশ-এশিয়ান-সোয়াইন ফ্লু,এইডস,ইবোলা
করোনার মত আজাব,গজব থেকে আমাদের রক্ষা করো মাবুদ মাওলা।
রচনাকালঃ
২৭মার্চ ২০২০ইং
কীর্তন খোলা নদীর তীর,
বরিশাল নদী বন্দর।
‘তর্জনী’
| ০৭ মার্চ ২০২০ | ৯:২০ পূর্বাহ্ণ
একটি বজ্র কণ্ঠ, তর্জনীর একটি বজ্র নিনাদ
মিটিয়ে দিলো পলাশীর পরাজয়ের অপবাদ।
টুঙ্গি পাড়ার দামাল ছেলে জাতির জনক বঙ্গবীর
শোষিত বাঙালীর নেতা তিনি চির উন্নত শির।
খোকার হাতে বাঙালী লিখল বিজয়ের ইতিহাস,
অবাক পৃথিবীর সবাক কথন সাবাস সাবাস।
রচনাকালঃ ১৫ই অাগস্ট ২০১৭।
৩২নম্বর বাড়ী,ধানমন্ডি।
“করোনার করুণ গাঁথা ”
সাতরঙা আকাশটা করোনা মেঘে ঢাকা
কিলবিল করা শহর গ্রাম জনশূন্য ফাকা।
এখনই উঠবে প্রলয়ঙ্কারী ঝড় বইছে হাওয়া অবোধ
যে যার মত,বিবেকহীনের মত নিয়েছে সঙ্গনিরোধ।
সারা পৃথিবীটা আজ স্বঘোষিত অবরুদ্ধ
প্রকৃতি মানব জাতির রূঢ় আচরণে ক্ষুব্ধ।
নাস্তিকবাদীদের চোঁখে মুখে নিস্তব্ধতার ফিকে জলছাপ
নির্বাসিত বন্দীশালায় বসে কষে জীবনের যতশত পাপ।
মানুষ হইয়া মানুষেরে মারার কত কৌশল কর
বিধাতার রোষানলে পুড়ে এবার গোষ্ঠীশুদ্ধ মর!
নিজের অকাল মৃত্যুর জন্য কাকে দোষারুপ করবে তুমি
মনুষ্য তৈরী কোভিড-১৯ করোনা’র প্রথম বলি হলে তুমি।
এত সুন্দর পৃথিবী আজ কেন যেন নরক মনে হয়
কোন সে মোহে ভুলে ছিলি মন আখেরাতের ভয়?
রুহ ফুঁকে দিবার আগে দিলেন প্রভু সুন্দরতম অবয়ব
তিন ভুবনের অধিপতি,বিচারপতি একজনই তো রব।
বোকা মানুষ তুই শুধু মিছামিছি করিস বাড়াবাড়ি
রাজাধিরাজের রাজ্যে কি চলে এত্তো সব বাহাদুরি?
এতটুকু ঝড়ে ছুটিয়াছ ঘরে কোথা গেল তোমার হিম্মত
ক্ষমতার দাপট,সুরম্য প্রাসাদ,বিলাসী বসন,ধন দৌলত?
ধরাতলে চাইনা বাজুক অসময়ে ঈসরাফিলের বাঁশি
এক আল্লাহতে চিত্ত রেখে সুখসাগরে ভাসি বিশ্ববাসী।
রচনাকালঃ
২১ মার্চ ২০২০ইং
মাঝরাত,
রুপসা নদীর তীর।
খালিশপুর, খুলনা।
“খোকার জন্মদিন’
| ১৭ মার্চ ২০২০ | ৬:৫৯ অপরাহ্ণ
আজি হতে শতবর্ষ আগে খোকার জন্ম হল
বাঙালির প্রাণে বঙ্গবন্ধু,দুনিয়া বিশ্ববন্ধু বল।
যদিনা হতো জন্ম পিতার,পরিচয়হীন আমি
লাল সবুজের এই পতাকা হতনা এত দামী।
নেতার গায়ে আঁচড় কাটে বুকের পাটা কার
পাকিরাও জানত তিনি মহান সারা দুনিয়ার।
যে পিতাকে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণে বিশ্বগুণী জন
কেমন করে ভাবলে ঘাতক পিতার হবে মরন?
টুঙ্গিপাড়ার খোকার কথা বাঙালির ঘরে ঘরে
শতবর্ষী খোকার গল্প চলবে হাজার বছর ধরে।
থাকতেন যদি বেঁচে পিতা দিনটি হত রঙিন
ফুল পবনে পাখি রবে ধ্বনিত শুভ জন্মদিন।
রচনাকাল: ১৭ মার্চ ২০২০ইং
রূপসা নদীর তীর,খালিশপুর, খুলনা।
“শীতের বাঁশী বাজেরে”
| ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ | ৭:২৯ পূর্বাহ্ণ
শীত এলো নব বধূর মত কুয়াশার ঘোমটা পরে
শীত এলো দিনমজুর,কৃষাণ-কৃষাণী,নিরন্নের ঘরে।
পৌঁষের হিম কুয়াশায় জবুথবু সরিষে ফুলের মৌ
পুকুর ঘাটে জলকেলিতে আসেনা মেহেদী রাঙা বউ।
শীত এলো সহসা সারাদিন ভর সূর্য পেতেছে আড়ি
থমকে গেছে পল্লীজীবন,থামেনি নাগরিক জীবনের ঘড়ি।
তীব্র শীতেও ভারচুয়াল কেড়ে নিয়েছে কিশোরীর প্রথম পরশ থর থর থর
ঠুনকো স্বার্থের কারণে ভেঙ্গেছে কত ঘর,আপন হয়েছে পর।
শীত এলো ধূমায়িত ভাপা পিঠা,খেজুর তাড়ির রসে
দূর্ব্বা ঘাসে শিশির বিন্দু হাসে অকৃপণ শীতের পরশে।
একান্নবর্তী সুখী পরিবারের সুখ পরকীয়ায় কোণঠাসা
স্নানেই যেন সব ধুয়ে যায়,ধূয়ে যায় স্বর্গীয় প্রেম ভালবাসা।
শীতের মিহেল হাওয়ার স্পর্শে আজ প্রাণে প্রাণে বাঙালি নাম
সকল ভেদাভেদ ভুলে একই অনুভবে সাজুক শহর আর গ্রাম।
ধনীর প্রাসাদে আছড়ে পড়ুক হাড় কাঁপানো অদম্য শীত
বিবসন বসনা মনে জাগ্রত হোক সেবা ও কল্যাণ মুখী গীত।
জুপরী ঘরে,খুপরী ঘরে,শীত বসেছে ঘাপটি মেরে
ঘণ কুয়াশায় কাছের মানুষ অদৃশ্য হয় দুহাত পরে।
অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে ভবঘুরে,পথ শিশু সব
নেমে গেছে শুন্যের কোঠায় পাখপাখালির কলরব।
বুড়ো বুড়ির ভীষণ কষ্ট এই নিদারুণ শীতের কালে
নাইতে গেলে ধরে কাঁপন,না হাত দেওয়া যায় জলে।
শীতের বাঁশী কেড়ে নিলো খোকার মুখের হাসি
খুকীর গালে পড়েনা টোল,দোর খুলেনা পড়শী।
বাদলা হাওয়ার ঝাপটা মেরে ক্ষণিক নামে বৃষ্টি
আহা!সূর্য্যি মামার দেখা পেলে লাগত ভারী মিষ্টি।
দেখা হয়না চাঁদের বুড়ির সুতাকাটা,হয়না দেখা চাঁদ
লাশের মত অধরে কাপড় জড়িয়ে কাটে সারারাত।
মাঘের শীতে কাঁপে বাঘ,কাঁপে সিংহের ধূসর কেশ
টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া কাঁপে,কাঁপে সারাদেশ।
রচনাকাল:
২১শে ডিসেম্বর ২০১৯ইং
রাত-১১ঃ৩০ মিনিট।
রূপসা নদীর তীরে। খুলনা।
“চিরকিশোরের বিজয়”
| ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ | ৯:৩৯ অপরাহ্ণ
শৈশবে বিজয় দিবস মানে বড়দের হাত ধরে অনুষ্ঠান দেখা
দেশাত্মবোধক গান,আবৃত্তি,ঝাঁঝালো বক্তৃতা শুনে অবাক হয়ে থাকা।
শীতের সকালে স্নান শেষে কত ত্বরাকরে স্কুলে যাওয়া যায়
কী যে এক শিহরিত বুকে ছুটে গেছি,চললাম পিছে তোরা আয়।
কৈশোরে বিজয় দিবস মানে কাইতলা যঁজ্ঞেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ে রাতজাগা
শাসন বকুনি খেয়ে শাড়ি সংগ্রহ,রাতভর মঞ্চ সাজানো শেষে চিড়া মিঠাই ভাগা।
আমাদের সময় ছিল সাইড পাকা টিন শেড বিশাল এক হলরুম
সিক্স সেভেন এইটের ক্লাসে বৃষ্টি এলে পড়ত পানি,শব্দ হত রূম ঝুম।
জনাব,জসীমউদ্দিন,সাইদুল হক,সহিদুর রহমান, চঁন্দন কুমার;
জামান স্যার-শিক্ষা, সংস্কৃতি ও খেলার মাঠে আদর্শ ছিল সবার।
মুজিবুর ভাই,মোহাম্মদ আলী,সুজন,মাছুমা,পান্না আপা আবৃত্তি করতো বেশ
সহোদর শাহাবুদ্দিন,আসমা ছাড়াও মোস্তাক-জুলির সুরের আবেশ।
অগ্রজ আজহার আলী,সৈয়দ আলাউদ্দীন,সুকার্নো,আবু সায়্যিদ,সঞ্জয় দা,সায়েদুর রহমান
সুন্দর সতেজ কণ্ঠে বক্তব্য রাখতেন থাকত মুক্তিযুদ্ধের নথিপ্রমাণ।
বিজয় দিবসে সংগীতানুষ্ঠানে কখনো দলীয় সংগীতে মিলিয়েছি ঠোঁট
কখনো উপস্থাপনা,কখনো স্বরচিত কবিতাও করেছি পাঠ।
মাইকে যখন ঘোষণা হত-অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই অনুষ্ঠান শুরু হবে
কী যে এক ভাললাগা দোলা দিতো আলোড়িত সবুজ পল্লবে।
আজ বিজয় দিবসে সেই নির্মল আনন্দ আছে কিনা জানিনা!
প্রগতির মিছে প্রতিযোগিতায় ডুবে তার খবর আর রাখিনা।
যৌবনের শেষভাগে এসেও জীবন বীণায় বাজে সেই সুর
আমি সারাটি জীবন থাকতে চাই স্কুল জীবনের সেই চিরকিশোর।
রচনাকাল:
১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ইং
রাত ১১:৪৫ মিনিট।
★রমজানুল মোবারক
ধ্বংস থেকে রক্ষার জন্যে এলো ধৈর্যের রমাজান
মুসলিম জাতির প্রতি এ যেন খোদার সেরা দান।
সিয়াম সাধনার এটি হলো প্রশিক্ষণের মাস
নিশ্চিত করে আখেরাতে জান্নাতে বসবাস।
রহমতের প্রথম দশক চলে গেলো হায়!
জানি না রাহমান রাহীম কি দিলেন আমায়।
পাপে ভরা জীবন আমার ভরসা গাফির,
গফুর গাফ্ফার নামের গুণে আশা করি মুক্তির।
ধনের গৌরবে,যৌবনের মিছে তাপে ভুলেছি আপণ জাত
আত তাউত্তয়াবু নামের কারণে দান কর নাজাত।
যদি নাহি পাই তব রহমত মাগফিরাত নাজাত
বৃথা এ জীবন বৃথা দুনিয়াবি হায়াত।
নসীব কর হে প্রভু লাইলাতুল ক্বদর,খুশীর ঈদ,খুশবু আতর,
কবুল কর সাহরী ইফতার তারাবীন সাদাকাতুল ফিতর।
রচনাকাল: ২০ জুন ২০১৭ ইং
বিজয়পথ,ঢাকা।
“জাগো বিবেক”
| ০৪ মে ২০২০ | ১:৫৩ অপরাহ্ণ
তোমাদের গড়া এই পৃথিবীতে নাইবা থাকুক প্রাধিকার
ভবঘুরে,পথ শিশু ওরাও মানুষ আছে বাঁচার অধিকার।
চায় না পোলাও কোপ্তা বিরিয়ানি জুটে যদি ডাল ভাত
অপলক চেয়ে থাকে যদি বাড়িয়ে দাও অকৃপণ হাত।
হতে পারতো তার জন্ম তোমার ধনী পিতা মাতার ঘরে
তোমার জন্ম যদি হতো অর্ধাহারে বেঁচে থাকা সংসারে,
রোদে পোড়ে বৃষ্টিতে ভিজে জীবন নদী দিতে হত পাড়ি
ঝুপড়ি ঘরে রাস্তার ধারে কিংবা ল্যাম্পপোস্ট হত বাড়ি।
এমন করে কেউ কী ভেবেছো বৈশাখী বৃষ্টি বিলাস দিনে
মানবতার ঝড়ে ঝরেছে কি অশ্রু যুগল চোখের কোণে?
(৩০ এপ্রিল ২০২০)
খালিশপুর, খুলনা।
‘আত্মসমর্পণ’
| ২১ এপ্রিল ২০২০ | ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ
হাজারো সংশয় অনিশ্চয়তা মানুষের হৃদয়ে
এক ভয়ানক উদ্বিগ্নতা থেকে জীবন মুক্তি চায়,
থমকে যাওয়া পৃথিবী কর্মব্যস্ততা ফিরে পেতে চায়
মানুষ খোলা আকাশের নিচে ঘুরে বেড়াতে চায়।
অথচ একদিন পুরো আকাশটা মানুষের দখলে ছিল
একদিন পুরো সাগর মানুষের দুষনের শিকার ছিল,
একদিন পাহাড় জঙ্গলে মানুষের হিংস্র থাবা ছিল
একদিন ঘৃণ্য আত্ম অহংকারে মানুষ নিমজ্জিত ছিল।
আজ সমগ্র মুসলিম মসজিদ মুখি হতে চায়
হিন্দুরা পূজার ডালা সাজিয়ে যেতে চায় মন্দিরে,
গীর্জার ঘন্টা ধ্বনি শুনতে কান পেতে রয় খ্রিস্টান
বৌদ্ধরা যেতে চায় শুভ প্রার্থনায় প্যাগোডায়।
রাজপ্রাসাদ ছেড়ে দিগ্বিদিক মহা প্রতাপশালীরা
অসহায় চিকিৎসা বিজ্ঞান,বিফলে চিকিৎসা সেবা;
নাস্তিকেরা দিশেহারা,চৈতন্যোদয় ঘটেছে আস্তিকে
অদৃশ্য এক জীবাণুর ভয়ে প্রকম্পিত পুরো পৃথিবী।
মানুষ ঘরবন্দি কারাগার থেকে মুক্তি চায়
কৃত অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত থেকে মুক্তি চায়,
হারানো সুন্দর পৃথিবীর রূপ ফিরে পেতে চায়
মহান আল্লাহর দয়া ও কল্যাণ পেতে চায়।
১৫ এপ্রিল ২০২০ইং
খালিশপুর, খুলনা।
লাইলাতুল বরাত (কবিতা)
| ০৯ এপ্রিল ২০২০ | ৭:২৯ অপরাহ্ণ
আতংকিত আদম সন্তান নিস্তব্ধ পৃথিবীতে
বছর ঘুরে ফিরে এলো সেই প্রতিশ্রুত রাত,
নিজের শাপমুক্তি দুর্ভাগাদের ভাগ্য গড়তে
জাহানে এলো আল্লাহর উপহার শবে বরাত।
অশরীরী প্রেমালিঙ্গণে হবে চাওয়া পাওয়া
তারাভরা পূর্ণিমার চাঁদ এক উৎসবের রাত
রাহীম রাজ্জাক কারীম আসবেন প্রথমাসমানে
মাথা পরে রবে শাহেন শাহের কুদরতি হাত।
৯ এপ্রিল ২০২০ইং
রূপসা নদীর তীর, খুলনা।
“মসজিদ মন্দির দেখেন না প্রভু”
| ০৭ এপ্রিল ২০২০ | ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ
মসজিদ মন্দিরে নিষেধ হলো করতে প্রার্থনা
গীর্জা প্যাগোডার দরজা বন্ধ নেই আরাধনা।
হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টান আরো কত জাতি
প্রার্থনা আরাধনার নামে চেয়েছে কেবল খ্যাতি।
দিনের আলোয় চলনে বলনে সবাই মহৎ প্রাণ
রাতের আঁধারে সাজেন বটে নিজেই গড়িয়ান।
আচার আচরণে মনে হয় মানুষ কত সভ্য জাতি
অন্তরে বিষ হাসিমাখা মুখে ছড়ায় হাজার প্রীতি।
পরোপকার দানের মাঝেও স্বার্থ লুকিয়ে থাকে
সুযোগ বুঝে ঘাড় মটকায় একলা পেলে বাঁকে।
মসজিদ মন্দির গুলো সুশোভিত নজরকাড়া
গীর্জা প্যাগোডার গায়ে অশ্লীল শিল্পকর্মে ভরা।
দুনিয়া ভরা অযুত নিযুত অকৃতজ্ঞ আদম সন্তান
উপভোগ করিছে রাজাধিরাজের অকৃপণ অনুদান।
আজ প্রভু বড়ই রুদ্র রুষ্ট মানব জাতির প্রতি
দূরে ঠেলে দিলেন তামাম জাহানের অধিপতি।
মসজিদে না যেও মুসলিম, গীর্জায় খ্রিস্টান
অন্তর দেখেন খোদা,না চাহেন এত প্রতিষ্ঠান।
৬ এপ্রিল ২০২০ইং
রূপসা নদীর তীর,খুলনা।
Some text
ক্যাটাগরি: কবিতা
[sharethis-inline-buttons]