ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে বাড়ছে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে রাতদিন মাঠে কাজ করছেন উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। ইতোমধ্যে ওষুধ, কাঁচামাল ও মুদির দোকান ছাড়া সব ধরনের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৪২ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ। প্রয়োজন ছাড়া সারাদিন ঘর থেকে বের হচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। এ পরিস্থিতিতে অনেকেই যখন বাড়িতে থাকার কথা চিন্তা করছে, ঠিক তখনই ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তির কথা চেপে বসছে এ উপজেলার খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষের মাথায়।
এদিকে উপজেলায় হাটবাজারগুলোতে মানুষের সমাগম কমতে থাকায় এখানকার বেশিরভাগ হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও চায়ের দোকান বন্ধ রাখা রয়েছে । এতে বেকার জীবন যাপনের দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীরা। কর্মজীবী মানুষ বাইরে বের হলেও তাদের চোখমুখে আতঙ্কের ছাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যাত্রী পাচ্ছেন না অটোরিকশার চালকরা। কাজ না পেয়ে বসে বসে সময় কাটছে দিন-মজুরদের। সড়ক-মহাসড়কে নেই কাঙ্খিত যাত্রীসাধারণ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ অবস্থায় উপজেলায় দরিদ্র মানুষের কাছে করোনার পাশাপাশি আরেক আতঙ্কের নাম এনজিও। করোনা আতঙ্কে মানুষ ঘরবন্দি হলেও তাদের কাছ থেকে ঋণের টাকা আদায় বন্ধ করেনি এনজিও কর্তৃপক্ষ। একাধিক ঋণগ্রহীতারা জানান, করোনা আতংকিত হয়ে কাজ না থাকায় অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে এসব মানুষের। এরপরও এনজিওগুলো তাদের কোনও সাহায্য সহযোগিতা না করে উল্টো কিস্তির জন্য চাপ দিচ্ছে। এসব মানুষের মধ্যে আছে দিন দিনমজুর, রিকশাচালক, অটো চালক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
কালিকচ্ছ বাজারের একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জানান, তার নিজের কোন টাকা নেই। স্থানীয় একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে দোকান করেছেন তিনি। তার প্রশ্ন ঘরে থাকতে হলে তো দোকান চালাতে পারবো না। তাহলে ঋণের কিস্তি শোধ করবো কীভাবে ? হোটেল শ্রমিক আলমগীর, রাসেল ও সেলিম বলেন, কাজ করলে আমাদের পেঁটে ভাত জুটে, আর না করলে পরিবারসহ না খেয়ে থাকতে হয়।
সরাইল সদরের চা বিক্রেতা রেনু মিয়া বলেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রতিদিন দোকানে ভিড় থাকে। কয়েকদিন ধরে রাস্তাায় মানুষ খুব কম। তাই বিক্রিও কমে গেছে। এ দোকানের আয় থেকে ছয় সদস্যের সংসার চলে। পাশাপাশি দোকান চালানোর জন্য সমিতি থেকে ঋণ নিয়েছি। দোকানের আয় থেকেই কিস্তি চালাতাম। এখন তো চায়ের দোকানও বন্ধ। এ সপ্তাহে কিস্তি দিব কিভাবে সেই চিন্তায় আছি। একদিকে করোনার আতঙ্ক, তার ওপর কিস্তির চাপে দিশেহারা হয়ে পড়বো। তা না হলে ক্ষুদ্র ঋণের দরিদ্র পরিবারের মানুষ বিপদে পড়বে। উপজেলার বেশিভাগ মানুষ দেশের এ সংকটের সময়ে ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি উত্তোলন বন্ধ রাখার দাবি %9
Some text
ক্যাটাগরি: মতামত
[sharethis-inline-buttons]