করোনা ভাইরাস বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর, প্রযুক্তিনির্ভর উন্নত দেশ চীন, ইতালি, স্পেন, আমেরিকা এবং ইরানে অল্প সময়ের মধ্যে যে হারে ছড়িয়েছে, আর মৃত্যুর সংখ্যাও তাদের যে পরিমাণে হয়েছে, তাদের সে সমীকরণ দাঁড় করালে আমরা বাংলাদেশিরা বড্ড অসহায়; সর্বদিক থেকে। সরকার, জনগণ, প্রস্তুতি, হাসপাতাল, শনাক্ত, রিকভারি, লকডাউন, আইসোলেশন, কোয়ারেন্টাইন, হাসপাতাল, ডাক্তার ইত্যাদি সবকিছু চিন্তা করলে। এয়ারপোর্ট, লঞ্চ, টার্মিনাল, রেলওয়ে, সড়কপথ সবদিক দিয়ে যে হারে এদিক ওদিক ছুটে বেড়াচ্ছে মানুষ, তাতে করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর কথা চিন্তা করলে আমাদের দেশে মৃত্যুর মিছিল হবার কথা ছিলো এতক্ষণে।
কেননা আমাদের শহর থেকে গ্রাম, সড়ক থেকে চায়ের দোকান, মসজিদ সবখানে আমরা এত বেশি অবাধ বিচরণ করেছি এবং করছি- তাতে আমাদের বাংলাদেশের বাতাসেও কভিড ১৯ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কথা। কিন্তু তারপরেও মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অশেষ মেহেরবানীতে আমাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণটা এখনো অনেক কম, অনেক! জানি না, আগামী দিনগুলিতে আমাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে। তবে মন বলছে- এ দেশ ও জাতির উপর স্রষ্টার ভিন্ন রকম একটা দয়া ও রহমত আছে। (ধর্মান্ধ বলার আগে আপনিও পুরো বিষয়টা ঠাণ্ডা মাথায় একবার চিন্তা করবেন)
আমরা জাতি হিসেবে খুব বেশি ধর্মচর্চায় বিশ্বাসী সেটা আপনিও মানবেন নিশ্চয়ই। অবাক হয়ে যাই- রাস্তাঘাট, দোকানপাট সব কিছু বন্ধ। দেশে বলতে গেলে লকডাউন চলছে। সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী, পুলিশ, র্যাব, বিডিআর সবাই মানুষকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। কিন্তু আপনি মসজিদে যান, দেখবেন পুরো মসজিদ মুসল্লীতে ভরে গেছে। আলহামদুলিল্লাহ, আপনি একটা নাস্তিক কিংবা ভিন্নধর্মী লোকের কাছে এ অবস্থার সমাধান জানতে চান। দেখবেন সেও নির্দ্বিধায় বলছে- সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন। তার রহমত ছাড়া আর কোনো উপায় নাই।
আমি অবাক হয়ে ভাবি- আমাদের করোনা শনাক্তকরণ টেস্ট কিট নাই, কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশন নাই, পর্যাপ্ত চিকিৎসা নাই। মানুষজনও অত বেশি যে নিয়ম মানছে, তাও না। তবুও আমরা এখনো নিরাপদে আছি। শঙ্কায় আছি ঠিক আছে, তবে ক্ষতির পরিমাণটা কিন্তু খুবই কম আলহামদুলিল্লাহ। আমি বলছি না- আমরা ক্ষতির সম্মুখীন হবো না কিংবা মৃতের সংখ্যা বাড়বে না। তবুও কেন জানি মনে হয়- মহান সৃষ্টিকর্তা এ দেশ ও জাতির প্রতি করুনা করবেন, রহম করছেন, রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন। কেননা একমাত্র ওনার রহম ছাড়া আমাদের বাঁচার আর কোনো উপায় নাই।
ইতালি, স্পেন, আমেরিকা, চীনের মত অবস্থা যদি আমাদের হয়- তাহলে হয়ত আমাদের মৃতের সংখ্যা হাজার, লক্ষ ছাড়িয়ে কোটির ঘরেও যেতে পারে (যেন আল্লাহ সেটা না করেন, সেই প্রার্থনাটুকু আমরা সবাই করছি)। আমাদেরও তো নিরাপদে থাকা দায়িত্ব। সবার নিয়ম মানাটাও অ গুরুত্বপূর্ণ। আতঙ্কগ্রস্ত না হয়ে সাবধানতা অবলম্বন করে স্রষ্টার নিকট পানাহ চাইতে হবে। যেন তিনি আমাদের এ অসহায় জাতিকে এ মহামারী থেকে রক্ষা করেন।
তানজিব সারোয়ার মুন্না :: অনলাইন এক্টিভিস্ট
Some text
ক্যাটাগরি: মতামত
[sharethis-inline-buttons]