জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর মেয়র গোলাম মাহফুজ চৌধূরী অবসরের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা দায়ের করেছে দুদক । বগুড়া দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে জয়পুরহাট সিনিয়ার স্পেশাল জজ আদালতে এ মামলা দাখিল করেন দুদকের আদালত পরিদর্শক নিশিত কুমার ঘোষ। মামলা দু’টি জয়পুরহাট আদালতে দাখিল করা হলে ওই আদালতের বিচারক এম এ রব হাওলাদার মামলাটি আমলে নেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরনে জানা যায়, বিগত ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে প্রায় একই ধরনের দু’টি পৃথক মামলা দায়ের করেন আক্কেলপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক এনায়েতুর রহমান আকন্দ ও আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান।
আক্কেলপুর পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে মামলার বাদীরা অভিযোগ করেন, ২০০৯ সালের ২৯ জুলাই আক্কেলপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের সহকারী গ্রন্থাগারিক ফারুক আলম চৌধুরীকে অবৈধ্ভাবে চাকুরীতে পূনর্বহাল করে তার কাছ থেকে এমপিওর সরকারি টাকা উত্তোলন করে সরকারি তহবিলে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। ২০১৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর দরপত্র অনুযায়ী সর্বনিম্ন দরপত্রদাতাকে ঠিকাদারী কাজ না দিয়ে অর্থের বিনিময়ে অপর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন।
বাদীরা অভিযোগে আরো প্রকাশ, পৌর মেয়র গোলাম মাহফুজ চৌধুরী ২০১৪ সালে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন। সে সময় তিনি হলফ নামায় নিজের সম্পদ ১৬ লাখ ৭৯ হাজার ৪১২ টাকা এবং স্ত্রীর সম্পদ দেখিয়েছিলেন মাত্র ২৫ হাজার। পরে ২০১৫ সালের পৌরসভা নির্বাচনেও তিনি আক্কেলপুরে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে মেয়র পদে অংশ নেন। সেখানে তিনি ২০১৫ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তারিখে দাখিল করা হলফনামায় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছেন ৩৪ লাখ ৫৯ হাজার ৩৭২ টাকা। আর স্ত্রীর নামে সম্পদ দেখিয়েছেন ৫ লাখ ২০ হাজার ৬৯৬ টাকা। অথচ তিনি জয়পুরহাট শহরে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের দুটি বিলাসবহুল বাড়ি, নিজ ও স্ত্রীর নামে পৃথক দুটি দামি প্রাইভেট কার ছাড়াও অঢেল সম্পদের মালিক।
পৌর মেয়র অবসর চৌধূরীর বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজী, অর্থ আত্মসাত, নিয়োগ বানিজ্যসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে গত ১৩ নভেম্বর এমন দু’টি মামলা হলে জয়পুরহাট সিনিয়ার স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মামলাগুলো আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য বগুড়া দুদককে নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বগুড়া দুদকের উপ-পরিচালক মুনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের তদন্ত টীম তদন্ত শেষে আদালতে মামলা দু’টি দায়ের করলে ওই আদালতের বিচারক দু’টি মামলাই গ্রহন করেন।
আজ বুধবার বিকেলে জয়পুরহাট আদালতের রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবি (পিপি) এ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
শফিউল বারী রাসেল, জয়পুরহাট থেকে
Some text
ক্যাটাগরি: নাগরিক সাংবাদিকতা
[sharethis-inline-buttons]