আমার একমাত্র পুত্র মোহাম্মদ মোছাদ্দেক আফজাল বিগত ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান অনুষদে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়। এ সময় লেখা-পড়ার সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটে আজিমপুরে চায়না বিল্ডিং নামক এক মেসবাড়ীতে দুজন ছাত্র মিলে একটি রুম ভাড়া নেয়। জীবনে এই প্রথম সে আমাদেরকে ছেড়ে বাইরের পরিবেশে একা থাকতে শুরু করে । জীবনের এই চলার পথে জানা-অজানা, ভালো-মন্দ অনেক লোকের সাথে পরিচয় হয়। আবার অনেকের সাথে খুব ঘনিষ্ঠতাও হয়। এমতাবস্থায় তার সুষ্ঠু ও সুন্দর জীবন কামনান্তে তার নিকট একটি নাতিদীর্ঘ চিঠি লিখি। এখানে সেই চিঠির চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো।
সুপ্রিয় আফজাল, তোমার এ শিক্ষা জীবনে চলার পথে জ্ঞানী-মূর্খ ,ভালো-মন্দ বিভিন্ন ধরনের ব্যক্তিদের সাথে পরিচয়, ঘনিষ্ঠতা এবং বন্ধুত্ব হবে। এমতাবস্থায় জ্ঞানের কষ্টিপাথরে যাচাই করে যার সাথে তোমার জ্ঞানগত, আদর্শগত ও মনের মিল হয়, তার সাথেই মিত্রতা করবে। প্রত্যহ বিকাল দিকে অবসরে খেলাধুলা করবে, হাঁটহাঁটি করবে এবং নৈর্সগীক দৃশ্য উপভোগ করবে। এতে শাররীক ও মানসিক ভাবে নিজেকে উৎফল্ল মনে হবে। এই সময় ভূলেও ফেসবুক ব্যবহার করবে না। তবে সাপ্তাহে এক দিন ফেসবুক ব্যবহার করতে পারো। এতে মন ও মস্তিক ভালো থাকবে। ফেসবুক ব্যবহার করার সময় খুবই সতর্কতা অবলম্বন করবে। কারন বর্তমান সরকার কতৃর্ক প্রনিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন খুবই ভয়ংকর ও নির্যাতনমুলক। সামান্য একটু ভূল হলে আইনের ফাঁদে ফেঁসে যাবে। তাই ফেসবুক বা ইন্টারনেট ব্যবহারে খুব সাবধানতা অবলম্বন করবে।
পরের উপকার করা প্রতিটি মানুষেরই একটি সহজাতপ্রবৃতি, ক্ষতি করা নয়। নিজের কোনো ক্ষতি ছাড়া কখনো কারো উপকার করা যায় না। কোনো কিছু পাওয়ার আশায় কখনো কারো উপকার করবে না, এতে মনের মধ্যে দুঃখ প্রতিনিয়ত আঘাত করবে। উপকৃত ব্যক্তি যদি কখনো কোনো ধরনের ক্ষতি করে তা হলে তা স্বাভাবিক বলে মেনে নিবে। সুতরাং কখনো কারো উপকার করতে না পারলেও ক্ষতি করার চেষ্টা করবে না, কেনন এতে নিজের ক্ষতিরই পাল্ল ভারী হবে। মনে রাখবে মানুষের জন্যে মানুষ,পশুর জন্যে নহে। লোকদের সাথে যাচাই-বাছাই করে সব সময় লেন-দেন করবে, কারো মধুর কথায় নয়। তবে স্পষ্টবাদী ও রাগী লোকদের সাথে লেন-দেন করা সবচেয়ে নিরাপদ,কেননা উক্ত শ্রেণীরা লোকরা ওয়াদা ঠিক রাখার আপ্রান চেষ্টা করে এবং নিজের হাজারো ক্ষতি হলেও ঋন থেকে মুক্ত হওয়া সর্বাত্বক চেষ্টা করে।
তুমি রাজিনৈতক সচেতন হবে ,কিন্তু কখনো রাজনীতিকে পেশা হিসেবে নেবে না বা কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সরাসারি জড়িত হবে না। বর্তমানে আমাদের দেশের রাজনীতিতে মেধা, সততা ও মননশীলতার খুবই অভাব। রাজনীতি এখন দুষ্ট ও লোভী লোকদের দখলে। রাজনীতির ক্ষেত্রে এই কথাটি সব সময় মনে রাখবে যে, রাজনীতিতে যেমন ইতিবাচক ধারা আছে ,আবার এর বিপরীতে নেতিবাচক ভয়াবহতাও রয়েছে। সমাজ ও রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে ইতিবাচক ধারাটুকুই দরকার। নেতিবাচক দিকটা বেশী চলে এলেই সামাজিক ন্যায়বিচার বিঘ্ন হয়, সমাজে অস্থিরতা তৈরি হয়। রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে যায়। মানুষ স্বাভাবিকতা হারায়। অস্বাভাবিকতার ভয়াবহতায় সব কিছুই তখন মনে হয়-ঠিকই তো আছে। নীতি নৈতিকতার অবক্ষয় নিয়ে প্রশ্ন উঠে আসে না। বরং ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান গুলো নিয়ে কেউ কথা বললে অস্বাভাবিক মনে হয়। এমতাবস্থায় প্রতিষ্ঠানগুলোর ধ্বংস নিয়ে সচেতন লোকদের চিৎকার কারও গায়ে লাগছে না।
রাজনীতি আজ দুবুর্ত্তদের দখলে চলে গেছে। রাজনীতিবিদদের একাংশ নিজেদের প্রভাব বিস্তার অটুট রাখার জন্যই দুবৃর্ত্তদের নিয়মিত ভাবে প্রশ্রয় দিচ্ছে। এ সব ভন্ড ও প্রতারক রাজনীতিবিদের অতি মুনাফা লোভী মানসিকতার জন্যই আজ সংষসদ নিবাচর্ন থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মনোনয়নেই বানিজ্যিক রূপ পরিগ্রহ করেছে। অর্থ ছাড়া মনোনয়ন তো দূরে থাক, আজকাল প্রাথমিক সদস্যপদও লাভ করা যায় না। রাজনীতিতে আদর্শ, মূল্যবোধ, ত্যাগ ও রাজনৈতিক সংগ্রামে অবদানের কোনো স্বীকৃতি পরিলক্ষিত হয় না, যারা রাজনীতিকে জীবনের আদর্শ এবং দেশ ও জাতির সেবায় নিবেদিত মনে করেন, তারা আজ অপঙক্তেয় ও অসহায়। তাই এই অবস্থায় রাজনীতি থেকে দূরে থাকাটা হবে তোমার জন্যে সব চেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।
স্পষ্টবাদী,ধার্মীক ও জ্ঞানী লোকদের সঙ্গ কখনো ত্যাগ করবে না,কেননা তাহলে তুমি প্রকৃত সত্যের সন্ধ্যান পাবে না। তাদের মধ্য থেকেই তুমি প্রকৃত বন্ধু খোজঁ পাবে। সব সময় মনে রাখবে অর্থ-সম্পদ পাওয়া যত সহজ, প্রকৃত মনের মতো বন্ধু পাওয়া তত সহজ নয়। রাগ ও লোভ কে চিরতরে ত্যাগ করবে, কেননা উক্ত দু‘ টি বদগুন মানুষকে ধ্বংশের দ্বার প্রান্তে নিয়ে যায়। সব সময় মানুষকে সন্মান করবে, কেননা অন্যকে সন্মান করলে নিজের সন্মান ক্রান্ময়ে বাড়বে। সুযোগ পেয়ে কাউকে অপমানিত করলে, নিজেও অন্যের দ্বারা যে কোনো সময় অবশ্যই অপমানিত হবে। কেউ কখনো কোনো ভূ’ল করলে তাকে তৎক্ষনাৎ ক্ষমা করে দিবে,এতে তোমার মহত্ব ও সততা ও সরলতা সাবার সামনে উন্মচিৎ হবে। কারো মনে কখনো আঘাত দিলে নিজের ভূল স্বীকার করে উক্ত ব্যক্তির নিকট থেকে ক্ষমা চেয়ে নিবে। মনে রাখবে নিজের ভূল স্বীকার করা ও ভূলের জন্যে ক্ষমা চাওয়া মানব জীবনের একটি মহৎ গুন। এই গুনটি মনের মধ্যে সব সময় লালন করার আপ্রান চেষ্টা করবে।
নিজের বৈধ উপার্জন অনুযায়ী সৎ ভাবে জীবন নির্বাহ করবে। মনে রাখবে সৎ জীবন নির্বাহের মধ্যে শান্তি নিহিত থাকে আর অসৎ জীবন মানুষকে ধ্বাংশাত্বক কাজে উৎসাহিত করে। হাজারো কষ্টের মধ্যে কখনো অসৎ পথে ধাবিত হবে না। নিজের জ্ঞান, উর্পাজন ও অবস্থা অনুযায়ী স্থান-কাল-পাত্র ভেদে সংলাপ বিনিময় করবে। সব সময় ধৈর্য্য ধারন করবে, কখনো ধৈর্য্য হারা হবে না। ধৈর্য্য সহকারে নিজের জ্ঞান ও বাস্তবতা অনুযায়ী পরিস্থিতির মোকাবেলা করবে। আর মনে রাখবে আল্লাহ সব সময় ধৈর্য্যশীলদের সাথে থাকেন। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ। লক্ষ প্রানের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে। তাই এ দেশের মাটি ও মানুষকে সব সময় মনপ্রান উজার করে ভলোবাসবে এবং সমাজ-ও রাষ্ট্রের জন্য হানিকর যাবতীয় কাজ থেকে সব সময় বিরত থাকবে। এ দেশের প্রতিটি লোকের সাথে শ্রদ্ধার সঙ্গে কথা বলবে। তোমার সাথে কারো মত বা আদর্শের অমিল হরেও তার সাথে শালীনতার সঙ্গে কথা বলবে। মনে রাখবে দল-মত-নির্বিশেষে সবাই দেশ প্রেমিক; মতের অমিল হওয়া মানেই দেশদ্রোহীতা নয়। তবে সমাজ ও রাষ্ট্রের বৃহৎ স্বার্থে কতিপয় মৌলিক প্রশ্নে দল-মত-নির্বিশেষে সবাইকে সমঝোতায় উপনীত হওয়া উচিৎ। তুমিও তা মান্য করে চলবে।
একটি চিরন্তন কথা সব সময় মনে রাখবে মানুষ সৃষ্টির সেরা জাতি। মানুষের অবস্থান সমস্ত সৃষ্টির উপরে; তার সমকক্ষ কেউ নেই। মানুষের আবেগ অনুভূতি আছে। ভূল করলে সেই ভূল সংশোধন করে ভালো পথে চলে আসতে পারে, কেউ কষ্ট পেলে তাকে দ্রুত সাহায্য করতে এগিয়ে আসে,সামাজের অনাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে সেই অনাচার দূর করে শান্তি স্থাপন করতে পারে। আরো অনেক গুনাবলী মানুষের মধ্যে আছে যা সৃষ্টিকর্তার অন্য সৃষ্টির মধ্যে নেই। তাই সৃষ্টির সেরা সৃষ্টি হিসেবে এমন কোনো কাজ করবে না যাত তোমার অবস্থান পশুর চেয়েও নিচে যায়। দোষ-গুন নিয়েই মানুষের জীবন। দোষের কালিমা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্যই বিচার ব্যবস্থার সৃষ্টি। তাই দোষ সংশোধ করাই তোমার জীবনের অন্যতম ব্রত হওয়া উচিৎ। কারো দোষ কখনো খোঁজতে যেয়ো না; নিজের দোষ সব সময় খোঁজবে। একটি দোষের কারনে কখনো কারো অবমূল্যায়ন করবে না,মানুষকে মূল্যায়ন করবে তার ধারাবাহিক কাজের মাধ্যমে। দোষের মাঝে লোভ,হিংসা ও বিদ্বেষ নিহিত থাকে। জন্মই হয় মৃর্ত্যুতরে। তাই জন্ম ও মৃর্ত্যুর মধ্যর্বতী সময়ে লোভ,হিংসা ও বিদ্বেষ চিরতরে পরিত্যাগ করে সৃজনশীল কর্ম সম্পাদন করবে মানুষ, সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যানে।
নিজের পরিবার পজিনের মধ্যে থেকে সর্ব প্রথম আদর্শের বীজ বপন শুরু করবে, তা হলেই তুমি যোগ্য উত্তরসূরী পাবে। নিজের বদগুন অন্যের মাঝে খোঁজতে যাবে না। কেউ কোন ভূল করলে সম্ভব হলে তা সঙ্গে সঙ্গে সংশোধন করার আপ্রান চেষ্টা করবে। সব সময় মহান সৃষ্টিকর্তার প্রসংশা করবে;তারপর মানবের প্রসংশা করবে। মনে লাখবে অন্যের প্রসংশা করলে কখনো তোমার সন্মান কমবে না, বরং বাড়বে ও তুমি পূজনিয় ব্যক্তিতে পরিনত হবে। জীবনের প্রতিটি মুহুর্তে বিশ্বের সর্ব শ্রেষ্ঠমানব মোহাম্মদ বিন আব্দুল্লারকে নিজের আদর্শ হিসেবে গন্য করবে এবং এই আদর্শ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাস্তবায়নের আপ্রান চেষ্টা করবে। প্রতি দিন নির্ধারীত সময়ে নামাজ আদায় করবে এবং পাশাপাশি পবিত্র কোরআন শরীফও পড়ার চেষ্টা করবে। মনে লাখবে পবিত্র কোরআন ধর্মগ্রন্থ হলেও এতে নিহিত আছে জ্ঞানের অশেষ ভান্ডার যা সম্পর্কে বর্তমানে সন্মানিত আলেমরা সচেতন বলে মনে হয় না। আমার এ ক্ষুদ্র জীবনে তাদের মুখ থেকে এ ব্যাপারে বলতে শুনি নি। তাদের ধর্ম প্রচার শুধু ধর্মের আচার অনুষ্ঠানে সীমাবদ্ধ। জ্ঞানের কথা, নীতির কথা তেমন কিছু থাকে না। আর যারা ধর্মকে অবজ্ঞার চোখে দেখেন তারা কোরআনকে জ্ঞান আহরনের এক অনন্য উৎস বলে জানেন না, জানতে চান না। পবিত্র কোরআনে হাজারো জায়গায় বৈজ্ঞানিক তথ্য উচ্চারিত হয়েছে, যা তোমার মতো যে কোনো সচেতন পাঠকের চোখে পড়তে বাধ্য।
তোমার হয়তো জানা আছে যে, আমাদের দেশসহ বিশ্বের অনান্য দেশের জনগণের লাগামহীন জীবনধারা, স্বার্থানেষী রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপ, অতি মুনাফা অজর্নের অর্থনৈতিক নীতি ও বিলাসী জীবন সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গিতে আমূল পরিবর্তন না আনতে পারলে আজকের সভ্যতা বাচিঁয়ে রাখা সম্ভব হবে না, তা অচিরেই ধসে পড়বে। আমাদের বাড়ী, গাড়ী, দোকানপাট, জায়গাজমি, মোবাইল, টেরিভিশন, ইন্টারনেট, রোবট, উপগ্রহসহ আরো নিত্যনতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন দিয়ে কি হবে যদি মানর-অস্তিত্ব টিকে না থাকে? নৈতিকতা, মানবিকতা, বিবেক ও বিবেচনা হিন মানবসমাজ দীর্ঘ দিন টিকে থাকবেনা, তার ধ্বংশ অনির্বায। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখতে পাবে যে, যখনই কোনো মানবসভ্যতা নৈতিকতকা ও মানবিকতা হারিয়ে সমাজ পরিচালনা করে তখন সৃষ্টিকর্তা স্বয়ং বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাধ্যমে ঐ সভ্যতাকে ধ্বংস করে দেয়। অতঃপর নতুন সভ্যতার উত্থান ঘটে। পৃথিবীর হাজারো সভ্যতার উত্থান ও পতন ঘটেছে এ প্রক্রিয়ায়। তাই নৈতিকতা ও মানবিকতা বর্জিত কোনো কাজ কখনো করবে না। নৈতিকতা ও মানবিকতা কায়েমের লক্ষে যতই বাধাঁ-বিপত্তি আসুক না কেন পিছ পা হবে না; নিরন্তর চেষ্টি করে যাবে, অবশ্যই কাংখিত লক্ষে তুমি পৌঁছে যাবে।
নিত্য নতুন উদ্ভাবিত প্রযুক্তি খুব সাবধানে ব্যবহার করবে। নিজের অজান্তে সামান্যতম ভূল হয়ে গেলে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে। কেননা নতুন নতুন প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন একদিকে যেমন জীবনে নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধার দ্বার খুরে দিচ্ছে, অন্যদিকে নিত্যনতুন অপরাধের জন্ম দিচ্ছে। অপরাধ প্রবনতা উসকে দিচ্ছে। তাই সাইবার অপরাধের প্রসার ঘটছে। এ কথাও মনে রাখবে, বর্তমানে পৃথিবীর বিখ্যাত কোম্পানী গুলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমে নিত্যনতুন সামগ্রী উদ্ভাবন করে জীবনকে সুশোভিত করতে পারে, ব্যবসার সুযোগ ও ক্ষেত্র সম্প্রসারিত করতে পারে। কিন্তু পারে না বিবেক দান করতে, প্রেম, প্রীতি ও ভালোবাসা সঞ্চার করতে, ব্যক্তিজীবন, সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার সঠিক নিয়মনীতি নির্ধারন করতে। সেজন্য যে জ্ঞান ও ভাবাবেগের দরকার তা ক্রমে লোপ পাচ্ছ আমাদের শিক্ষা, দীক্ষা ও চর্চা থেকে। তাই যতই বাধঁ-বিপত্তি আসুক না কেন যথার্থ জ্ঞানচর্চা থেকে কখনো পিছু হটবে না। আর তোমার সাথে যার জ্ঞান ও মনের মিল হবে তার সাথেই মিত্রতা করবে।
এই ক্ষনজন্মা পৃথিবীতে যে সামান্য জ্ঞান তুমি অর্জন করেছো, তা অন্যের মাঝে বিলিয়ে দিও। কেননা জ্ঞান প্রদানের মাধ্যমে জ্ঞান ক্রমান্ময়ে ভারবে, কখনো কমবে না। নিজের জ্ঞান অন্যের মাঝে বিতরন করাই হলো জ্ঞান অর্জনের সত্যিকারের সার্থকতা আরো মনে রাখবে কোনো সমস্যাই হুট করে সমাধান করা যায় না। সমস্যার গভীরে প্রবেশ করে সমাধানের পথ বের করে আনতে হবে। কেননা সমস্যার মধ্যেই সমাধান নিহিত রয়েছে। হতাশা, লালসা ও বিদ্বেষকে পরাভূত করে মানব কল্যানে আগামীর পথে এগিয়ে যাবে।
আমার চিঠির মর্মার্থ নিজের জীবনে আত্মস্থ করতে পারলে ইনশাল্লাহ পারিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যানে তুমি সামান্যতম কিছু হলেও করতে পারবে। আর এ সামান্যতম কাজটুকু করতে পারলে তোমার এই ক্ষুদ্র জীবন সার্থক হবে এবং যুগ যুগ ধরে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জনগণ তোমাকে সব সময়ই স্মরন করবে। আমার এই ক্ষুদ্র জীবনে যা আমি এ পযর্ন্ত জানলাম ও লালন করলাম তার সামান্যটুকু জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা এ চিঠির মাধ্যমে তোমাকে জানালাম। একজন পিতা হিসেবে তোমার সুন্দর ও সুষ্ঠু জীবন কামনা করে পত্রের যবনিকা টানলাম।
খায়রুল আকরাম খান: ব্যুরো চীফ, দেশ দর্শন
Some text
ক্যাটাগরি: চিন্তা, নাগরিক সাংবাদিকতা
[sharethis-inline-buttons]