রাষ্ট্র ভাষা বাংলার দাবিতে আন্দোলন চলছে, ৭ মার্চ ভাষণ দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, চলছে সম্মুখযুদ্ধ, গণহত্যা, পাকবাহিনীবধ, বিজয় উল্লাস, বধ্যভূমিতে শায়িত আছেন শহীদরা, ৭১’র একটি চিঠি, শরণার্থী গমন, একাত্তরের স্মৃতি বিজড়িত স্থান, শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধ- এ সবই এক দেয়ালে। এ যেন দেয়ালে বাংলার ইতিহাস। চোখ ফেরানো দায়! বিজ্ঞাপন মুছে দিয়ে দেয়ালে চলছে বাংলার ইতিহাস আঁকার কাজ। বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সীমানা দেয়ালে অন্তত জনা দশেক আঁকিয়েকে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। প্রখর রোদে ছাতা মাথায় নিয়েই তারা কাজ করছেন মনযোগের সঙ্গে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস উপলক্ষে ‘আমরাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া’ নামে একটি ফেসবুকভিত্তিক সংগঠনের উদ্যোগ এটি। নাম দেয়া হয়েছে ‘রঙিন হবে আমাদের স্কুল’ কর্মসূচি। আঁকিয়েরা সবাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিশু নাট্যম নামে একটি সংগঠনের শিক্ষার্থী। ৮ ডিসেম্বর সকাল আটটা আট মিনিটে আটজন বিশিষ্ট ব্যক্তি দেয়াল আঁকার উদ্বোধন করবেন। সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় মিশু খানম সুরভী, শুভময় বিশ্বাস, তূর্য দেব নামে তিন আঁকিয়ের সঙ্গে। জানালেন, দেয়ালে বাংলার ইতিহাস আঁকার সুযোগ পেয়ে তাঁরা খুশি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির ছাত্র কাজী কামরুল জানায়, আগে বিদ্যালয়ের দেয়ালে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন ছিলো, যা দেখতে খারাপ লাগতো। এখন দেশের ইতিহাস আঁকায় বেশ ভালো লাগছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিশু নাট্যম সূত্র জানায়, তাঁদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এ কাজের সঙ্গে জড়িত। বাবুল মিয়া, দীপ্ত মোদক, তৃষ্ণা দেবনাথ, জান্নাতুল ফেরদৌসি, ফাল্গুনি বনিক, ফৌজিয়া হক, ইয়াছিন আলম, প্রান্তু পাল, সামিয়া জাহান, ফাহমিদা হক নিশিতা, ইমরোজ রাফাত, সামিদ আহমেদ, শায়লা আক্তার, শ্রাবণী আক্তার, আনিকা ইবনাত, সাদিয়াতুল মীম, মিশু খানম সুরভী, শুভময় বিশ্বাস, তূর্য দেব, ইসরাত জাহান, আঁখি আক্তার, খাদিজা আক্তার, বানেছা আক্তার, রুবিনা আক্তার, তায়িবা আমজাদ, আন্নি বখতিয়ার, ইয়াছিন আলম শুভসহ আরো কয়েকজন গত চার-পাঁচদিন ধরে আঁকার কাজ করে যাচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিশু নাট্যমের সম্পাদক নিয়াজ মো. খান বিটু বলেন, ‘বাংলার ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দিতে আমরাই ব্রাহ্মণাবাড়িয়ার উদ্যোগে সহায়তা করে আমাদের শিক্ষার্থীরা। এর সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমরাও গর্বিত।’ ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘এ উদ্যোগটি সত্যিকার অর্থেই খুব প্রশংসনীয়। আমাদের বিদ্যালয়ের দেয়ালে চোখ বুলালে বাংলাদেশের ইতিহাস সম্পর্কে একটা ধারণা নিতে পারবে নতুন প্রজন্ম।
আমরাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রতিষ্ঠাতা বিবর্ধন রায় ইমন বলেন, ‘গত পাঁচ বছর ধরে আমরা এ উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করে চলেছি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের দেয়ালে আঁকার মধ্য দিয়ে। নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশর ইতিহাস পৌঁছে দিতে আমাদের এ উদ্যোগ।
সানিউর রহমান
Some text
ক্যাটাগরি: খবর, নাগরিক সাংবাদিকতা
[sharethis-inline-buttons]