জন্মগতভাবেই অন্ধ। দুচোখ দিয়ে কখনো আলো অনুভব করেনি। শ্রবণ ইন্দ্রিয়র মাধ্যমে মেধার তীব্র ধারন ক্ষমতা ও মনের জোরে অন্ধত্বকে জয় করেছেন মিসরের আব্দুল্লাহ আম্মার। মাত্র নয় (৯)বছর বয়সেই তিন ভাষায় কুরআনে কারিমের হাফেজ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন এই বিস্ময় বালক।
আরবির পাশাপাশি ইংরেজি ও ফরাসি ভাষায় সম্পূর্ন কুরআন তার মুখস্থ । হাফেজ হয়েছেন মাত্র তিন মাসে আট বছর বয়সে। অতঃপর এক বছরে ধীরেধীরে কুরআনে কারিমের ইংরেজি ও ফরাসি অনুবাদও আয়ত্ম করেছেন। আব্দুল্লাহ আম্মারের জন্ম মিসরের সাধারণ একটি পরিবারে। অনেক বড় হবেন-জন্মের আগে থেকেই তার পিতা তাকে নিয়ে এই স্বপ্ন দেখতেন। অন্ধ হয়ে পৃথিবীতে আগমন করার পরেও পিতা শিশু আব্দুল্লাহর প্রতিপালনে কোন ত্রুটি করেননি;
ছোট্ট বয়সেই তাকে মাদরাসায় নিয়ে আসেন এবং কুরআনের হাফেজ হওয়ার জন্য নিজ সন্তানকে সপে দেন একজন যোগ্য শিক্ষকের হাতে।পিতার স্বপ্ন সত্য করতে আব্দুল্লাহ আম্মার বেশি সময় নেননি; বরং নয় বছরে তিন ভাষায় হাফেজ হওয়ার পাশাপাশি এর পরপরই হাদিস মুখস্থ শুরু করেন এবং এগারো বছর বয়সে হাদিসের প্রসিদ্ধ ছয় কিতাবের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলো মুখস্থ করতে সক্ষম হন।
এই ছোট্ট সময়েই জাহেলি ও উমাইয়া যুগের অসংখ্য শে’র ও কবিতাও কন্ঠস্থ করে ফেলেন ।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী আব্দুল্লাহ আম্মার অন্তত দশটি সুর ও ভঙ্গিমায় সম্পূর্ণ কুরআনে কারিম তেলাওয়াত করতে পারেন। তিনি জানান, শৈশবে রেডিওতে সম্প্রচারিত কুরআন তেলাওয়াত শুনে শুনেই এই মহাগ্রন্থের প্রতি আকৃষ্ট হন। তার এই অভাবনীয অর্জনের ফলশ্রুতিতে এরই মধ্যে অসংখ্য সফলতা ও লাভ করেছেন।
২০১৮ সালের রমযানে মিসরের ধর্মমন্ত্রণালয় কর্তৃক বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত হন।২০১৬ ও ২০১৮ সালে মিসরে অনুষ্ঠিত জাতীয় কুরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে শ্রেষ্ঠ হাফেজ নির্বাচিত হওয়ায় মিসরের তৎকালীন ধর্মমন্ত্রী মুহাম্মাদ মুখতার জুম’আহ তাকে এই সম্মাননা প্রদান করেন।প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আস সিসিও তাকে নগদ আর্থিক পুরস্কার দেন এবং সার্টিফিকেট প্রদান করেন।
তাছাড়া আব্দুল্লাহ আম্মারের এই কীর্তির প্রসংশা করেন বিশ্বখ্যাত আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শায়েখ ড. আহমাদ আত তাইয়িব। আল আযহারের নিজস্ব খরচে তাকে তার পরিবারসহ পবিত্র হজ করানোর ব্যবস্থা করেন তিনি।এই বিস্ময় বালক এখন আল আযহারে পড়াশোনা করছেন-একান্ত সাক্ষাতে শায়েখ ড.আহমাদ আত তাইয়িব তাকে আরবি সাহিত্য কবিতা ও যথাসম্ভব সমস্ত বিষয় পড়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। তাকে আশ্বস্ত করেছেন, ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করার আগ পর্যন্ত তার পড়াশোনার সব ব্যবস্থাপনা আল আযহার করবে ।এখন তার বয়স বারো ; পাড়াশোনা শেষ করে তিনি অনেক বড় হতে চান!
Some text
ক্যাটাগরি: খবর
[sharethis-inline-buttons]