বিএনপির মধ্যে অনেক নিবেদিত প্রাণ থাকে যারা নিঃস্বার্থ ভাবে নিজের সব কিছু উজার করে দলের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে থাকে।
যাদের চাওয়া পাওয়া থাকে শুধু নিজের প্রাণের দলটি ক্ষমতায় থাকুক বা আসুক।
আর এতেই তারা বেজাই খুশি, দল ক্ষমতায় এলে ওদের কোন আর্থিক লাভ ও নেই।
তবে দলের জন্য ওরা শুধু বিলিয়েই দিয়ে থাকেন। ঠিক এমনই একজন নিবেদিত
প্রাণের অকাল মৃত্যু হল। আর সে সদ্য মৃত মানুষটি হল জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সম্পাদক মোঃ জাবেদ আলী।
গত কয়েক বছরে দলের জন্য কি না করেছে সে? দলের দুঃ সময়ে দলের জন্য দেশের জন্য মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য বেশ কয়েকবার তাকে জেলে ও যেতে হয়েছে।
অসংখ্যবার মোটা অংকের টাকা দিয়ে পুলিশের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। নিজের হাড় ভাঙ্গা শ্রমে ঘামে উপার্জিত জমানো টাকা গুলো দলের জন্য উজার করে দিয়েছে।
দেশ মাতার মুক্তির জন্য দলের প্রতিটি
মিটিং মিছিলে নিজে সহ এলাকা থেকে ১০/১৫ জন যুবককে নিয়ে রাজপথে থেকেছে। অষ্টগ্রাম থেকে শহরের অলিগলিতে প্রতিটি মিটিং মিছিলে থেকেছে সামনের সারিতে, নির্ভয়ে অতন্ত্র প্রহরীর মত কাজ করেছে দলের জন্য। নিজের সন্তান পরিবার পরিজনের খবর নিতে পারে নি দলের জন্য। দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য নিজের জীবনকে বিলিয়ে দিতে দ্বিধা করতে না সে।
অথচ ৭ নভেম্বর স্বদলীয় লোকদের সাথে একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বহিস্কৃত হলেন জাবেদ! যে জাবেদ দলের জন্য লাখ লাখ টাকা ব্যয় করল, নিজের ভবিষ্যৎকে বিনাশ করল। বছরের পর বছর বাড়ি ঘর ছাড়া রইল। সেই জাবেদ এর তার মতের বিপক্ষে একটি কাজের প্রতিবাদ করার জন্যই আজ তার সকল ত্যাগ তিতিক্ষা, জেল জুলুম নির্যাতন সব কিছুকেই পদদলিত করে তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হল। এটা কতটুকু যুক্তিযত এই প্রশ্ন থেকেই যায়।
তাহলে জাবেদের জন্য কি ক্ষমা নামক শব্দ অপ্রযোজ্যই থেকে গেল? দল কি জাবেদের এত দিনের ত্যাগ তিতিক্ষার কোন মূল্যায়নই করতে পারেনি, বা করার চেষ্টাও করতে পারিনি? জাবেদের জন্য কি একটি বারও কারো সহানুভূতির উদয় ঘটেনি?
জাবেদরা কি শুধুই বলির পাঠা হবে?
নাকি শুধু মিটিং মিছিলে লোক আনার জন্যই জাবেদদের জন্ম? বিষয়টি যদি এমনই হয় তাহলে আগামীতে আর এমন নিবেদিত জাবেদরা বিএনপির রাজনীতিতে জন্মাবে না। কেউ আর জাবেদের মত বলির পাঠা হতে আসবে বলে মনে করি না।
ক্ষমা করো জাবেদ। তোমার মত প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে আসা কারো জন্য বিএনপির রাজনীতি শোভা পায় না।তোমাদের জন্ম হলো শুধুই ব্যবহৃত হওয়ার জন্য। সময়ের প্রয়োজনে ‘ অপ্রয়োজনে টিস্যুর মত ছুড়ে পড়বে, যেমন আজ পড়েছ।তোমাকে দেখে হয়ত আজ অনেকের মনেই আনন্দের বান বইছে।
জানি না তারা আদৌ তোমার মত বিএনপির নিবেদিত জাবেদ হতে পেরেছে কিনা!
ভালই হল মুক্তি পেলে – বছরের পর বছর যে দলের জন্য বাড়ি ঘর ছাড়া রইলে সেই ঘরে ফিরে গিয়ে মা বাবা ভাই বোন সন্তাদের সময় দেওয়ার পথ উন্মুক্ত করে দিল। যেখানে আওয়ামীলীগ নিজেদের একজন কর্মীর জন্য যে কোন ত্যাগ স্বীকার করতে সদা প্রস্তুত থাকে সেখানে তোমার রাজনীতিকে বিনাশ করে অনেকেই আনন্দের সাগরে খেলে দোলে দোলতেছে। মনে হচ্ছে তোমার পদত্যাগ পত্র প্রচার করে অনেক দিন পর তারা বিজয়ের হাসি হাসতেছে …
কারণ তোমার মত জাবেদদের যারা প্রতিনিয়ত হাত পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেয়, তাদের জন্য কিন্তু বিচার নামক কোন শব্দ আদৌ জন্ম নেইনি। বিচার ও শাস্তি তো শুধু তোমার জন্য তুমি জাবেদের জন্য।
বড়ই কষ্ট হয় এমন এক দলের কর্মী হলে যে দল আদৌ পরিবার হতে পারেনি!রতোমাকে নিয়ে আমার ব্যাথায় অনেকেরই হয়ত গায়ে আগুন জ্বলবে। কারণ ওরা তো দলের মর্মার্ত বুঝে না বুঝার ক্ষমতা ও রাখে না।
ওরা তো তোমাদের বিদায় করতে পারলেই খুশি-ব্যাথায় কাতর হয়ো না প্লিজ! পরিবারের চাওয়াকে অনেকদিন হেলায় ভাসিয়েছে ,,,,
এবার তোমার উপর তাদের অধিকারকে সন্মান দাও। দেখবে তারা কি খুশিই না হবে, সেই সাথে মহান সৃষ্টিকর্তা ও তোমার প্রতি খুশি হবে। যারা তোমাকে বলির পাঠা বানিয়েছে তাদের সবাইকে হাসি মুখে ধন্যবাদ জানাতেই পারো,,,
পরিশেষে তোমার বিদায়কে ব্যাথার চাদরে মাড়িয়ে নিজ গলে রেখে দিলাম । ভাল থেক বলির পাঠা জাবেদ,,, এবার নিজ সন্তানদের মানুষ করার কাজে মনোনিবেশ করো …. পরিবারকে ধ্বংসস্তূপ থেকে টেনে তুলার জন্য শ্রম বিকিয়ে পরিবারের মুখে হাসি ফুটাও।দেখবে ওরা রাজনীতির মত তোমাকে কোন দিন ছুড়ে ফেলবে না ,,,, কোনদিন না,,,,
Some text
ক্যাটাগরি: নাগরিক সাংবাদিকতা, মতামত
[sharethis-inline-buttons]