ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে বাহার মিয়া (৬৪) নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সরকারি সড়ক ও খাল দখলের অভিযোগ ওঠেছে। উপজেলার চুন্টা এসি একাডেমি’র পাশের এ সড়কটি দখল করে দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখল করছেন তিনি। হাওরে যাওয়ার এ সড়কটি দখলে থাকায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ৫০ পরিবারের কৃষক। এ সড়কটি উদ্ধার করে নিরীহ লোকদের কষ্ট দূর করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই এলাকার আল-আমীন নামের এক যুবক।
অভিযোগপত্র ও ভুক্তভোগী সূত্র জানায়, চুন্টা এলাকার ৪৮০১ দাগের জায়গাটি সরকারি সড়ক ও খাল। এক সময় এ জায়গা গুলোকে আঞ্চলিক ভাষায় গোপাট বলা হত। মানুষের চলাচলের পাশাপাশি জমি চাষের জন্য গরু নিয়ে মাঠে যাতায়াত করতো গ্রামের কৃষকরা। কৃষকদের হাওরে যাওয়ার একমাত্র সড়ক এটি। এছাড়া, এ সড়কটি দিয়েই গ্রামের একাংশের লোকজন চুন্টা বাজার, উপজেলা সদর সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করতেন। আর পাশের খালটি দিয়ে গ্রামের পানি নিষ্কাশন হয়ে আসছে যুগযুগ ধরে। কিন্তু গত দেড় ২ বছর আগে হঠাৎ ক্ষমতার দাপুটে এ সড়ক ও খালটি দখল করে বসেন বাহার মিয়া। সেই সাথে দখলে নিয়ে নেন এসি একাডেমির ৩ শতাংশ জায়গা। খালটিকে বড় করার জন্য কৃষকদের সরকারি সড়কটির মাটি কেটে খালের সাথে মিলিয়ে বড় করে নেন। এখন জায়গাটিকে পুকুরে পরিণত করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে সরকারি এ সড়ক ও খালে মাছ চাষ করে টাকা কামাই করছেন বাহার মিয়া। খালটির মাটি কাটায় এসি একাডেমির নির্মাণাধীন বহুতল ভবনটিও এখন হুমকিতে আছে। সেখানকার ভুক্তভোগী একাধিক ব্যক্তি আক্ষেপ করে বলেন, বড় কষ্টে আছি আমরা। ছাপোর হাওরে যাওয়ার একমাত্র সড়কটি দখল করে মাছ চাষ করছেন প্রভাবশালীরা। আমরা অনেক কষ্ট করে অন্যের জায়গার উপরে দিয়ে ঘুরে ফিরে বাড়ি থেকে বের হয়। সড়কটি উদ্ধারের কথা বললে গালমন্দ শুনি। চুন্টা এসি একাডেমির প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, সরকারি সড়ক খালের সাথে বিদ্যালয়ের ৩ শতক জায়গাও রয়েছে। মাছ চাষ থেকে স্কুল কোন টাকা পায় না। সড়কটি উদ্ধার হলে সেখানকার ৫০ পরিবারের লোক প্রাণ খুলে দোয়া করবে। কারণ, সড়কটির জন্য তারা সীমাহীন কষ্টে আছে। অভিযুক্ত বাহার মিয়া সরকারি খালে ও সড়কে মাছ চাষ করার কথা স্বীকার করে বলেন, বুঝেন না। সরকার মাটি দিয়ে বাঁধলে রাস্তা হয়। রাস্তাই আবার খুঁচ হলে খাল হয়। স্কুলের সভাপতি প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলেই মাছ চাষ করছি। এতে কারো কোন সমস্যা হচ্ছে না। সমস্যা হলে ছেড়ে দিব। আর অন্য অভিযোগ গুলো মিথ্যা। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি শেখ মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা এ বিষয়ে কিছুই জানি না। সরকারি খালে মাছ চাষ কে করবে, না করবে আমরা অনুমতি দেওয়ার কে?
সরাইল উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) ফারজানা প্রিয়াঙ্কা লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব।
শেখ মো. ইব্রাহীম, সহ-সম্পাদক
Some text
ক্যাটাগরি: খবর
[sharethis-inline-buttons]