ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার বলিদ্বারা নামক স্থানে রাস্তা সংস্কার কাজের অনিয়মের চিত্র তুলে ধরতে ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও ধারণ করার সময় হেনস্তার স্বীকার হন রাণীশংকৈল প্রেসক্লাব সভাপতি ফারুক হোসেন। গত মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে রাণীশংকৈল থেকে হরিপুর মহাসড়কের বলিদ্বারা নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগের ভিত্তিতে প্রেসক্লাব সভাপতি ও মোহনা টিভির উপজেলা প্রতিনিধি সহ কয়েকজন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে গেলে কাজের অনিয়ম চোখে পড়ে। ঠিক এমন সময় চিত্র ধারণ করতে গেলে বাধা প্রদান করেন ও সাংবাদিককে ধমক দিয়ে কথা বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ সহকারি প্রকৌশলী রাণীশংকৈল উপজেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত রায়হান আলী।
প্রেসক্লাব সভাপতি বলেন, মঙ্গলবার রাণীশংকৈল থেকে হরিপুর মহাসড়ক সংস্কার কাজের কার্পেটিংয়ের কাজ চলছিল। এ সময় কার্পেটিংয়ে নিম্নমানের এবং বড় বড় পাথর দিয়ে কার্পেটিংয়ের কাজ চলছে বলে আমার মুঠোফোনে স্থানীয়দের অভিযোগ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যায়।
তিনি আরও বলেন, মোবাইলে অভিযোগ পাওয়ার পর সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে উপ সহকারী প্রকৌশলী রায়হান আলীর সামনেই নিম্নমানের পাথর ও বড় বড় পাথর দিয়ে কার্পেটিং চলছে এবং উপরে নিয়মানুযায়ী পাথর দিয়ে রোলার দিয়ে ফিনিশিং দিচ্ছে। যদিও বড় ছোট পাথরের মিশ্রণে এবং রোলারে তা সমান না হয়ে ছোট ছোট গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। এমন অনিয়মের চিত্র ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও ধারণ করতে গেলে ক্যামেরা আটকে ধরেন ওই প্রকৌশলী এবং ধমকের সুরে কথা বলেন।
পরে সড়কের সংস্কার কাজের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইলে এ সময় তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশসহ সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন, উপ সহকারী প্রকৌশলী রায়হান আলী।
সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্র মতে- মোজাহার এন্টারপ্রাইজ নামক একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রাণীশংকৈল জিরো পয়েন্ট থেকে হরিপুর উপজেলার জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত মোট আটত্রিশ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮ কিলোমিটার সড়ক সম্প্রসারণসহ সংস্কার করার চুক্তি করেছেন, তারই কাজ চলছিল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকৌশলী রায়হান আলী মুঠোফোনে প্রতিনিধিকে বলেন, রাস্তার কাজ যেদিকে সমাপ্ত হয়েছে সেদিকে উনি (সাংবাদিককে) ছবি না তুলে চলমান রাস্তার কাজের ছবি ধারণ করছিলেন। আমি ক্যামেরা ধরিনি। শুধু উনাকে (সাংবাদিককে) বলেছি যেদিকে কাজ সম্পন্ন হয়েছে, ঐদিকের ছবি ধারণ করতে বলে।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস আগে তবে কাজে কোনো অনিয়ম করছি না আমরা। তাছাড়া আমি সার্বক্ষণিক দেখাশোনা করে যাচ্ছি। ঠাকুরগাঁও সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মুনসুরুল আজিজ বলেন, সাংবাদিকের ক্যামেরা আটকে ধরার ক্ষমতা কারো নেই। আর যদি রাস্তা সম্পর্কিত কোনো তথ্যের প্রয়োজন হয়। আপনি জেলা অফিস থেকে নিতে পারবেন। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাণীশংকৈল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আকাশ। এ ব্যাপারে রাণীশংকৈল প্রেসক্লাবের প্রচার সম্পাদক ও ভোরের ডাক প্রত্রিকার প্রতিনিধি এবং রাণীশংকৈল অনলাইন জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম শাওনসহ সকল সাংবাদিকরা বলেন, প্রকৌশলীর অনৈতিক, উল্লেখিত ঘটনার জন্য সভাপতি কাছে ক্ষমা না চাইলে আমরা কঠোর কর্মসূচী গ্রহণ করবো।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Some text
ক্যাটাগরি: নাগরিক সাংবাদিকতা, মতামত
[sharethis-inline-buttons]