ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের একাংশের সংবাদ সম্মেলনে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বাধা দিয়েছে পুলিশ। এ কারণে তড়িঘড়ি করে সংবাদ সম্মেলন শেষ করতে বাধ্য হন আয়োজকরা।
রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট লুৎফুল হাই সাচ্চুর মৌলভীপাড়ার বাসভবনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ কর্তব্যরত সাংবাদিকদের সঙ্গেও অশোভন আচরণ করে।
সম্প্রতি জেলার বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ৫ নেতাকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে বহিষ্কারের প্রস্তাবের প্রতিবাদে গতকাল দুপুর ১২টায় জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি লুৎফুল হাই সাচ্চুর বাসভবন প্রাঙ্গণে ওই ৫ নেতার পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে দল থেকে বহিষ্কারের প্রস্তাবকৃত নেতা আমানুল হক সেন্টু লিখিত বক্তব্য পাঠ করার সময় সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ.বি.এম মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাধা প্রদান করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলন আহ্বানকারীদের তুমুল বাকবিতন্ডা হয়। পুলিশের বাধার মুখে তড়িঘড়ি করে সংবাদ সম্মেলন শেষ করতে বাধ্য হন আয়োজকরা। সংবাদ সম্মেলন চলাকালে সদর থানার এ এস আই শিমুল পারভেজ সাংবাদিকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সচিব মিজানুর রহমান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র হেলাল উদ্দিন, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিনারা আলম, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি কাউসার আহমেদ প্রমুখ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত জেলা পরিষদ নির্বাচন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরোধিতা করায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল আলম, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আমানুল হক সেন্টু, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মো. হেলাল উদ্দিন, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মিনারা আলম ও জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি কাউছার আলমকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানায় দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
সদ্য অনুষ্ঠিত জেলার বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে নেতারা এই ৫ নেতার বহিষ্কার দাবি করে কাউন্সিলে সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাব গ্রহণ করে ও কাউন্সিলদের সুপারিশ জেলা আওয়ামী লীগের কাছে প্রেরণ করে।
এর আগেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনোত্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় ওই ৫ নেতাকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কারের জন্য সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাব করা হয়। এই ৫ নেতার মধ্যে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল আলম বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, একই সময়ে এবং একই স্থানে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলনের কর্মসূচি ঘোষণা করায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে অবনতি না হয় সেজন্য সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে পুলিশের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।
এ ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ.বি.এম মশিউজ্জামান বলেন, একই সময়ে ও একই স্থানে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক রাখতে সেখানে তারা গিয়েছিলেন।
Some text
ক্যাটাগরি: মতামত
[sharethis-inline-buttons]