শুক্রবার দুপুর ১২:২২, ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ. ১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ ইং

বিজয়নগর নিদারাবাদ স্কুলে সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ

৯৩০ বার পড়া হয়েছে
মন্তব্য ০ টি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার নিদারাবাদ ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক কামরুল হাসান ওরফে রোশনের বিরুদ্ধে দশম শ্রেণীর ছাত্রীকে শারীরিক প্রহারের অভিযোগ উঠেছে। এ  ঘটনায় ছাত্রীর পিতা অত্র উপজেলার হরষপুর গ্রামের বাসিন্দা ইনু মিয়া বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট এক অভিযোগপত্র দায়ের করেছেন। বিগত ২-৩ মাস পূর্বে দশমশ্রেণীর ছাত্রী সালমা বেগমকে বিদ্যালয়ে অকারণে শারীরিকভাবে প্রহার করলে ছাত্রীর পিতা উক্ত বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ও কমিটির নিকট বিচারপ্রার্থী হলে কমিটি ও প্রধান শিক্ষক বিষয়টি প্রাথমিকভাবে সমাধান করে দেন।

পরে আবারো একই ঘটনা ঘটলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি খতিয়ে দেখে সঠিক বিচার করার দায়িত্ব দিলে সে দায়িত্ব পালন না করে সময় ক্ষেপন করলে সহকারী শিক্ষক কামরুল হাসান রোশন আরো বেপরোয়া হয়ে যায়। প্রধান শিক্ষকের নিকট বিচারপ্রার্থী হওয়ার কারণে সহকারি শিক্ষক কামরুল হাসান আরো বেশি উত্তেজিত ও ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন এই ছাত্রী কিভাবে পড়াশুনা করে তা তিনি দেখে নিবেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান মুহাম্মদ আজমল এর সাথে অভিযুক্ত শিক্ষকের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকায় এবং ওনার আশ্রয় ও প্রশয়ের গত ৭ সেপ্টেম্বর ভোক্তভোগী ছাত্রীসহ ৬জন শিক্ষার্থী একটি বেঞ্চে বসা অবস্থায় এই শিক্ষক পাশে বসা ০৫জনকে উঠাইয়া অন্যত্র নিয়া যায় এবং একা বসিয়ে রেখে নানান আপত্তিকর উসকানিমুলক কথাবার্তা বলে হয়রানি করে।

এবং ছাত্রীর পিতার বাড়িতে কাজ করতে আসা রাজমিস্ত্রি জামির মিয়া গত ১৫ নভেম্বর বিদ্যালয়ের মাঠে গরু চড়াইতে আসলে শিক্ষক কামরুল হাসান তাকে ডেকে নিয়ে বলে “তুই যার বাড়িতে কাজ করছ সে আমার বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষক ও কমিটির নিকট বিচার দিয়া আমার কি করতে পারছে? প্রধান শিক্ষক ও কমিটি কি আমাকে কিছু করতে পারবে? তুই তাকে জানাইয়া দিস আমি দেখে নিব তার মেয়ে কিভাবে পড়াশুনা করে। আমি এমন কাজ করমু যাতে তার মেয়ে স্কুলে আসা বন্ধ করে দেয়।” এমতাবস্থায় ছাত্রীর পিতা ইনু মিয়া মেয়ের শিক্ষা জীবন নিয়ে আতংকিত আছেন, কবে না জানি মেয়ের পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যায়। তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযুক্ত শিক্ষক কামরুল হাসান ওরপে রোশনের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহন এবং স্বাভাবিকভাবে মেয়ের পড়াশুনা করার নিশ্চিয়তা চান।

এ ব্যাপারে অভিযোগকারী মোঃ ইনু মিয়া বলেন আমি গত ২/৩ মাস আগে স্কুল কমিটি ও প্রধান শিক্ষকের কাছে মৌখিক অভিযোগ করি। তখন তারা সেটা দেখে দেন। এর কিছু দিন পরে আবার একেই ঘটনা ঘটলে আমি কমিটি ও প্রধান শিক্ষককে জানাই, তখন কমিটি প্রধান শিক্ষককে দায়িত্ব দেন যাতে ভালভাবে খোঁজখবর নিয়ে সঠিক বিচার করে দেন। কিন্তু তারপর থেকে প্রধান শিক্ষকের কাছে আমি কোন বিচার পাইনি। শুধু আমার সাথে তালবাহানা করে গেছে প্রধান শিক্ষক। এর এই মধ্যে আমার বাড়িতে কাজ করতে যাওয়া রাজমিস্ত্রি জমির মিয়ার মাধ্যম আমাকে ও আমার মেয়েকে হুমকি দেয় সেই অভিযুক্ত শিক্ষক কামরুল হাসান রোশন। আমার মেয়ে কিভাবে স্কুলে পড়ে দেখে নিবে বলেও সে জানায়। তাই আমি বাধ্য হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর বরাবর লিখিত অভিযোগ করি। সেই অভিযোগ রাসেল স্যার নামে একজন তদন্ত করবে বলে জানতে পারি। আমাকে জানানো হয় আমাকে ২/১ দিন সময় দিয়ে সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করতে যাবে। কিন্তু গত বুধবার আনুমানিক দুপুর ১২ টার দিকে আমাকে ফোনে জানায় রাসেল স্যার স্কুলে আছে। আমি ও আমার সাক্ষী নিয়ে তাড়াতাড়ি স্কুলে যেতে। তখন আমি তাড়াহুড়া করে স্কুলে গিয়ে দেখি তদন্তকারী কর্মকতা ও প্রধান শিক্ষক গভীর আলোচনায় ব্যস্ত। তখন আমার, আমার মেয়ে,রাজমিস্ত্রি জমির মিয়ার লিখিত বক্তব্য চাইলে আমার মেয়ে ও রাজমিস্ত্রি জমির মিয়ার বক্তব্য নিয়ে যায়। আমি বক্তব্য না দিয়ে সময় চাইলে বলেন সম্ভব হলে এখন শেষ করব না হয় আবার আসতে হলে আসব। অপর দিকে প্রধান শিক্ষক ও অভিযুক্ত শিক্ষক কে তাদের লিখিত বক্তব্য নিয়ে সময় করে উপজেলায় যাওয়ার কথা বলে সে চলে যায়। তাই আমি এই তদন্ত নিয়ে চিন্তায় আছি বাদীকে প্রেসার দিয়ে বক্তব্য নিয়ে গেলে আর আসামীকে সময় দিয়ে গেল।

এব্যাপারে প্রধান শিক্ষক আ হ ম আজমল বলেন, আমাকে কমিটি দায়িত্ব দিয়েছিল ঠিক আছে। কিন্তু ইনু মিয়া আমার অপেক্ষা না করে উপজেলায় অভিযোগ নিয়ে গেছে। তখন দেড় মাসে কি সময় হয়নি জানতে চাইলে প্রতুত্তরে বলেন আমি অফিসিয়াল কাজে ব্যস্ত ছিলাম। শিক্ষককে আশ্রয় দিচ্ছেন এমন অভিযোগের উত্তরে বলেন আশ্রয় দিচ্ছি সেটা সঠিক নয়,তবে আদর, বিশ্বাস, ছাড় দিলে অনেকেই সেটাকে আশ্রয় প্রশয় মনে করে।এখন থেকে আমি কটুর হবো।

নিদারাবাদ ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আশেক মওলা কাইজার বলেন, আমরা প্রধান শিক্ষককে দায়িত্ব দিয়েছিলাম যাতে সঠিক ভাবে এই বিষয়টা সমাধান করে। তিনি কেন সমাধান করেনি সেটা আমার জানা নেই । যদি তিনি দায়িত্বটি সঠিকভাবে পালন করতে না পারত তাহলে আমাদেরকে জানালে আমরা দেখতাম। কিন্তু তিনি আমাদেরকে কিছুই জানাইনি। প্রধান শিক্ষককের এখানে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সেটাকে আপনি কি বলবেন জানতে চাইলে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বলেন, যেহেতু এই বিষয়টি লিখিত ভাবে অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে গেছে তাই আমি বলব সঠিক তদন্তপূর্বক যে দোষী হবে তার কঠিন বিচার হোক। যাতে করে আর যেন এমন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। এব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা মেহের নিগার বলেন অভিযোগটি পেয়েছি,তদন্ত চলছে।আশা করি সঠিক বিচার পাবে।

Some text

ক্যাটাগরি: খবর

[sharethis-inline-buttons]

Leave a Reply

আমি প্রবাসী অ্যাপস দিয়ে ভ্যাকসিন…

লঞ্চে যৌন হয়রানি