দ্বিগুণিতক কবি
মোহামম্দ সাইফুল ইসলাম
কি পাঠক নাম দেখে চমকে উঠলেন নাকি? ভাবছেন, জীবনে কবির কত উপাধি দেখলামঃ বিদ্রোহী কবি, রেনেসাঁর কবি, দ্রোহের কবি, ছন্দের যাদুকর, অমিত্রক্ষর ছন্দের কবি, পল্লী কবি, ইত্যাদি ইত্যাদি… বিবর্তনের ধারায় হয়ে গেলো স্বদেশ কবি, সাধন কবি, প্রাকৃতজন কবি, অতি প্রাকৃতজন কবি অারো কত কি?
~~~ ইদানিং শুরু হয়েছে প্রতিবাদি কবি, বাঁশিওয়ালা কবি, উদাশ কবি, কবে অাবার দেখবেন সফল কবি, ব্যর্থ কবি, উদাও কবি!!!
উদাও কবি শুনে অবাক হবার কি অাছে। এটা ডিজিটাল যুগের খেলা। যখন ইচ্ছে তখন অন লাইনে অাসবেন, গ্রুপ করবেন, গ্রুপ ভাঙ্গবেন, বানিজ্য করবেন, বানিজ্য গুটাবেন। অাবার হঠাৎ উদাও হয়ে যাবেন। মন চাইলে নতুন নামে স্বরূপে নামে বেনামে অার্বিভূত হবেন। অাবার এক ঝাঁক নতুন প্রজন্মকে স্বপ্ন দেখাবেন। ওদের সর্বনাশ করবেন। এভাবে ফুড়ুৎ করে অাসবেন, ফুড়ুৎ করে চলে যাবেন! ফুড়ুৎ, ফুড়ুৎ, ~~~
কথা শুনে পাঠক ভাবছেন অামি ফুয়াদের গল্প বলা শুনাচিছ! না ঠিক তা না। গল্প এখনো শুরু করিনি।
চলুন তাহলে গল্পে যাওয়া যাক।
ছোট বেলা থেকেই ছেলেটা ছিল একরোখা এবং উদাসী প্রকৃতির। অাইনস্টাইনের মত কোনো কিছুর দিকে হা করে তাকিয়ে থাকতো অার মুখ দিয়ে লেলা পড়তো। পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত কথা ফুটেনি। বাবা মা ধরে নিয়েছিলেন বোবাই হবে। কত কবিরাজ কত দাওয়াই কিছুতেই কিছু হলো না।
একদিন সকালে বাবা মা ঘুমিয়ে অাছেন। হঠাৎ কার যেনো কথা শুনে মায়ের ঘুম ভেঙ্গে যায়। তাকিয়ে দেখে মা তো হতবাক! চিৎকার দিয়ে স্বামীকে জাগিয়ে বললো দেখো দেখো তোমার ছেলে কথা বলছে। ততক্ষনে ছেলেটি অনবরত বাবা-মা, বাবা-মা, বাবা বলে যাচ্ছে। ছেলের কান্ড দেখে বাবার কথাই বন্ধ হয়ে গেলো। শুধু নিরবে অশ্রু গড়িয়ে পড়লো।
লেলা পড়া ছেলেটি কখন যে যুবক হলো বাবা মা টেরও পেলো না। টের পেলো যখন তার কবিতা লেখার এক অদম্য প্রচেষ্টা প্রকাশ পেলো। কবি হবার শখে ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপের বড় বড় কবিদের পিছনে ঘুরাই ছিল তার নেশা। সুযোগে তাকে সুযোগবাদীরা কাজে লাগাতো।অনেকের নিকট থেকে প্রতারণার শিকার হলো সে । নিরাশ হয়ে ধর্ণা দিল সাধন কবির কাছে। সাধন কবি তাকে বললেন, “দ্বিগুণিতক কবি হও, মাথা খাটাও।” কিভাবে জানতে চাইলে অার কোনো কথাই সাধন কবি তাকে বলতে রাজি হলেন না। নিরুপায় হয়ে ফিরে এলো।
কবি হবার অদম্য স্পৃহা তার অারো বেড়ে গেলো। শয়নে স্বপনে নিশি জাগরণে একটাই তার ভাবনা কবি হওয়া চাই। ভাবতে ভাবতে হঠাৎ তার মাথা খুলে গেলো। সাধন কবির কথার তাৎপর্য পেয়ে গেলো।
শুরু হলো নতুন করে পথ চলা। এ পথে চলতে সে একটা গাণিতিক সূত্রকে কাজে লাগালো।
সূত্রটি হলো S=a×(r^n-1)÷r-1 যেখানে, S= যোগফল a= প্রথম পদ (এখানে a=1) r=সাধারণ অনুপাত (এখানে r=2) n= পদ সংখ্যা (এখানে n=20)
(চলমান)
দ্বিগুণিতক কবি (পর্ব২)
মোহামম্দ সাইফুল ইসলাম
ছেলেটিকে মা ডাকতেন অণু, বাবা ডাকতেন তনু।ি যাক, অণুর চিন্তার জগৎটা অণুর মতই কাজ করাূরু করলো। হে হিসাব করে বের করলো যদি অামি দুজন পোক্ত মোটিভেটর কবিকে অামার মুরিদ বানাতে পারি, অার তাদেরকে যথার্থ প্রশিক্ষণ দিয়ে যোগ্য করে তুলতে পারি তাহলে অামার পরিকল্পনা সার্থক। তাদেরকে দিয়ে একবার কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যক্রম চলতে থাকবে এবং অল্পদিনে অামি অনেক টাকার মালিক বনে যাবো। এটা অনেকটা এম এল এম পদ্ধতির অনুরূপ কাজ করবে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী সে একটি অন লাইন পত্রিকার সাথে সম্পর্ক গাঢ় করলো। এক পর্যায়ে তার একটি কবিতা অন লাইন পত্রিকাটি ছাপিয়ে দেয়। কাস কেল্লা ফতে। তার বন্ধুমহল হুমড়ি খেয়ে পড়লো তার নিকট থেকে অানুকূল্য পাওয়ার জন্য।
সে প্রথম দিকে বিনা শর্তে সবার উপকার করা শুরু করলো। দেখতে না দেখতে অণুর বন্ধু লিষ্টও ৫০০০ এর কোটায় পৌঁছে গেলো।
অণু এখন তরুণ সমাজে অণু গুরু বনে গেলো।
সূক্ষ পরিকল্পনা মাফিক একটা নির্দিষ্ট ছকে তার কাজ এগিয়ে গেলো লোক চক্ষুর অন্তরালে।
ইতোমধ্যে অণু দুজন বিশ্বাসযোগ্য বন্ধু পেয়ে গেলো যারা অনুর অন্ধ অনুসারী হয়ে গেলো। তারা হলো এখন ১+২, মোট ৩ জন। অণু কবিতা ছাপনোর জন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে হাদিয়ার নিলো ২০০ টাকা করে। কবিতা ছাপাতে পত্রিতাকে দিলো ১০০ টাকা করে। অণুর নেট অায় হলো ২০০ টাকা। পাশাপশি অণুর ফলোয়ারের সংখ্যাও বেড়ে গেলো।(চলমান)
Some text
ক্যাটাগরি: মতামত
[sharethis-inline-buttons]