পূর্ব প্রকাশের পর…
দ্বিতীয় যে অাকাঙ্ক্ষা মানুষকে কুড়ে কুড়ে খায় সেটি হলো, সম্পত্তি অর্জনের
অাকাঙ্ক্ষা। এটিকে বলা যায় পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থার প্রাথমিক ভিত্তি। এটি প্রতিটি মানুষের ভিতর লুকায়িত প্রচ্ছন্ন বা প্রকাশিত স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। জন্মের পর থেকেই প্রতিটি মানুষের মনে জাগ্রত হয়।
সম্পত্তির ধারণা জন্মানোর অাগেই সম্পত্তি অর্জনের অাগ্রহ জন্মায়। শিশুকালে তার রূপ থাকে একটু ভিন্নভাবে। তখন যে জিনিস সুন্দর লাগে তাকেই শিশু নিজের করে পেতে চায়। এটা পরিবারে ভাই বোনের অসম প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শুরু হয়। যদিও তখন স্বার্থপরতা বা অাত্মকেন্দ্রিকতা প্রবলভাবে মাথা ছাড়া দেয় না।
পারিবারিক পরিবেশের ভিন্নতার কারণে কোনো কোনো শিশুর মধ্যে তা সুপ্ত বা জাগ্রত থাকে। জেনেটিক বৈশিষ্ট্য তার ধারক বাহক হলেও পরিবেশগত ক্রিয়াকলাপ দ্বারা শিশুর এ বৈশিষ্ট্য বিকশিত হয়। কিছু বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণরূপে বংশগতির ধারক বাহক হিসেবে সুপ্ত বা বিকশিত হয়। সেটাকে সামাজিক মিথস্ক্রিয়ার ফলাফল বলার সুযোগ থাকে না। যেমন একটি হাঁসের বাচ্চার সাঁতার কাটার জন্য কোনো ট্রেনিংয়ের প্রয়োজন হয় না। এটা নিতান্তই জেনেটিক বৈশিষ্ট্য।
যাই হোক, সম্পত্তি অর্জনের অাকাঙ্ক্ষা নিশ্চিতভাবে জেনেটিক বৈশিষ্ট্য দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বলার অবাধ সুযোগ নেই। সামাজিক মিথস্ক্রিয়ায় এটি নিয়স্ত্রিত করা যায়। সমাজ চাইলে সম্পত্তি সম্পদ দুটোকেই মোটামুটি ব্যালেন্স করে সবার মাঝে সমবন্টন না হলেও সুষম বন্টনে রাখতে পারে। শুধু প্রয়োজন, একটি কার্যকর সিস্টেম ডেভেলপ করা।
সারা দুনিয়ার সমস্ত সম্পত্তির এক চতুর্থাংশ সম্পদ মাত্র ৫০ জনের হাতে এখন কুক্ষিগত। এর কি কোনো মনস্তাত্ত্বিক বা সামাজিক প্রয়োজন অবশ্যম্ভাবী ছিল? মৃত্যুর পরে এ সম্পদ ঐ ব্যক্তির কি কাজে অাসবে? এ প্রশ্নটি অাজ বিশ্ব মানবতার বিবেকের প্রশ্ন নয় কি? যে বিশ্ব সমাজ ব্যবস্থায় ৩০০ কোটিরও বেশি লোক ক্ষুধা, দারিদ্র্য, জ্বড়ায় জর্জরিত, সে সমাজ সভ্যতার ধারক বাহক সেজে নিজের বিবেকের কাছে কি জবাব দেবে?
চলবে…
মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম : নিউইয়র্ক
Some text
ক্যাটাগরি: মতামত
[sharethis-inline-buttons]