পূর্ব প্রকাশের পর…
সামাজিক বলয়ে প্রতিপত্তি অর্জনের চাহিদা অনেক বেশি তীব্রতর হয়। পাশাপাশি এর অনেক শাখা প্রশাখাও বিস্তৃত হয়। এ সময় ক্ষমতা অর্জনের এক অদম্য অাকাঙ্খা কারো কারো মনে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। সমাজের সব মানুষকে অাপন ক্ষমতা বলয়ের মধ্যে এনে শাসন করার তীব্র বাসনা কাউকে কাউকে পাগলপারা করে। প্রতিপত্তি লাভের এ অাকাঙ্খার সাথে বহুবিধ প্রাপ্তি যুক্ত হয়।
সমাজে নেতৃত্ব দেওয়ার গুণাবলীসম্পন্ন ব্যক্তিগুলো অন্যদেরকে নিজের পরিমণ্ডলে নিয়ে অাসে। সামাজিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ায় এক সময় প্রচ্ছন্ন থেকে প্রকাশ্য প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্ধিতা শুরু হয়ে যায়। তার সাথে অর্থপ্রাপ্তির নানারকম উৎস যুক্ত হয়ে এ প্রতিযোগিতাকে এক জটিল সামাজিক জালে অাবদ্ধ করে। সমাজে ক্রমান্বয়ে নানা রকম দল ও উপদল সৃষ্টি হয় যা থেকে কালক্রমে সামাজিক অশান্তি বা বিশৃঙ্খলার সূত্রপাত ঘটে।
সামাজিক ভিন্নতার কারণে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার ধরণও অালাদা হয়। এভাবে সকলেরে মনের অজান্তে সামাজিক পোলারাইজেশন হয় পড়ে। ফলশ্রুতিতে সমাজ ভাঙ্গা-গড়ার একটা খেলা চলতে থাকে। তবে সব সমাজে একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য দৃশ্যমান হয়। সেটা হলো শ্রেণী বৈষম্য। এ শ্রেণী বৈষম্য মূলত সৃষ্টি হয় অসম অর্থনৈতিক সক্ষমতার উপর ভিত্তি করে। সমাজের কর্তৃত্ব স্বচছলতার মানদন্ডে বিচার্য বলে এরূপ সামাজিক ঐতিহ্য গড়ে উঠে। অামরা সামাজিক এ সিলছিলায় এতটাই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি যে এ বৈষম্যটাকে সামাজিক বিধিবদ্ধ নিয়ম বলে অন্তরে গেঁথে নিয়েছি। অধর্মীয় অনেক প্রথাকেও ধর্মীয় প্রথায় রূপান্তরিত করে সমাজ শাসনের হাতিয়ারে পরিণত করেছি।
যে সমাজে শিক্ষার হার কম সে সমাজে অনেক কুসংস্কার সংস্কারে পরিণত হয়। অার সমাজের বেশির ভাগ মানুষ সেটাকে সামাজিক নিয়ম বলে মেনে নেয়। ফলে ঐ সমাজের নের্তৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ সমাজটাতে একচ্ছত্র অাধিপত্যও প্রতিপত্তি বিস্তার করে। সমাজের ঐ সুবিধাভোগীরা পাকাপোক্ত প্রতিপত্তি অর্জন করায় সমাজটাকে তাদের ইচ্ছের অাদলে নিয়ন্ত্রণ করে। কালক্রমে সমাজে প্রভাবশালী পরিবারের উত্থান ঘটে। বংশ পরম্পরায় ঐ পরিবারগুলো সমাজকে নিজেদের বলয়ে রেখে নিয়ন্ত্রণ ও শাসন করার কৌশল অবলম্বন করে।
চলবে…
মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম : নিউইয়র্ক
Some text
ক্যাটাগরি: মতামত
[sharethis-inline-buttons]