মানব ইতিহাসের ঊষালগ্ন, বিশেষ করে যখন থেকে সমাজের গোড়া পত্তন হলো তখন থেকেই পুঁজিবাদ বিশ্ব সমাজে জেঁকে বসেছিল। সময়ের বিবর্তনে, সামাজিক পরিবর্তনে শুধুমাত্র এর ধরণে অাংশিক পরিবর্তন এসেছিল। পুঁজিবাদী ব্যবস্থার প্রভাব এতটাই প্রকট যে, অামরা কেউ কেউ সজ্ঞানে, কেউ কেউ মনের অজান্তে, কেউবা জ্ঞানের দৈন্যতার কারণে পুজিবাদকে সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাই। ধর্মীয় মতবাদগুলোর মধ্যে ইসলামিজম অর্থনৈতিক সাম্যের একটা জাকাতভিত্তিক বব্যবস্থার উপস্থাপন করেছিল যা খেলাফত ও পরবর্তীতে খলিফা উমর ইবনে অাবুল অাজিজের(দ্বিতীয় উমর নামে খ্যাত) অামলে কার্যকরভাবে প্রতীয়মান হয়েছিল। যদিও ধনতান্ত্রিক বৈষম্য কিছুটা বিরাজমান ছিল। পুরো ব্যবস্থাকে পুঁজিবাদ মুক্ত বলা যাবে কিনা তা প্রশ্নের উর্ধ্বে নয়।
অষ্টাদশ শতাব্দী থেকে বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত সময়কালে নানা বৈষম্য থেকে মুক্তি পেতে বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক মতবাদ বিশ্ব সমাজ ব্যবস্থাকে নাড়া দেয়। এর মধ্যে কার্ল মার্ক্সের দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ যুব সমাজের মননে প্রবলভাবে নাড়া দেয়। ফলশ্রুতিতে ১৯১৭ সালে তৎকালিন সেভিয়েত ইউনিয়নে লেলিনের নেতৃত্বে অক্টোবর বিপ্লব সাধিত হয়। ধারাবাহিকতায় সমাজতন্ত্রের ভিত রচিত হয়। এশিয়ার মধ্যে গনচীনে মাও সে তুঙের নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভিত রচিত হয়। কিন্তু ১৯২৪ সালে স্টালিনের নেতৃত্বে সোভিয়েত ইউনিয়নে সংস্কার সাধিত হয়। অতিমাত্রায় যান্ত্রিক এই তত্ত্ব বেশী দিন স্থায়ী হয়নি। কালক্রমে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীন পুনরায় পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থার প্রভাব বলয়ে চলে অাসে বলা যায়।
পুঁজিবাদের ধারক ও বাহক যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেনে সম্পদ কেন্দ্রীভূত হবার পরও বেকারত্ব এবং অভাব অনটনের তাড়নায় বেশ কিছু মানুষকে দারিদ্র্য সীমার নিচে জীবন যাপন করতে হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত দেশগুলোর চিত্রও কম বেশি একই রকম বলা যায়। (চলবে)
(পূর্ব প্রকাশের পর)
তন্ত্রমন্ত্রের
যাঁতাকলে
পিষ্ট মানবাত্মা
(পর্ব ২)
মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম
রচনাকালঃ২৭/০২/২০১৯
প্রকাশকালঃ ০২/০৩/২০১৯
মানুষের স্বভাবগত তিনটি মৌল অাকাঙ্খা হচ্ছে যৌন সম্ভোগের অাকাঙ্খা, প্রতিপত্তি অর্জনের অাকাঙ্খা এবং সম্পত্তি লাভের অাকাঙ্খা। এ তিনটি অাকাঙ্খার সীমানা নির্ধারণ করা বড়ই কঠিন। কারো কারো মতে অবাধ যৌনতা(Free sex) দিয়ে যৌনতার অাকাঙ্খাকে নিবারণ বা প্রশমিত (ভিন্ন মত রয়েছে) করা যেতে পারে, কিন্তু সোটও নিশ্চিতভাবে বলা মুশকিল, কারণ দৈহিক বা জৈবিক চাহিদা সময়ের ব্যবধানে স্তিমিত হলেও মানসিক যৌনতার চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করা বড়ই কঠিন। সামাজিক বা ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ টনিকরূপে কার্যকর হয় যদিও চূড়ান্ত(ultimate) ট্রিটমেন্ট বলার অবকাশ কম। কারণ মানব মনের বিচিত্র ও বিক্ষিপ্ত চিন্তা মূহুর্তের ব্যবধানে পরিবর্তিত হয়।
অাবার ভৌগলিক ও পরিবেশগত কারণেও এ অাকাঙ্খার চাহিদা কম বেশি হয়। অাইনের শাসন কঠোরভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে এ অাকাঙ্খা অবদমিত থাকে। অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলো অপেক্ষা উন্নত দেশগুলোতে অাইনের কঠোর অনুশাসনের কারণে এ অাকাঙ্খা নিয়ন্ত্রিত থাকে।যদিও উন্নত দেশগুলোতে উভয় পক্ষের সন্মতিতে যৌনতা স্বীকৃত, এবং বিবাহপূর্ব সম্পর্ক এবং সন্তান জন্মদান ডাল ভাতের মতো নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার ও সমাজ স্বীকৃত। সামাজিক সুরক্ষা সুদৃঢ় হওয়া, এবং রাষ্্রীয় নিরাপত্তার কারণে উন্নত দেশগুণোর চিত্র ভিন্ন। অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক ও সামাজিক শৃঙ্খলা সুবিন্যস্ত ও সুদৃঢ় না হবার কারণে বাহ্যিকভাবে যৌনতার প্রভাব নিয়ন্ত্রিত মনে হলেও পর্দার অন্তরালের চিত্র ভয়াবহ। যাই হোক যৌনতার অাকাঙ্খা কম বেশি সর্বত্র অনস্বীকার্য।(চলবে)
(পূর্ব প্রকাশের পর)
তন্ত্রমন্ত্রের
যাঁতাকলে
পিষ্ট মানবাত্মা
(পর্ব )৩
মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম
রচনাকালঃ২৭/০২/২০১৯
প্রকাশকালঃ ০২/০৩/২০১৯
দ্বিতীয় যে অাকাঙ্খা মানুষকে
কুড়ে
কুড়ে
খায় সেটি হলো সম্পত্তি অর্জনের অাকাঙ্খা।
এটিকে বলা
যায় পুঁজিবাদী সমাজ
ব্যবস্থার প্রাথমিক ভিত্তি।
এটি
প্রতিটি মানুষের ভিতর
লুকায়িত
প্রচ্ছন্ন বা প্রকাশিত স্বভাবজাত
বৈশিষ্ট্য।
জন্মের
পর থেকেই প্রতিটি মানুষের মনে জাগ্রত
হয়। সম্পত্তির ধারনা
জন্মানোর
অাগেই
সম্পত্তি
অর্জনের
অাগ্রহ জন্মায়।
শিশুকালে
তার রূপ
থাকে
একটু ভিন্নভাবে।তখন যে
জিনিস
সুন্দর লাগে তাকেই শিশু
নিজের
করে
পেতে
চায়। এটা
পরিবারে ভাই
বোনের
অসম প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শুরু
হয়। যদিও তখন
স্বার্থপরতা বা অাত্মকেন্দ্রিকতা
প্রবলভাবে
মাথা ছাড়া
দেয় না।
পারিবারিক পরিবেশের ভিন্নতার
কারণে
কোনো
কোনো
শিশুর মধ্যে তা
সুপ্ত বা
জাগ্রত থাকে। জেনেটিক
বৈশিষ্ট্য
তার ধারক
বাহক হলেও পরিবেশগত
ক্রিয়াকলাপ দ্বারা শিশুর এ
বৈশিষ্ট্য
বিকশিত
হয়। কিছু
বৈশিষ্ট্য
সম্পূর্ণরূপে বংশগতির ধারক
বাহক হিসেবে
সুপ্ত বা
বিকশিত
হয়। সেটাকে
সামাজিক
মিথক্সিক্রিয়ার ফলাফল
বলার সুযোগ থাকে না।
যেমন একটি হাঁসের বাচ্চার সাঁতার
কাটার জন্য
কোনো
ট্রেনিংয়ের প্রয়োজন হয়
না। এটা
নিতান্তই জেনেটিক
বৈশিষ্ট্য।
যাই হোক সম্পত্তি অর্জনের অাকাঙ্খা নিশ্চিতভাবে জেনেটিক বৈশিষ্ট্য দ্বারা নিয়ন্ত্রিত বলার অবাধ সুযোগ নেই, সামাজিক মিথক্সিক্রিয়ায় এটি নিয়স্ত্রিত করা যায়। সমাজ চাইলে সম্পত্তি সম্পদ দুটোকেই মোটামুটি ব্যালেন্স করে সবার মাঝে সমবন্টন না হলেও সুষম বন্টনে রাখতে পারে। শুধু প্রয়োজন একটি কার্যকর সিস্টেম ডেভেলপ করা। সারা দুনিয়ার সমস্ত সম্পত্তির এক চতুর্থাংশ সম্পদ মাত্র ৫০ জনের হাতে এখন কুক্ষিগত। এর কি কোনো মনস্তাত্ত্বিক বা সামাজিক প্রয়োজন অবশ্যম্ভাবী ছিল? মৃত্যুর পরে এ সম্পদ ঐ ব্যক্তির কি কাজে অাসবে? এ প্রশ্নটি অাজ বিশ্ব মানবতার বিবেকের প্রশ্ন নয় কি? যে বিশ্ব সমাজ ব্যবস্থায় ৩০০ কোটিরও বেশি লোক ক্ষুধা, দারিদ্র্য, জ্বরায় জর্জরিত, সে সমাজ সভ্যতার ধারক বাহক সেজে নিজের বিবেকের কাছে কি জবাব দেবে?(চলবে)
তন্ত্রমন্ত্রের যাঁতাকলে পিষ্ট
মানবাত্মা (পর্ব ৪)
রচনায়ঃ মোহাম্মদ
সাইফুল ইসলাম
তৃতীয় অাকাঙ্ক্ষাটি হচ্ছে প্রতিপত্তি অর্জনের অাকাঙ্খা। এটিকে কয়েকটি স্তরে বিভক্ত করা যায়- স্তর-১, পারিবারিক বলয়; স্তর-২, সহপাঠি বলয়; স্তর-৩, সামাজিক বলয়; স্তর-৪, রাষ্ট্রীয় বলয়; স্তর-৫, অার্ন্তজাতিক বলয়। এই পাঁচটি স্তরের প্রতিপত্তি অর্জনের যে তীব্র অাকাঙ্ক্ষা ও প্রতিযোগিতা, তার স্বরূপ বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করবো অামরা স্বল্প পরিসরে।
পারিবারিক বলয়ে ভাই বোনের মধ্যে পরিবারের কর্তৃত্ত্ব গ্রহণের একটা সুপ্ত মানসিকতা জাগ্রত হয় ছোট বেলা থেকেই। তবে পারিবারিক ঐতিহ্য, পরিবার প্রধানের বলিষ্ঠ ভূমিকা সর্বোপরিও বাবা মায়ের যথার্থ নৈতিক অবস্থানের কারণে পারিবারিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষিত হয়। যে সকল পরিবারে বাবা মায়ের ভূমিকা দুর্বল ও অর্থনৈতিক অস্বচ্ঝলতার কারণে প্রচ্ছন্ন ভূমিকা কার্যকর হয় সেসব পরিবারের কর্তৃত্ত্ব গ্রহনের অাকাঙ্ক্ষা তীব্র প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করে। ঐতিহ্যগতভাবে কোনো কোনো পরিবারে বড়দের কর্তৃত্ত্ব গ্রহনের একটা ছিলছিলা চালু থাকে।
পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থার বাই প্রডাক্ট হিসেবে পরিবারে যে ভাই বা বোনের অায় বেশি তার কদরও পরিবারে বেশি। ফলে অনেক সময় সবার মনের অজান্তে ঐ ভাই বা বোনের প্রতিপত্তি পরিবারে প্রতিষ্ঠিত হয়। সংশ্লিষ্ট ভাই/বোন ব্যক্তি চরিত্রে অাত্মকেন্দ্রিক, বা নেতৃত্বকেন্দ্রিক মানসিকতা দ্বারা প্রভাবিত হলে পারিবারিক প্রতিপত্তি অর্জনের চাহিদা তীব্রতর হয়।
ফলশ্রুতিতে পারিবারিক অশান্তি বা
ভাঙ্গনের
সুর ধ্বণিত হয়।
কখনো
কখনো
বাবা মায়ের সঠিক ও
যথার্থ ভূমিকার অভাব
বা দ্বৈত
ভুমিকার
কারণেও
এরূপ পরিবেশ
মৃষ্টি
হয়। এতে পরিবারে
শ্রেণি
বৈষম্য তৈরি হয়।
যা থেকে পারিবারিক
কার্যক্রমের
প্রায় সব
ক্ষেত্রে
বিশেষ
সদস্য প্রতিপত্তি
বিস্তার করে। প্রাথমিকভাবে
ঐ সদস্য
পারিবারিক কল্যাণ
চিন্তায় সব
কিছু করে, কালক্রমে এর
সাথে
নানা মানসিক উপসর্গ
যুক্ত হয়
বলে
নিজের
অজান্তেই
নিজে
হয়ে
যায় পারিবারিক
শোষক। অবশ্য
সব পরিবারকে
এভাবে
বিশ্লেষণ
করা যায়
না। সংখ্যায়
অতি
নগন্য হলেও কোনো কোনো পরিবার ব্যতিক্রমী অাদর্শ
সুবন্টনের
পরিবার।
চলবে…
মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম : নিউইয়র্ক
রচনাকাল- ২৭/০২/২০১৯
প্রকাশকাল- ০২/০৩/২০১৯
(পূর্ব প্রকাশের পর)
তন্ত্রমন্ত্রে
যাঁতাকলে
পিষ্ট মানবাত্মা
(পর্ব: ৫
)
সহপাঠি বলয়ে কর্তৃত্ব ও প্রতিপত্তি অর্জনের তীব্র অাকাঙ্খা জাগ্রত হয় কৈশোর কাল থেকে। ছাত্র জীবনের শেষ অবধি পর্যন্ত এটা বেশি কাযর্কর থাকে। এ সময় নেতৃত্ব দেওয়া বা ক্ষমতার অাধিপত্য বিস্তারের একটা তীব্র অাকাঙ্খা মনোজগতে উঁকি মারে। যেহেতু এ সময়কালে অর্থ উপার্জনের প্রবল অাকাঙ্খা সবার বেলায় সমহার তীব্র হয় না। তাই এর মাত্রাও সবার বেলায় সমান নয়। শ্রেণিকক্ষে, খেলার মাঠে, সামাজিক বা বিনোদনমূলক কার্যক্রমে নেতৃত্ব প্রদান, তথা অাধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে প্রতিপত্তি অর্জন করতে চায় কম বেশি প্রায় সবাই। জন্মগতভাবে যারা নেতৃুত্বের গুনাবলি নিয়ে জন্মায় বা যারা সামাজিক নেটওয়ার্কিংয়ে বেশি দক্ষ তারাই দ্রুত নেতৃত্বের অাসনে চলে অাসে। এ সময় প্রচ্ছন্ন মানসিক দ্বন্দ্ব কখনো কখনো প্রকাশ্য সংঘর্ষের রূপ নেয়। ফলশ্রুতিতে কিশোর অপরাধের প্রবণতা বেড়ে যায়। যৌবনের প্রারম্ভিক সময়ে দ্বন্দ্বের তীব্রতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে।
পাশাপাশি ভবিষ্যত জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ এবং কর্ম জীবনের পরিকল্পনা প্রণয়নের সময় ঘনিয়ে অাসায় একটা মানসিক চাপ ও হতাশার ছাপ পরিলক্ষিত হওয়ায় উৎকণ্ঠা অারও বেগবান হয়। সামাজিক নেট ওয়ার্কিংয়ের হার বেড়ে যাওয়ায় সমাজের ভাল খারাপ বৈষ্ট্যিগুলোর প্রভাব সামাজিক ইন্টার একশনের কারণে ব্যক্তি জীবনে সংক্রমিত হয়। এ সময় পরিপূর্ণ ব্যক্তিত্বের একটা প্রচ্ছন্ন ক্ষেত্র বলয় তৈরি হয়। ব্যক্তিত্বে ভিন্নতা পারস্পরিক দ্বন্দ্ব সংঘাতকে ত্বরান্বিত করে দেয়। সমাজ কাঠামোর দুর্বলতা এটাকে বহগুণে বাড়িয়ে দেয়
(পূর্ব প্রকাশের পর)
তন্ত্রমন্ত্রের
যাঁতাকলে
পিষ্ট মানবাত্মা
(পর্ব: ৬
)
সামাজিক বলয়ে প্রতিপত্তি অর্জনের চাহিদা অনেক বেশি তীব্রতরো হয়। পাশাপাশি এর অনেক শাখা প্রশাখাও বিস্তৃত হয়। এ সময় ক্ষমতা অর্জনের এক অদম্য অাকাঙ্খা কারো কারো মনে মাথাছাড়া দিয়ে ওঠে। সমাজের সব মানুষকে অাপন ক্ষমতা বলয়ের মধ্যে এনে শাসন করার তীব্র বাসনা কাউকে কাউকে পাগলপারা করে তোলে। প্রতিপত্তি লাভের এ অাকাঙ্খার সাথে বহুবিধ প্রাপ্তি যুক্ত হয়। সমাজে নেতৃত্ব দেওয়ার গুনাবলি সম্পন্ন ব্যক্তিগুলো অন্যদেরকে নিজের পরিমন্ডলে নিয়ে অাসে। সামাজিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ায় এক সময় প্রচ্ছন্ন থেকে প্রকাশ্য প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্ধিতা শুরু হয়ে যায়। তার সাথে অর্থ প্রাপ্তির নানা রকম উৎস যুক্ত হয়ে এ প্রতিযোগিতাকে এক জটিল সামাজিক জালে অাবদ্ধ করে। সমাজে ক্রমান্বয়ে নানা রকম দল ও উপদল সৃষ্টি হয় যা থেকে কালক্রমে সামাজিক অশান্তি বা বিশৃঙ্খলার সূত্রপাত ঘটে।
সামাজিক ভিন্নতার কারণে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার ধরণও অালাদা হয়। এভাবে সকলেরে মনের অজান্তে সামাজিক পোলারাইজেশন হয় পড়ে। ফলশ্রুতিতে সমাজ ভাঙ্গা গড়ার একটা খেলা চলতে থাকে। তবে সব সমাজে একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য দৃশ্যমান হয়।সেটা হলো শ্রেণী বৈষম্য। এ শ্রেণী বৈষম্য মূলত সৃষ্টি হয় অসম অর্থনৈতিক সক্ষমতার উপর ভিত্তি করে। সমাজের কর্তৃত্ব স্বচছলতার মানদন্ডে বিচার্য বলে এরূপ সামাজিক ঐতিহ্য গড়ে উঠে। অামরা সামাজিক এ সিলছিলায় এতটাই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি যে এ বৈষম্যটাকে সামাজিক বিধিবদ্ধ নিয়ম বলে অন্তরে গেঁথে নিয়েছি। অধর্মীয় অনেক প্রথাকেও ধর্মীয় প্রথায় রূপান্তরিত করে সমাজ শাসনের হাতিয়ারে পরিণত করেছি ।
যে সমাজে শিক্ষার
হার কম
সে সমাজে অনেক কুসংস্কার
সংস্কারে
পরিণত
হয়। অার
সমাজের
বেশির
ভাগ মানুষ
সেটাকে সামাজিক নিয়ম
বলে
মেনে
নেয়। ফলে ঐ সমাজের
নের্তৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ সমাজটাতে
একচ্ছত্র অাধিপত্যও প্রতিপত্তি
বিস্তার করে। সমাজের ঐ
সুবিধাভোগীরা
পাকাপোক্ত
প্রতিপত্তি অর্জন
করায় সমাজটাকে
তাদের
ইচ্ছের
অাদলে
নিয়ন্ত্রণ করে। কালক্রমে
সমাজে
প্রভাবশালী পরিবারের উত্থান
ঘটে।
বংশ পরম্পরায়
ঐ পরিবারগুলো
সমাজকে
নিজেদের বলয়ে রেখে নিয়ন্ত্রণ
ও শাসন
করার কৌশল
অবলম্বন করে।
(চলবে…)
মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, নিউ ইয়র্ক
Some text
[sharethis-inline-buttons]