মানুষ তো শুধু দেহ নয় – মানুষের মন আছে। মনও চরে বেড়ায় আকাশে, বাতাসে, গদ্যে, পদ্যে জ্ঞানে, বিজ্ঞানে। জাতি গোষ্ঠী, বর্ণ, সম্প্রদায় ভেদে মানব জীবনের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড, রীতি-নীতি পরিপালনের প্রক্রিয়াকে বলা হয় সংস্কৃতি। সংস্কৃতির বিস্তৃতি ব্যাপক। স্থান হতে স্থানে, দেশ হতে দেশান্তরে, এমনকি পাহাড়ে, গুহায়, অরণ্যে, আকাশে-বাতাসে ছড়িয়ে রয়েছে সংষ্কৃতি। এক কথায়, সংস্কৃতি নেই কোথায়? আমাদের চলনে-বলনে, কাজকর্মে, রীতি-নীতি-প্রথায় সর্বত্র সংস্কৃতির ছাপ রয়েছে। সেটা কোথাও উজ্জ্বল, অাবার কোথাও অনুজ্জ্বল, মলিন।
যে ভাষায় কথা বলা হয় সেটা যেমন সংস্কৃতি, তেমনই যে ধর্ম পালন করে সেটাও তার সংস্কৃতি। মনের ভাব, সাহিত্যের ভাব, সঙ্গীতেরর ভাব, সাংসারিক সামাজিক কাজের ভাব থেকে শুরু করে জাতি, গোষ্ঠী, বর্ণ, সম্প্রদায় ভেদে এ ভূমণ্ডলের মানবকুলের সবধরনের ভাব প্রকাশে সংস্কৃতির উপস্থিতি বিদ্যমান। তাহলে এ কথা স্বীকার করতেই হবে যে, আমাদেরকে ঘিরে রয়েছে সংস্কৃতি, আর আমরাও ঘিরে রেখেছি সংস্কৃতিকে।
অনুকরণের পুরাতন মার্গে চলছে আজ অপসংস্কৃতি। পুরাতন মার্গে নতুন কিছু আবিষ্কার করা যায় না। টমাস এডিসন যদি একই পরীক্ষা বার বার করতেন তাহলে পৃথিবীতে লাল-নীল বাতি জ্বলতো না। কর্মপ্রচেষ্টা যদি নতুন পথ না পায়, তাহলে নতুন অাবিষ্কার কী প্রকারে?
সংস্কৃতি কিন্তু স্বীয় রং- এ উজ্জ্বল এবং এ কারণে কোনো জাতি, গোষ্ঠী, বর্ণ, সম্প্রদায় তার সাংস্কৃতিক রীতি পরিপালনে মোটেও কৃপণতা করে না। বাঙালীরা যেমনি পায়জামা, পাঞ্জাবী, ফতুয়া বা ধূতী পরিধান করতে কুণ্ঠিত হয় না, তেমনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে বাংলায় কথা বলতে, বাংলায় গান গাইতে, চিড়া-মুড়ি খেতে, মেঠো পথ ধরে চলতে, শাড়ী পরতে, নাকে নৎ দিতে, আবার ঘোমটা দিতে- ইত্যাদিকে নিজ নিজ সংস্কৃতির মর্যাদায় উজ্জ্বল করতে।
আজ বাঙালীরা তাদের শত শত বছরের সংস্কৃতিকে হারাচ্ছেন উন্নয়নের ডামাডোলে। বিকৃত বৈদিক জাগরণে। এর মাঝে হারাচ্ছেন তাদের জাগ্রত সত্ত্বাকে। তারা কী? একবার ভেবে দেখেন!
তাই যা গ্রহণ করছি, সংস্কৃতিরই নামে অপসংস্কৃতি। তাই গ্রহণ-বর্জনের ব্যাপরে থাকতে হবে দারুণভাবে সচেতন, কোন ক্রমেই অপসংস্কৃতি অামাদের কলুষিত করতে না পারে। তাই দরকার বৈদিক জাগরণ।
Some text
ক্যাটাগরি: মতামত
[sharethis-inline-buttons]