না, আমাকে দিয়ে আর
কবিতা লেখা হবে না
বিপ্লবীদের কাঁদতে নেই।
আমি যখন একবিংশ শতাব্দীর চে-গুয়েভারা
তখন দ্যাখি, ঝালমুড়ি কিংবা চিনা বাদাম চিবিয়ে
ছুঁড়ে ফেলা কাগজ চিবোচ্ছে বুভূক্ষূ কিশোর!
মলিন মুখ।
জ্বিহবার লালায় ধুয়ে নিচ্ছে গতকালের পত্রিকায় ছাপা
অবৈধ যৌনাচারের ফসল!
রক্তাক্ত শিশুর পচা লাশ!
কাগজে ছাপা লাশ চিবালে কী আর ক্ষুধা মিটে??
.
ঐ অন্ন দেওয়ার অর্থ পেলুম কই?
আমার চোখ জুড়ে বড়িগঙ্গায় যাতনার স্রোত নামে।
গাল ভর্তি আঁকা বাঁকা তিতাস ঝরে পড়ে
লোম মাখা বুকের খাল জুড়ে!
অতঃপর ।
এক পশলা শব্দ নিয়ে সফেদ কাগজের বুকে
কলম ভর্তি অশ্রু জল এ আনমনা আলিঙ্গন ।
কিন্তু !
কিছুতেই কবিতা বেরুই না … নোনা জল বেরুই ।
শুধুই নোনা জল ।
শব্দের মালা আর হয় না গাঁথা ।
যখন দ্যাখি ষ্টেশনের প্ল্যাটফর্মে শুয়ে
ক্ষুধার্ত মায়ের শূন্য স্তন চুষে
ঘামের দুর্গন্ধে পেট ভরে শীর্ণ হয় শিশু
ক্লান্তিতার সরল ঘুম ভাঙ্গে মায়ের কঙ্কাল পাছায়
মানবতার বাঁধ ভেঙ্গে পুলিশের লাথি ।
কিংবা , যৌনতা ভরা অশ্লীল বাক্যে !!
অশ্লীল শব্দে কী আর কবিতা হয় ?
যতক্ষন না কাকের ডাক মধুর না লাগে ??
.
নির্যাতিত নিপীড়িত অনাহারে থাকা সুবিধা বঞ্চিতদের
শত কোটি হাত এসে ঝাঁপটে ধরে আমার কলম !
হৃদপিণ্ড ভিজে যায় অশ্রুজলে
কাঁদা মাখা হৃদপিণ্ডে হেটে যায় আমার বিবেক ।
তাই আর কবিতা লিখা হয় না আমার …
.
আমি যখন কৃষ্ণ চূড়ার লালে
একাত্তরের দুই লক্ষ সম্ভ্রমে হাত দেয়
কবিতা লিখব বলে ।
.
চেয়ে দ্যাখি সমাজ পতির চোখ জুড়ে
আমার বউ ঝিদের শরীর বিকোয় এক মুঠো ভাতে !
তারপর ও
কবিতার পংত্তিতে মৌ মৌ গন্ধে যখন মাতোয়ারা আমি
কাগজ কলমের সঙ্গমের অপেক্ষা মাত্র !
তৃতীয় চোখ মেলে ধরে
সফেদ কাগজের বুকে ভেসে উঠা
শীর্ণ, ক্ষুধার্ত নিরপরাধ দেহে …..
পুলিশের ক্ষমতা প্রদর্শনের প্রতিযোগিতা !
আমার চোখ , গাল বুক জুড়ে বাঁধ ভাঙ্গা উচ্ছ্বাসে
মেতে উঠে ইলিশের ঝাঁক ।
.
ভাঙ্গা হৃদয়ে ভর করে বিপ্লব হয় না
অধিক জলে সাঁতরে বাঁচা যায় না
আমার আর কবিতা লিখা হয় না
আমার আর কবিতা লিখা হয় না
আমার আর কবিতা লিখা হয় না ………..।
.
রচনা – ১৫ আশ্বিন ১৪২৩ বাঙলা
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ইং শুক্রবার
.
গোকর্ণ ঘাট – ব্রাহ্মনবাড়িয়া ।
Some text
ক্যাটাগরি: কবিতা, নাগরিক সাংবাদিকতা
[sharethis-inline-buttons]