হ্যাঁ, জীবনে না এসে ভালোবাসা যায়
মহৎ প্রেমের সৌধও রচনা করা যায়
দেখতে চাও কিভাবে, প্রমাণ চাও?
আমি তোমার কাছে প্রমাণ দেবো
আমি তোমার জীবনের ভাগ চাই না
এত স্বার্থপর আমি নই।
তোমাকে পাওয়ার কোনো আশাও করি না
তোমার হৃদয়ে একটু ঠাঁই চাই
কেউ জানবে না, জানবে শুধু তুমি
তোমার সঙ্গে কথা বলবো শব্দহীন ভাষায়
গভীর রাতে তোমাকে আলিঙ্গন করবো
শুরু হবে আমাদের গোপন অভিসার
তোমাকে নিয়ে সারারাত গল্প করবো
গল্পে গল্পে কেটে যাবে রাত
মনে হবে আমার শেষ কথাটি বলা হয়নি
তোমার মুখে ফুটে উঠবে অনাবিল হাসি
স্বর্গীয় আভায় তোমার মুখ হবে উদ্ভাসিত
ধূলির ধরণীতে নেমে আসবে স্বর্গ
দেখবে আকাশের সব স্বর্গের দার খুলে গেছে
আমি প্রাণ উজাড় করে দেবো
তুমি আমার হৃদয়ের অলিগলিতে প্রবেশ করবে
দেখবে সেখানে তুমি ছাড়া কেউ নেই
তুমি আমার অতীত
তুমি আমার বর্তমান
তুমি আমার ভবিষ্যৎ।
সমাপ্তি চক্রবর্তী
Some text
[sharethis-inline-buttons]
জীবনে না এসে যে ভালোবাসা যায়, এমনকি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা যায় তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এখানে প্রধান প্রশ্ন হচ্ছে, ‘জীবনে না আসার’ কথাটি কেন বলতে হচ্ছে বা না আসার প্রশ্নটি কেন এল?
যেহেতু মানুষ, তাই মানুষের কিছু প্রয়োজন আছে, চাওয়া-পাওয়া আছে। সেই চাওয়া-পাওয়াটা হতে পারে শুধু তার জন্য নয়, পৃথিবীর জন্যও প্রয়োজনীয়। হতে পারে বহুকালের ভালোবাসা তার বুকে লুকায়িত। হতে পারে তা কেবলই যৌনতা নয়, বরং গভীর প্রেম ও ভালোবাসার আলিঙ্গন। যে আলিঙ্গন থেকে জন্ম নিতে পারে পরবর্তী শুদ্ধতম পৃথিবীর জনক বা সংস্কারক। সুতরাং যদি আসার সর্বশেষ সুযোগটিও অবশিষ্ট থাকে, তবে জীবনে না আসার প্রশ্নটি কেন আসে? কেন যাকে অতটা ভালোবাসা হল, তার জীবনে না আসার প্রশ্ন বা আব্দার? এই ‘না আসতে চাওয়াটাও’ যে একধরনের স্বার্থপরতা না, একধরনের ভণ্ডামী না তারইবা প্রমাণ কী?
হ্যাঁ, এলে ভালোবাসায় ঘাটতি আসতে পারে। ভালোবাসা ঘৃণায় রূপান্তরিত হতে পারে। সেখানেই তো ভালোবাসাটার প্রকৃত পরীক্ষা। পরস্পর কাছাকাছি আসার পর, বিরোধী পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ার পরও যদি ভালোবাসাটা টিকে থাকে, আরো গভীর হয়, তখনই বলা যাবে এটা ভালোবাসা ছিল। এর আগে নয়। দ্বিতীয় আরেকটি বিষয় পরবর্তী কমেন্টে…
সময়, সামাজিক, মতবাদের সিমানায় বন্দী থাকা মানুষগুলো বুঝে স্বাধীনতার মূল্যে কি। হেসে বলে দিব্যি আছি, জিগ্যেস করলে আছিস কেমন, ভালো থাকা কাকে বলে বালিশ জানে তার ওজন।
আসলে বন্দী না থাকলে স্বাধীনতার মূল্যও বোঝা যায় না। তাছাড়া চিন্তার ও ‘জ্ঞানের স্বাধীনতা’ এবং ‘স্বাধীনতার জ্ঞান’ ছাড়া স্বাধীনতা অর্থহীন। সম্ভবত আপনি যে স্বাধীনতার কথা বলছেন, সেই ধরনের স্বাধীন মানুষ চারপাশে অভাব নেই। কিন্তু তাদের স্বাধীনতার জ্ঞান বা ‘অস্তিত্বগত জ্ঞান ও স্বাধীনতা নেই। তাই এসব কৃত্রিম বন্দিত্বের মাঝে থেকেও যদি প্রকৃত স্বাধীনতাকে খুঁজে পাওয়া যায়, তবে সেই বন্দ্বিত্বও অনেক উত্তম।
যাকে চাওয়া যায় না, চাইলে পাওয়া যায় না, তাকে কি আসলেই ভালোবাসা যায়? মানুষ কিন্তু স্রষ্টা নয়, সৃষ্টি। কিছু প্রয়োজন সে অস্বীকার করতে পারে না। আবার শারীরিক ও মানসিক বিপরীত সত্তার চূড়ান্ত মিলন ছাড়া ভালোবাসা পূর্ণতা পায় না, সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষের বংশধারাও বেঁচে থাকে না। পরস্পরকে সঠিক প্রক্রিয়ায় চাওয়া, পাওয়া এবং একে বৈধতা দিয়েই নারী-পুরুষের সৃষ্টি। সুতরাং এ চাওয়া-পাওয়াকে অস্বীকার মানে নিজের জন্ম ও জীবনকেই অস্বীকার। হ্যাঁ, এখানে আরেকটি কথা যোগ করতে হয়। যাকে ভালোবাসা যায়, চাওয়া যায়, আবার তার প্রয়োজনে তাকে ত্যাগ করা যায়, সেটাই প্রকৃত ভালেঅবাসা।
তৃতীয়ত, ‘হৃদয় বা মনে স্থান পাওয়া’। এটা নিয়ে বিস্তর কথা আছে। যে হৃদয়টি আমি সৃষ্টি করিনি, যে হৃদয়ের জন্যই আমি অনন্য, যে হৃদয়ই আমার সব, সে হৃদয়ে কি ঈশ্বর বা স্রষ্টা ছাড়া অন্যকিছুর জায়গা দেয়া ঠিক হবে? প্রশ্ন আসে, তাহলে ভালোবাসাবাসিটা হবে কীভাবে? হ্যা, এটা একটা গভীরতম প্রশ্ন। তবে উত্তরও কঠিন নয়।