শেরপুরের নকলা উপজেলার বানেশ্বরদী ইউপির কবুতরমারী গ্রামের বৃদ্ধ মোহাম্মদ আলী ও অবিরন বেগম আদরের একমাত্র ছেলে শফিকুল ইসলামকে সব সহায়-সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে দিয়ে অসাহায় জীবন কাটাচ্ছেন। ছেলের নির্যাতন থেকে বাঁচতে আজ তারা দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। সবশেষে তাদের স্থান হয়েছে বানেশ্বরদী ইউপি কমপ্লেক্সের বারান্দায়।
মঙ্গলবার দুপুরে বানেশ্বরদী ইউপি কমপ্লেক্সের বারান্দায় শুয়ে থাকা ৮২ বছর বয়সী মোহাম্মদ আলীর সাথে কথা হলে তিনি কাঁদতে কাঁদতে জানান, তার ৩ মেয়ে ও এক ছেলে। মেয়েদের বিয়ে দেয়ার পর সুকৌশলে বাবার কাছ থেকে দুই একর জমিসহ সহায়-সম্পত্তি লিখে নিয়ে পাষণ্ড ছেলে শফিকুল তার বাবা-মায়ের ওপর অমানবিক নির্যাতন শুরু করে। সপ্তাহে অন্তত একবার হলেও তাদের মারধর করত বা করে বলে অভিযোগ করেন ওই বৃদ্ধ বাবা-মা। তখন বাধ্য হয়ে মেয়ের স্বামীর বাড়ি গিয়ে আশ্রয় নিতে হতো।
বাবা-মাকে এভাবে নির্যাতনের কারণ খুঁজতে গিয়ে মেয়েরা জানতে পারেন, তাদের ভাইকে সব সম্পদ লিখে দেয়া হয়েছে। তারপর থেকে স্বাভাবিক কারণেই বাবা-মায়ের প্রতি সেবার মান কমতে থাকে। শেষ বয়সে আদরের একমাত্র ছেলের হাতের মারধর থেকে বাঁচতে এখন দ্বরে দ্বারে ঘুরে দিনাতিপাত করছেন অশীতিপর বৃদ্ধ ওই বাবা-মা।
পুলিশের কাছে অভিযোগ করার বিষয়ে জানতে চাইলে বৃদ্ধ দম্পতি একযোগে বলেন, পুলিশে জানালে আমাদের ওপর নির্যাতনের পরিমাণ আরো বেড়ে যেতে পারে, এই ভয়ে পুলিশে জানায়নি।
বানেশ্বরদী ইউপি কমপ্লেক্সের বারান্দায় স্বামীর মাথার বসে থাকা বৃদ্ধ স্ত্রী অবিরন বেগম জানান, তাকে সব সময় অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে, এতে কোনো কিছু বলতে গেলেই শুরু হয় মারধর। এমতাবস্থায় বাধ্য হয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাজহারুল আনোয়ার মহব্বতের কাছে বিচার প্রার্থনা করেন তারা।
এ বিষয়ে মাজহারুল আনোয়ার মহব্বত বলেন, নির্যাতনের বিষয়ে আমি ওই বৃদ্ধ দম্পতির কাছ থেকে তাদের ছেলের বিরুদ্ধে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যেই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান।
জুন্নুন আহমেদ : শেরপুর প্রতিনিধি
Some text
ক্যাটাগরি: নাগরিক সাংবাদিকতা, মতামত
[sharethis-inline-buttons]